রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
জামালপুর জেলার তিন হাজার প্রান্তিক পরিবারকে উন্নত আর্থ-সামাজিক অবস্থাকে উপভোগ্য করে তোলার লক্ষ্যে ইসলামপুরে সিডস কর্মসূচির অবহিতকরণ সভা কে হচ্ছেন নগরকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কেশবপুরে সংবাদ সম্মেলন চিলাহাটি প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক মেয়াদের কমিটি গঠন বদলগাছীতে কৃষকের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন হারভেস্টার বিতরণ উলিপুরে ইউড্রেনের দুই পাশের সংযোগ সড়ক হওয়ায় এলাকাবাসী আনন্দিত কালীগঞ্জে সরকারি স্থান থেকে ফুলের হাট স্থানান্তর: বিপাকে প্রতিবন্ধী ইজারাদার পিআইবি,র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলো নগরকান্দা ও সালথার সাংবাদিক বৃন্দ গজারিয়া স্বপ্নপূরণে ছেলেকে হেলিকপ্টারে বিয়ে করালেন স্কুলশিক্ষক বাবা বরিশালে প্রচন্ড তাপদাহে বাড়ছে তালপাখার চাহিদা

বোয়ালমারীতে ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত অফিসে পরিষদের কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ

হাসান মাহমুদ মিলু বোয়ালমারী (ফরিদপুর) :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৩ আগস্ট, ২০২২

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পরিষদের নিজস্ব ভবন তালাবদ্ধ রেখে ব্যক্তিগত অফিসে পরিষদের কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই ইউনিয়নের ২৩ গ্রামের সাধারণ মানুষ চরম ক্ষুব্ধ। জানা যায়, উপজেলার শেখর ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. কামাল আহমেদ পরিষদের নিজস্ব কার্যালয় ব্যবহার করেন না। তিনি পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম চালাচ্ছেন তার নিজ এলাকা একই ইউনিয়নের সহস্রাইল বাজারের ব্যক্তিগত অফিসে বসে। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ ইউনিয়নবাসীর সুযোগ-সুবিধার তোয়াক্কা না করে বা তাদের মতামত না নিয়ে ওই ইউপি চেয়ারম্যান তার নিজের ইচ্ছেমতো পরিষদের কার্যালয় স্থানান্তর করেছেন। এতে ইউনিয়নের ২৩ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ইউনিয়নের পরিসেবা গ্রহণ করতে গিয়ে তারা আর্থিক ও সময়জনিত ক্ষতি এবং হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে যেমন তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তেমনি আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে গোটা ইউনিয়ন জুড়ে। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২৯টি গ্রাম নিয়ে গঠিত শেখর ইউনিয়নের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৪৩ হাজার। ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় বা বোর্ড অফিসটি ইউনিয়নের সাবেক ৩ ও বর্তমানে ৮ নং ওয়ার্ডের চরশেখর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত। গ্রামটি ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। আয়তন, ঐতিহ্য, জনসংখ্যা বিবেচনায় এ গ্রামের নামেই নামকরণ করা হয়েছে ইউনিয়নের। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে এ পর্যন্ত সব চেয়ারম্যানই এই বোর্ড অফিসে বসেই পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এ কারণে ২০১০-১১ অর্থ বছরে ইউনিয়ন কার্যালয়ের আধুনিকায়ন করে নির্মিত হয় দুই তলাবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন ইউনিয়ন কমপ্লেক্স ভবন। কিন্তু ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. কামাল আহমেদ এই আধুনিক কমপ্লেক্স ভবন উপেক্ষা করে নিজের ব্যক্তিগত অফিসকে পরিষদের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিষদের অনলাইন পরিসেবা, গ্রাম আদালতসহ সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে তার ব্যক্তিগত অফিস থেকে। সম্প্রতি সরেজমিনে শেখর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় পরিষদের সব কক্ষে তালা ঝুলছে। পরিষ্কার-পরিছন্নতার অভাবে বিশাল পরিষদ ভবন ও এর বিস্তৃত আঙ্গিনাটিকে দেখে মনে হয়েছে পরিত্যক্ত কোন বাসগৃহ। ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা অঞ্জনা নামের এক গৃহবধূ জানান, ছেলেদের জন্ম নিবন্ধনের জন্য পরিষদে এসেছিলাম। এখন দেখছি পরিষদ বন্ধ। এদিকে সহস্রাইল বাজারে গিয়ে দেখা যায় সেখানে একটি মার্কেটের পিছনে ৩টি কক্ষে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলছে। চরশেখর গ্রামের মুকুল মোল্যা বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর দুই/তিন বার পুরাতন অফিসে এসেছেন। এরপর অফিস খুলেছেন তার নিজ গ্রাম সহস্রাইলে। এতে আমাদের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের মানুষের ভীষণ সমস্যা হচ্ছে। সহস্রাইলের অবস্থান ইউনিয়নের শেষপ্রান্তে হবার কারণে অন্য প্রান্তের মানুষের সেবা পেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাজিতপুর গ্রামের কৃষক সালাম শেখ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে দেখছি, বোর্ড অফিস শেখর গ্রামে। এখন নতুন অফিস হইছে সহস্রাইলে। একটা কাগজ আনতে গেলে দিন শেষ। তাও আবার অফিস কোথায় সেটাও অনেকেই চেনেন না। শেখর ইউনিয়নের ঐতিহ্য ধ্বংস করে দেয়ার এ চেষ্টা খুবই দুঃখজনক। শেখর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ বলেন, চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ তার এলাকার ৫/৬টি গ্রামের ৮/৯ হাজার মানুষকে খুশি করতে পরিষদের কার্যালয় সরিয়ে নিয়েছেন। এতে ২৩ গ্রামের ৩০/৩৫ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। নিজের ব্যক্তিস্বার্থে একজন চেয়ারম্যান এমন অশুভ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। কামাল আহমেদ পরিষদের মূল ভবন ব্যবহার না করায় রাষ্ট্রীয় এই স্থাপনা নষ্ট হচ্ছে, যা দুঃখজনক। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান মো. কামাল আহমেদ এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার জন্যে ০১৭১৩১৬৮৩১৭১ এবং ০১৭৭১১৬৬২১৩ ফোন দুটিতে কল করা হয়। প্রথমটি একজন স্কুল শিক্ষিকা ধরেন। অপরটিতে একাধিকবার কল দিলেও ফোনটি কেউ ধরেন না। যে নম্বর থেকে কল দেয়া হয়েছিলো, সেটা চেয়ারম্যান সাহেবের পরিচিত নম্বর, সে কারনেই হয়তোবা তিনি এড়িয়ে গেছেন। এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি করা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদের দাপ্তরিক কাজ করার জন্যে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দাপ্তরিক কাজ করার জন্যে একটা অফিস আছে। নির্বাহী অফিসার তাঁর দাপ্তরিক কাজ করবেন সেখানে বসেই। তার বাইরে তাঁর দাপ্তরিক কাজ করার সুযোগ নেই। তদ্রুপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের পরিষদের বাইরে স্টাফসহ নিয়মিত কাজ করার সুযোগ নেই। শেখর ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. কামাল আহমেদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি তাঁর সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com