প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের ফ্রে ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে এখন বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান ফুটবলার। সিআইইএস ফুটবল অবজারভেটরি দামি ফুটবলদের এ তালিকা করেছে। ১০০ জনের এ তালিকায় নেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, লিওনেল মেসির মতো ফুটবলাররা। ফুটবল বাজারে কিলিয়ান এমবাপের মূল্যমান এখন সাড়ে ১৭ কোটি পাউন্ডেরও বেশি।
এ তালিকায় এমবাপের পরে আছেন স্পেনের ক্লাব রেয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিশিয়াস জুনিয়র। তার মূল্যমান ১৫ কোটি ৮৩ লাখের মতো। এ মৌসুমে জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিতে যাচ্ছেন এর্লিং হলান্ড। এ নরওয়েজিয়ান ফুটবলারের দাম আছে ১৩ কোটি পাউন্ডের বেশি। ইংলিশ ফুটবলারের মধ্যে জুড বেলিংহাম আছেন সবার ওপরে। তার দাম প্রায় সাড়ে ১১ কোটি পাউন্ড। এ তালিকায় প্রথম ১০০ ফুটবলারের মধ্যে ৪১ জনই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ খেলছেন। যে ভিত্তিতে এ দাম ঠিক করা হচ্ছে, সিআইইএস ফুটবল অবজারভেটরি কিছু মানদ- ঠিক করে, একজন ফুটবলারের বর্তমান বাজারে যা সঠিক মূল্য নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। কিন্তু এটাও পরিবর্তন হতে পারে। একজন ফুটবলারের জন্য একের অধিক ক্লাব আগ্রহী থাকে এবং তারা যদি আরো বেশি অর্থ ঢালতে চায় ওই নির্দিষ্ট ফুটবলারের জন্য। সেক্ষেত্রে এ দাম আরো বাড়তে পারে।
যেমন ফরাসী ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের সাথে তিন বছরের নতুন চুক্তি করেন। এর আগে তার রেয়াল মাদ্রিদে যোগ দেয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পিএসজিতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
বাজারে তার চাহিদা দেখে পিএসজিও এমবাপের বেতন-ভাতা বাড়িয়ে দেয়। ক্লাবের নানা সিদ্ধান্তে এমবাপের মতামতের গুরুত্ব পাবে বলে কথা দিয়েছে। এছাড়া তিনি শুধু প্রভাবশালী ফুটবলারই নন, মাঠেও তিনি অন্যতম সেরা এ সময়ে। ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন, পিএসজির হয়ে সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে লিগের সর্বোচ্চ ২৮টি গোল করেছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এমবাপের বয়স মাত্র ২৩। তাকে এখন যে ক্লাবই দলে রাখবে তারাই লাভবান হবে। এমবাপের জন্য বিজ্ঞাপন নির্মাতারা হন্যে হয়ে থাকে। তার জার্সি বিক্রি হয় দেদারসে। এ অর্থের পরিমাণ ক্রমশ বাড়বেই। একজন খেলোয়াড়ের বয়স এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বয়সের সাথে পারফরম্যান্স, কত দিনের চুক্তি আছে, ক্যারিয়ারে কতদূর এগোলেন এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলে কোন দলে খেলেন- এসব বিষয় এখানে কাজ করে।
সিআইইএস ফুটবল অবজারভেটরি ২০১২ সালের জুলাই মাস থেকে শুরু করে ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৭৯০ জন ফুটবলারের ট্রান্সফারের ইতিহাস থেকে তথ্য উপাত্ত নিয়ে এ গবেষণাটি করে।
গত দু’দশকে বিশ্বের সবচেয়ে সফল ফুটবলার লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। পেশাদার ফুটবলে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক গোলের মালিক রোনালদো। ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবচেয়ে বেশি গোলের মালিক রোনালদো। পাঁচবার জিতেন এ ট্রফি। লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের মালিক এখন। সম্প্রতি এক ম্যাচে পাঁচ গোল দিয়ে তিনি হাঙ্গেরির পুসকাসের গোলসংখ্যাও অতিক্রম করে গেছেন। লা লিগার ইতিহাসে মেসিই সবচেয়ে সফল ফুটবলার। চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপাও জিতেছেন তিনি। তবে বয়সের কারণে ও ক্লাবে নিজেদের অবস্থানের কারণে লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো বড় তারকারা এ তালিকার সেরা ১০০তেও জায়গা পাননি। কারণ, এ বয়সের ফুটবলাররা প্রায় নিজেদের শেষ ক্লাবে খেলছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এরপর লিওনেল মেসির গন্তব্য হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। রোনালদো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেই তার শেষ মৌসুম খেলছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। এ দু’জনই মূলত ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করেই ফুটবল খেলছেন। যে কারণে পিএসজির হয়ে বিবর্ণ মেসি আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করছেন। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বয়স আগামী ফেব্রুয়ারিতে ৩৮ হবে। পেশাদার ফুটবলে এ বয়সে শীর্ষ পর্যায়ের খেলা চালিয়ে যাওয়ার ঘটনা খুব বেশি নেই। সিআইইএস ফুটবল অবজারভেটরির বাজারের দামের হিসেবে সেরা ১০০ ফুটবলারদের মধ্যে ম্যানচেস্টার সিটির কেভিন ডি ব্রুইনার বয়সই সবচেয়ে বেশি ৩০। এ তালিকার সবচেয়ে দামি ডিফেন্ডার ম্যানচেস্টার সিটির পর্তুগিজ তারকা রুবেন দিয়াজ, তার বাজার মূল্য প্রায় ১১ কোটি পাউন্ড। সূত্র : বিবিসি