গোপালগঞ্জ শহরের শেখ হাসিনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ১৩ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ৫৮ শিক্ষার্থীর পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উদ্ভুত এ অনিশ্চয়তার দ্রুত সমাধানের দাবিতে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিসহ বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ স্থানীয় প্রেসক্লাবের সামনে নানা প্লাকার্ড হাতে নিয়ে প্রায় ঘন্টাব্যাপী মানব-বন্ধন কর্মসূচী পালন করে। মানব-বন্ধন শেষে তারা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ-সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন। লিখিত বক্তব্যে অভিভাবকরা জানান, করোনার কারণে পর পর দু’ বছর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার পরিবর্তে লটারীর মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে আসছে। লটারীর কারণে এই ১৩ শিক্ষার্থী অপেক্ষমান তালিকায় থাকা সত্ত্বেও ভর্তি হতে পারেনি। পরে সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি-সংক্রান্ত কমিটির আহবায়ক ও জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিভাবকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব শিক্ষার্থীদের ভর্তি আবেদন ফরম দেয় এবং সেগুলো যথাযথ পূরণপূর্বক জমা দেয়া হয়। সে সঙ্গে সোনালী ব্যাংক ডিসি কমপ্লেক্স শাখায় বিদ্যালয়ের হিসাব নং সিএ-৩৩০০১৯৯৬ এর অনুকূলে নির্ধারিত ভর্তি ফি ১ হাজার ৮ শ’ ৫৫ টাকা জমা দেয়া হয়। এরপর এসব শিক্ষার্থীদেরকে বিদ্যালয়ের পোশাকের কাপড় ও বোর্ডের বই সরবরাহ করা হয়। জানুয়ারি থেকেই এসব শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাস করে আসছে। গত ৫ এপ্রিল বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হুমায়রা আক্তার বদলী হয়ে গেলে নতুন অধ্যক্ষ যোগদানের পর এসব শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ছাত্রী-ভর্তি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে। এদিকে ২ জুন থেকে বিদ্যালয়ের অর্ধ-বার্ষিকী পরীক্ষা। সকল শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ফি গ্রহন করা হলেও এসব শিক্ষার্থীকে বাদ রাখা হয়। পরে অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে যোগাযোগ করলে জানতে পারেন, সাবেক অধ্যক্ষ এসব শিক্ষার্থীর ভর্তি রেজিস্ট্রারে তুলে না যাওয়ায় এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। পরে তারা পুনরায় জেলা প্রশাসকের কাছে গেলেও তিনি কোন সহযোগিতা করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। অভিভাবকরা আরও বলেন, এবছর ওই বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ১৩ শিক্ষার্থী, ৭ম শ্রেণির ১৮ শিক্ষার্থী, ৮ম শ্রেণির ১৬ শিক্ষার্থী এবং ৯ম শ্রেণির ১১ শিক্ষার্থীসহ মোট ৫৮ শিক্ষার্থী এমন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর ভর্তিতে কোন অনিয়ম বা ভুলত্রুটি থাকলে সেটা বছরের শুরুতেই সমাধান করা প্রয়োজন ছিল। বছরের মাঝপথে এসে কর্তৃপক্ষের এধরণের সিদ্ধান্তে এসব শিক্ষার্থী পড়ালেখায় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে তারা মনে করেন। তাই এ সমস্যার দ্রুত সমাধান ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবিতে তারা তাদের সন্তানদের নিয়ে মানব-বন্ধন ও সংবাদ-সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ-সদস্য, শিক্ষা সচিব, মহাপরিচালক মাঊশি ও জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।