কুমিল্লার দাউদকান্দিতে সরকারী খাস জায়গা দোকান বরাদ্দের নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। বুধবার দাউদকান্দি বাজারের একটি ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তারা। লিখিত বক্তব্যে ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা দাউদকান্দি উপজেলার পৌর সদর বাজারে সরকারী খাস খতিয়ানভূক্ত জায়গা একসনা বন্দোবস্ত নিয়ে দীর্ঘ প্রায় বিশ বছর যাবৎ আমরা ব্যবসা করে আসছি। সরকারী নিয়ম মোতাবেক প্রতিবছরই খাজনা পরিশোধ করে আসছি। উক্ত জায়গায় দীর্ঘদিন ব্যবসা-বাণিজ্য করে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে সচ্চল ভাবে জীবন যাপন করে আসছি। হঠাৎ করে ২০১৯ সালে আমাদের খাজনা জমা নেয়া বন্ধ করে দেয়। আমরা মনে করেছিলাম মহামারী করোনা কালীন সময়ের কারণে খাজনা আদায় বন্ধ ছিল। ২০২১সালে আমাদেরকে কোন ধরনের নোটিশ ছাড়াই দোকান গুলো উচ্ছেদ করে দেয় উপজেলা কতৃপক্ষ। পরে আমরা উপজেলা প্রশাসনের নিকট দাবি করি , যেখানে বিশ বছর যাবৎ ব্যবসা করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। হঠাৎ করে আমাদেরকে উচ্ছেদ করায় আমরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং পারিবারিক ভাবে ছেলে মেয়ে নিয়ে পথে বসা ছাড়া কোন উপায় নেই। বিষয়টি তৎকালীন উপজেলা নির্বাহি কর্মকতা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম খানের নিকট জানালে তিনি আমাদেরকে আস্বস্থ করেন, আমরা যে ১২ জন সরকারি বিধি মোতাবেক ব্যবসা বাণিজ্য করে আসছি। সেই ১২ জনকে আগে দোকান বরাদ্ধ দেওয়া হবে। কিন্তু হঠাৎ করে আমাদেরকে না জানিয়ে গোপনে মোটা অংকের টাকায় অন্যদেরকে দোকান বরাদ্দ দিয়ে দিছে। যাদেরকে দোকান বরাদ্দ দিয়েছে তারা কখনোই এখানে ব্যবসায়ী ছিল না। সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করা হয়, দাউদকান্দি পৌরসভাধীন নোয়াকান্দি ও জয়পুর দুটি মৌজার ৯২শতক পুকুরের উত্তর পাড়ে বাজার সংলগ্ন ১০শতক জায়গায় ১২টি দোকানে আমরা ব্যবসা করতাম। এখন ওই বারোটি দোকানের জায়গা সহ পুকুরের জায়গা ভরাট করে প্রায় ৫০টি দোকান নির্মান কাজ চলছে। সরকারী শর্ত মোতাবেক দোকান ঘর বরাদ্দ চেয়ে আমরা আবেদনও করেছি। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন দোকান প্রতি ২০ হতে ৩০ লাখ টাকা দাবী করায় আমাদের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। তাই আমাদের কে দোকান বরাদ্দ দেয়নি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সারা দেশে পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ থাকলেও সেই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের চোখের সামনে, কতিপয় সরকারি কর্মকতা যোগসাজসে পুর্বের ১০শতক জায়গার সাথে আরও প্রায় ১০/১৫ শতক পুকুর ভরাট করে দোকান নির্মান চলছে। সাংবাদিকদের লেখনির মাধ্যমে বিষয়টি ভূমি মন্ত্রনালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করেন ভুক্তভোগীরা। আর সরকারি বিধি মোতাবেক পূর্বে ভোগদখল থাকা ১২জন ব্যবসায়ীকে দোকান বরাদ্দ দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বেচে থাকার সুযোগ দেয়ার দাবী জানান ব্যবসায়ীরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খোরশেদ আলম ও মুক্তিযুদ্ধি কমান্ডার সোহরাব হোসেন সহ ১২জন ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন। দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) সুকান্ত সাহা বলেন, সরকারি বিধি মোতাবেক দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পুকুরের পার ভেঙ্গে গিয়ে ছিল সেটা ভরাট করা হয়েছে। আগে যারা ছিল তাদেরকে দোকান বরাদ্দ ও আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এর বেশি কিছু জানতে চাইলে আগের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম খান স্যারের সাথে কথা বলেন।