লক্ষ্মীপুরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বিস্তারে ‘রেড জোন’ বিবেচনা করে লক্ষ্মীপুর জেলাকে ফের লকডাউন করা হচ্ছে। ফলে করোনার প্রকোপ থেকে জনসাধারণের সুরক্ষায় আগামী ১৬ জুন মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়ে ৩০ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত সদর, রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলায় এই লকডাউন কার্যকর থাকবে।
রবিবার সকালে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেন জেলা করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান, সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গফফার, পৌরসভার মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।
সভায় জানানো হয়, রেডজোনে থাকায় সকলের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী করোনার প্রকোপ থেকে জনসাধারনের সুরক্ষায় লক্ষ্মীপুর জেলাকে লকডাউন ঘোষনা করা হয়েছে।
এ দিকে এর আগে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলা দুটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়। আগামী ১৫ জুন ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়ে ৩০ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত এই লকডাউন কার্যকর থাকবে।
শনিবার বিকেলে উপজেলা দুটির নির্বাহী কর্মকর্তা ও করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল মোমিন ও মোহাম্মদ মোবারক হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে থেকে এ তথ্য জানা যায়।
সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গফফার জানান, শনিবার পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরে সর্বমোট ৪১৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এদের মধ্যে সদরে ১৯৫ জন, রামগঞ্জে ৮০ জন, রায়পুরে ৫২ জন, কমলনগরে ৫৮ জন ও রামগতিতে ৩২ জন রয়েছেন। জেলায় এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৮২ জন। তাদের মধ্যে রামগঞ্জে চিকিৎসকসহ ৪২ জন, সদরে সাংবাদিকসহ ৭২ জন, কমলনগরে চিকিৎসক ও নারী-শিশুসহ ১৮ জন, রামগতিতে ১৩ জন এবং রায়পুরে জনপ্রতিনিধিসহ ৩৭ জন। এছাড়া রামগঞ্জ উপজেলায় তিনজন, সদর উপজেলায় দুইজন, রায়পুর উপজেলায় একজন, কমলনগর উপজোলায় একজন ও রামগতি উপজেলায় একজন মৃত ব্যক্তির করোনা পজিটিভ আসে। তবে শনাক্ত হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় এখনো কোন পজেটিভ রোগী জেলায় মারা যায়নি।
জেলা প্রশাসক ও জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অঞ্জন চন্দ্র পাল জানান, অত্যাধিক ঝুঁকি বিবেচনায় লক্ষ্মীপুর জেলা লকডাউন ঘোষণার প্রস্তাব করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে লকডাউন কার্যকর করা হচ্ছে। এতে সব ধরনের যানবাহন এবং দোকান ও শপিংমল বন্ধ থাকবে। ওষুধের দোকান, অ্যাম্বুলেস ও ওষুধ পরিবহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে। এই লকডাউন পূর্বের ন্যায় হবেনা। এটি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাইকিং করে লকডাউনের বিষয়ে প্রচারণা চালানো হবে।
এমআইপি/প্রিন্স