বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি 

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০২২

বন্যায় আটকা পড়াদের উদ্ধারে কাজ করছে সেনাবাহিনী

সারা দেশে বন্যা পরিস্থিতি চরম অবনতি হয়েছে। সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সিলেটে আবারও ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুরসহ সিলেট নগরীর অধিকাংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে কাজ করছে সেনাবাহিনী। জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার (১৭ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে নেমেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করে স্থানীয় আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। এর আগে সকালে এক বার্তায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, অসামরিক প্রশাসনের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর, খাদিমপাড়া, টুকেরবাজার, জালালাবাদ, মোগলগাঁও, কান্দিগাঁও, হাটখোলা ইউনিয়নের বাসিন্দারা। বন্যায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বিভিন্ন হাট-বাজার, মসজিদ, স্কুল-মাদ্রাসাসহ ভিটে-বাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, ক্ষেত ও বীজতলা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নগরীর অনেক বাসিন্দা বাড়িঘর ছেড়ে আবাসিক হোটেলগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছেন। তবে চলাচলের জন্য কোনও যানবাহন মিলছে না। জরুরি প্রয়োজনে কেউ ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না। নগরীর বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘রাস্তাঘাট, বাড়িঘর সব ডুবে গেছে। পুরো এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। আমরা ঘর থেকে বের হতে পারছি না। এখন পর্যন্ত কোনও উদ্ধারকারী পাইনি। ৯৯৯ নম্বরে সহায়তার জন্য ফোন দিয়েও পাইনি।’ তালতলার এলাকার গৃহিণী সানজিদা ইসলাম জানান, ‘সিলেটের অবস্থা ভয়াবহ। বিশুদ্ধ পানিসহ খাবারের সংকটে আছি। বাসার সব মালামাল পানিতে ডুবে আছে। পরিবারের সবাইকে রিয়ে খাটের ওপর বসে দিন কাটাচ্ছি।’
জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারের পর নিরাপদ স্থানে নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে তাদের বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসতে বলা হচ্ছে। খাদ্য সংকট দূর করতে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।’
সুনামগঞ্জে বন্যাকবলিতদের উদ্ধারে নেমেছে সেনাবাহিনী: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের প্রতিটি উপজেলাই কমবেশি প্লাবিত। বন্যায় তলিয়ে গেছে সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জ এলাকা। ফলে সারাদেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সুনামগঞ্জের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। সেখানে মোবাইল ফোনেরও নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে না। রয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাটও। এমন অবস্থায় জেলার ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় বন্যাকবলিতদের উদ্ধারে কাজ করছে সেনাবাহিনী। গতকাল শুক্রবার (১৭ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, এটা ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞাত। এমনটা আগে কখনো ঘটেনি। পরিস্থিতি মোকাববিলায় আমরা করছি। সরকার মানুষের পাশে আছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে বন্যাকবলিতদের পাশে থাকার নির্দেশনা রয়েছে। দুপুর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ ও গোইনঘাট এবং সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা সেনাবাহিনী উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে। এর আগে ১৫ জুন থেকে উজান থেকে নামতে থাকে পাহাড়ি ঢল। শুক্রবার পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার প্রায় সব উপজেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। অসংখ্য রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। জেলা সদরের সঙ্গে পাঁচটি উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, দ্বিতীয় দফার বন্যায় মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। আগের দফার চেয়ে এখন পানির পরিমাণ অনেক বেশি। সুনামগঞ্জ শহরের প্রায় প্রতিটি বাতাসেই পানি ঢুকেছে। এর আগে এত ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেও জানিয়েছেন অকে বাসিন্দা।
নেত্রকোনায় পানিবন্দি ২ লাখ মানুষ: ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে বসতরঘর, ভেসে গেছে তিন সহস্রাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ। কলমাকান্দা উপজেলার পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। এই উপজেলার আটটি ইউনিয়নের তিন শতাধিক গ্রামের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় দুই লাখ মানুষ। জেলা প্রশাসন সূত্র ও স্থানীয়রা জানায়, কলমাকান্দা উপজেলা সদরসহ বড়খাপন, পোগলা, খারনৈ, লেঙ্গুরা, নাজিরপুর ও রংছাতি ইউনিয়নের পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি খারাপ। এছাড়া দুর্গাপুর উপজেলাসহ কুল্লাগড়া, গাওকান্দিয়া ইউনিয়নে বাড়িঘর, দোকান-পাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দফতর বন্যার পানিতে প্লাবিত। দুই উপজেলার সঙ্গে প্রায় সবগুলো ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কংস, মোমেশ্বরী, ধনু, উব্দাখালিসহ ছোট-বড় সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বন্যাকবলিত প্রতিটি উপজেলায় ২০ মেট্রিক টন করে চাল ও নগদ দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে শুকনো খাবারসহ ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com