জীবনটা অনেক দীর্ঘ। এ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে প্রয়োজন সুস্থ দেহের। আর এই দেহ অসুস্থ থাকলে ধুঁকে ধুঁকে জীবন শেষ করতে হবে। এজন্যই স্বাস্থ্যকে সকল সুখের মূল বলা হয়। সুস্থ এবং সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য আপনি কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন, যা আপনার খরচ না বাড়িয়ে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। সুস্থ ও সতেজ থাকার জন্য দেহের ওজন রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণে। সঙ্গে সঙ্গে শরীরে শক্তি থাকতে হবে বেশি। কিন্তু ক্লান্তি থাকবে কম। শরীর ও মন থাকবে উৎফুল্ল। এমন কৌশল কে না চায়? এবার দেখে নিন পুষ্টিবিদদের এ সংক্রান্ত পরামর্শ: * সুস্থ থাকতে নিয়মিত ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। ব্যস্ততার মাঝেও সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। * প্রতিদিন প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন । নারীদের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৮- ১০ গ্লাস এবং পুরুষদের জন্য ১০-১২ গ্লাস পানি খেতে হবে। তবে যারা ব্যায়াম করেন, তারা আরও বেশি পানি পান করবেন । * একবারে অনেক বেশি না খেয়ে বারবার পরিমিত পরিমানে খাওয়া। চেষ্টা করুন সারাদিনের খাবার ৫/৬ বার খাওয়া। * রাতের খাবার ঘুমানোর কমপক্ষে ২.৫-৩ ঘন্টা আগে খেতে হবে। * প্রতিদিন সময়মত খাওয়ার অভ্যাস করুন। কোন বেলার খাবার যেন বাদ না পড়ে। বিশেষ করে সকালের নাস্তা কখনোই বাদ দেবেন না। * প্রতিদিন অবশ্যই ১টা টক ফল রাখুন খাবারে। * মাছ অবশ্যই খেতে হবে, মাংশ কম খেয়ে মাছ বেশি খেলে ভালো। * খাবারের মাঝে পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন। খাবার খাওয়ার কমপক্ষে ১০ মিনিট আগে এবং খাওয়া শেষে ৩০ মিনিট পরে পানি পান করুন। এতে হজম ভাল হবে। * সাদা আটার রুটি না খেয়ে, লাল আটার রুটি খাওয়া। কারণ, লাল আটা কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেড, যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তেমনি সাদা চালের ভাতের চেয়ে লাল চাল অপেক্ষাকৃত ভালো। * ভাত কম পরিমাণে খেয়ে, সবজি, ফল, সালাদ বেশি খাওয়া। কারণ, এগুলোতে আছে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, ফাইবার। * প্রতিদিন একমুঠো বাদাম খাওয়া অভ্যাস করুন। এতে ত্বকের সৌন্দর্য্য বাড়বে, সাথে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমবে। * হজম শক্তি ভাল রাখতে প্রতিদিন ৬০ গ্রামের মত টক দই রাখুন খাদ্যতালিকায়। * প্রাণীজ আমিষ সবসময় না খেয়ে উদ্ভিজ আমিষ বেশি খাওয়া। কারণ, উদ্ভিজ আমিষ এ ফ্যাট কম থাকে। * প্রতি বেলা খাবারে প্রোটিন খেতে হবে পরিমান মত। যেমন- মাছ, সাদা মাংশ (মুরগির মাংশ ইত্যাদি), বাদাম, ডাল, পনির, দই ইত্যাদি। এটা পেট ভরা রাখে ও ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটা পেশী গঠনেও সহায়তা করে। * ওজন কমাতে চাইলে চিনি, ভাজা পোড়া, বেশি ক্যালরি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। মিষ্টি জাতীয়, চিনি যুক্ত খাবার বাদ দিতেই হবে। বেশি তেল ও মশলা যুক্ত খাবার বাদ দিতে চেষ্টা করুন। * খাবারের মেনুতে প্রচুর আঁশযুক্ত খাবার, যেমন- লাল আটা, সালাদ, সবজি, ফল রাখুন। কারণ, ফাইবার ওজন কমায়, হজম শক্তি বাড়ায়। * খাবারে অতিরিক্ত লবণ না খাওয়া। রান্নাতেই অনেক লবণ থাকে, সারাদিনে ১-১.৫ চামচের বেশি লবণ খাবার দরকার নেই। কারণ, অতিরিক্ত লবণ শরীরে পানি আনে, ব্লাড প্রেশার ও ওজন বাড়ায়। * অস্বাস্থ্যকর পানীয় পান না করে ডাবের পানি পান করার চেষ্টা করুন। সাথে প্রতিদিন ১-২ কাপ গ্রীন টি খেতে ভুলবেন না। * সপ্তাহে একদিন অন্যরম বা প্রিয় খাবার পরিমান মত খেলে কোনো অসুবিধা নেই। বরং এটা শরীরের জন্য ভালো। এটা খাওয়ার রুচি বাড়িয়ে একঘেয়েমি কমাবে । সবাই সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন।