আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেছেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কে পক্ষে, কে বিরুদ্ধে দেখব না। রাজনৈতিকভাবে যারা বিরোধিতা করেছে, তাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে। গতকাল শনিবার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ব্র্যাকের আয়োজনে নারী গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণ পরবর্তী সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ২৫ জুন সকাল ১০টায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই অনুষ্ঠানে বিশ্ব ব্যাংককেও দাওয়াত দেয়া হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দাওয়াত পাবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নিয়মের মধ্যে পড়লে অবশ্যই দেবো। এখন উনি তো সাজাপ্রাপ্ত। বিএনপি চেয়ারপারসন হিসেবে পাওয়ার কথা। তবে আমরা নিয়ম জেনে দেবো। বিরোধীরা সবাই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত পাবে। বিএনপি নেতারাও দাওয়াত পাবেন।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন ও বিএনপি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি একটা বড় দল, তারা নির্বাচনে আসুক আমরা চাই। ক্ষমতার পরিবর্তন চাইলে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। এখন নির্বাচনে অংশ না নিয়ে যদি মনে করেন হত্যা সন্ত্রাসের পথে থাকবেন, যদি মনে করেন শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে ষড়যন্ত্রের চোরাগলি দিয়ে আপনারা ক্ষমতার মসনদে বসবেন, তাহলে এই রঙিন খোয়াব দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। তিনি বলেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে রাস্তার ভাষায় কথা বলে। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। তারা পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার বলছে। ১৫ আগস্টের পুনরাবৃত্তি করবে ,দেশে বিদেশে এই ধরনের বক্তব্য যে তারা দিচ্ছিল, আমি বলেছিলাম ফখরুল সাহেব আপনি দলের মহাসচিব। আপনার দলের এই তরুণ তুর্কিদের সামলান। এই ধরনের স্লোগান দিলে হত্যা ও রাজনীতির পরিণাম হবে ভয়াবহ। আমি ফখরুল সাহেবকে বলেছি, এভাবে চলতে থাকলে পরিণতি কী হবে তা দেখতে পাবেন। পরিণতি কার খারাপ হবে সেটা বাস্তবেই দেখতে পাবেন।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতি নিয়ে বিএনপির সমলোচনার জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির কিছু নেতা আবোলতাবোল বকছেন, তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। মাথা খারাপ হয়েছে কারণ পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলকে তারা সহ্য করতে পারছে না। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বাস র্যাপিড ট্রানজিট তারা জীবনে দেখেও নাই, করেও নাই। শেখ হাসিনা করছে, এজন্য তাদের বুকে বিষ ব্যথা। ব্যথা আর জ্বালায় জ্বলছে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নারী প্রশিক্ষণার্থীদের ৬ষ্ঠ ব্যাচে মোট ১০ জন নারী ও ১ জন তৃতীয় লিঙ্গেরসহ মোট ১১ জন প্রশিক্ষণার্থী ছিলেন। উত্তরা, আশকোনা ও নিকেতনে অবস্থিত ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুলে তিন মাসের আবাসিক ও তিন মাসের শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ শেষে এবং পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষে বিআরটিএ থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছেন তারা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের প্রশাসন এবং সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিচালক আহমেদ নাজমুল হুসেইন, ব্র্যাক জেন্ডার কর্মসূচির পরিচালক নবনীতা চৌধুরী, বিশ্ব ব্যাংক ঢাকার কান্ট্রি ডাইরেক্টর মারসি মিয়াং টেমবন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে. এম আলী আজম, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বিআরটিসির চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন প্রমুখ।