শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন

পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলা আরেক তরুণ গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০২২

পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খুলে ফেসবুক ও টিকটকে ভিডিও পোস্ট দেওয়ার সঙ্গে জড়িত আরও এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মাহদী হাসান। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে রাজধানীতে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বুধবার (২৯ জুন) দিবাগত রাতে লক্ষ্মীপুর থেকে মাহদীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মো. আসাদুজ্জামান জানান, মাহদী আগে এক সময় ছাত্রশিবিরের সদস্য ছিলেন। তার বাড়ি মুন্সীগঞ্জে। সে তামিরুল মিল্লাত নামে একটি মাদ্রাসা থেকে আলিম ও দাখিল পাস করেন। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পরের দিন যখন সবার সঙ্গে সেতু উন্মুক্ত করা হয়, মাহদী রেঞ্জ নিয়ে সেখানে যান। সে রেঞ্জ দিয়ে সেতুর নাট-বল্টু খোলেন। সে নাট-বল্টু খোলার পরিকল্পনা করেই সেতুতে যান। যা পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপরই তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দারা। তদন্তে তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পরই গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহদী নাট বল্টু খোলার কথা স্বীকার করেছে। তারপরও তাকে রিমান্ডে নিয়ে এর সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত থাকতে পারে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হবে।
সিটিটিসির এই কর্মকর্তা বলেন, পদ্মা সেতুর সাফল্যকে ছোট, জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য একটি মহল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২৬ জুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মাহদী হাসান পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট-বল্টু খুলে আবার লাগিয়ে দিচ্ছেন।
সরকারের সাফল্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মাহদী এ কাজ করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘটনার আগের রাতে মাহদী তার সঙ্গীদের নিয়ে পদ্মা সেতুতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ২৬ জুন সেতুতে যান চলাচল শুরু হওয়ার দিন ভোরে মাহদী সঙ্গীদের নিয়ে মাওয়া প্রান্ত থেকে সেতু পার হয়ে ওইপারে যান। তারা এমন ঘটনার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকেন, কিন্তু মানুষজন বেশি থাকায় তারা সেটা পারছিলেন না। এরপর দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে অপর প্রান্ত থেকে ফেরার সময় মাওয়া প্রান্তে এসে সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে ভিডিও করেন মাহদী। মাহদী ভিডিওতে বলছিলেন, ‘আমি কিন্তু রেঞ্জ ব্যবহার করছি না’। সে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আপত্তিকর রেঞ্জ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহদী স্বীকার করেছেন, রেঞ্জ দিয়ে প্রথমে নাট খুলে লুজ করে, পরে হাত দিয়ে খুলে ভিডিও বানানো হয়। উদ্দেশ্যমূলকভাবে সরকারের সাফল্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মাহদীসহ তার সঙ্গীরা সেতুর নাট খুলতে রেঞ্জ নিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা মাহদীর সঙ্গীদের খুঁজছি, তাদের গ্রেপ্তার করা গেলে হয়তো নাট খোলায় ব্যবহৃত রেঞ্জটি উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
অপর এক প্রশ্নের তিনি বলেন, আমাদের নজরদারি অব্যাহত আছে। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে যাতে কেউ কোনো অপতৎপরতা চালাতে না পারে, সেজন্য আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সেতু এলাকায়ও আমাদের সার্ভিলেন্স রয়েছে। এর আগে, গত ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। পরদিন ২৬ জুন ভোর থেকে এই সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। দুপুরে ৩৪ সেকেন্ডের একটি টিকটক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, বায়েজিদ তালহা সেতুর রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে দুইটি বল্টুর নাট খুলছেন। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পরপরই ওইদিন বিকালে তাকে রাজধানীর শান্তিনগর থেকে সিআইডি তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে বায়েজিদকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com