ইসলামী জ্ঞান তথা কিরাআত, তাফসির, ফিকহ, হাদিস এবং ফারায়েজে অসংখ্য নারী সাহাবি পা-িত্য রাখতেন। হজরত আয়েশা রা:, হজরত হাফসা রা:, হজরত উম্মে সালামাহ ও হজরত উম্মে ওয়ারাকাহ পুরো কুরআন হিফজ করেছিলেন। এমনিভাবে হজরত হিন্দ বিনতে উসাইদ, উম্মে হিশাম বিনতে হারিসাহ, রায়েতাহ বিনতে হায়্যান ও উম্মে সায়াদ বিনতে সায়াদ বিন রবি রা: কুরআনের আংশিক হিফজ করেছিলেন। উম্মে সায়াদ রা: কুরআন পাঠদানও করতেন।
তাফসির শাস্ত্রে অবদান : তাফসিরের ক্ষেত্রে হজরত আয়েশা রা:-এর বিশেষ পা-িত্য ছিল। বিখ্যাত হাদিসগ্রন্থ সহিহ মুসলিমের শেষভাগে তার তাফসিরের একটি অংশ উল্লেখ রয়েছে।
হাদিস শাস্ত্রে অবদান : হাদিস শাস্ত্রে অন্যান্য নারী সাহাবির তুলনায় উম্মাহাতুল মুমিনিনরা বিশেষ পা-িত্য রাখতেন। আর হজরত আয়েশা ও উম্মে সালামাহ রা: নারী সাহাবিদের মাঝে হাদিসশাস্ত্রে ছিলেন সবার সেরা। হজরত আয়েশা রা:-এর বর্ণিত হাদিস সংখ্যা ২২১০টি এবং উম্মে সালামাহ রা:-এর ৩৭৮টি। এ ছাড়া উম্মে আতিয়্যাহ, আসমা বিনতে আবু বকর, উম্মে হানি এবং ফাতেমা বিনতে কায়েস রা: ছিলেন অধিক সংখ্যক হাদিস বর্ণনাকারী।
ফিকহ শাস্ত্রে অবদান : হজরত আয়েশা রা: ফতোয়ার পরিমাণ এত অধিক ছিল যে, তা সঙ্কলন করলে বড় বড় কয়েক খ-ের কিতাব রচনা করা সম্ভব। হজরত উম্মে সালামাহ রা:-এর ফতোয়ার সঙ্কলন দিয়ে একটি পুস্তিকা রচনা করা যাবে। এমনিভাবে হজরত সাফিয়্যাহ, হাফসা, উম্মে হাবিবাহ, জুয়াইরিয়া, মাইমুনা, ফাতেমা, উম্মে শারিক, উম্মে আতিয়্যাহ, আসমা বিনতে আবু বকর, লাইলা বিনতে কায়েফ, উম্মে দারদা, খাওলা বিনতে তুওয়াইত, আতিকা বিনতে জায়েদ, সাহলাহ বিনতে সুহাইল, ফাতেমা বিনতে কায়েস, উম্মে সালামাহ, জয়নব বিনতে আবু সালামাহ, উম্মুল ইয়ামান এবং উম্মে ইউসুফের ফতোয়াসমূহকে একটি সংক্ষিপ্ত বইয়ে সঙ্কলন করা সম্ভব।
ইসলামী উত্তরাধিকার আইন শাস্ত্রে অবদান : হজরত আয়েশা রা:-এর ফারায়েজ তথা ইসলামী উত্তরাধিকার আইন শাস্ত্রে এত বেশি পা-িত্য ছিল যে বড় বড় সাহাবিও এ সংক্রান্ত মাসয়ালা তার কাছে জিজ্ঞেস করতেন।
ইসলামী জ্ঞানের পাশাপাশি জ্ঞানের অন্যান্য শাখাতেও তাদের পারদর্শিতা ছিল। যেমন : উম্মে সালামাহ রা: রুকইয়াহ করতে পারতেন। বক্তৃতায় ফাতেমাহ বিনতে সাকান রা:-এর বিশেষ প্রসিদ্ধি ছিল। স্বপ্নের তাবিরের ক্ষেত্রে আসমা বিনতে উমাইস প্রসিদ্ধ ছিলেন।
চিকিৎসাবিদ্যায় রুফাইদা আসলামিয়াহ, উম্মে মাতা, হামনাহ বিনিতে জাহাশ, উম্মে কাবশা, মুয়াজাহ, লাইলা, উমাইমাহ, উম্মে জিয়াদা, রবি বিনতে মুয়াওবিজ, উম্মে আতিয়্যাহ, উম্মে সুলাইম রা:-এর বিশেষ পারদর্শিতা ছিল। এমনকি রুফাইদা আসলামিয়াহ রা:-এর খিমার মাঝে একটি চিকিৎসাঘর ছিল যা মসজিদে নববীর কাছে অবস্থিত ছিল।
সাহিত্যে অবদান : কাব্যচর্চায় হজরত খানসা, সু’দা, সাফিয়্যাহ, আতিকা, উমামা মুরাইদিয়াহ, হিন্দ বিনতে হারেস, জয়নব বিনতে আওয়াম, আরবা, আতিকা বিনিতে জায়েদ, হিন্দ বিনতে আসাসাহ, উম্মুল ইয়ামান, কুতাইলা বিনতে আবদারিয়াহ, কাবশা বিনতে রাফে, মাইমুনা বালবিয়াহ, নিয়াম, রাকিকাহ রা:-এর নাম উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। নারীদের মাঝে এখনো খানসা রা:-এর মতো প্রথিতযশা কবির দেখা মেলে না। যদিও তার কবিতাগুলো কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে।