কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতি হয়েছে। টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী অববাহিকার তিন শতাধিক চর ও নদীসংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৯ উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের প্রায় লাখো মানুষ। তলিয়ে গেছে এসব এলাকার গ্রামীণ রাস্তাসহ উঁচু এলাকারও পাকা-আধা পাকা সড়ক। বন্যাকবলিত এলাকার জমির ফসল তলিয়ে গেছে। নিমজ্জিত ফসলের মধ্যে রয়েছে পাট, পটোল, বেগুন, ভুট্টা ও বীজতলা।
পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে থাকা মানুষ তাদের আসবাপত্র আর গৃহপালিত পশু নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে কোন রকমে বাসবাস করছে। চরাঞ্চলের অনেকেই উঁচু ভিটা, নৌকা ও চৌকির ওপর আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ নিকটবর্তী বাঁধ, রাস্তা, আশ্রয়কেন্দ্র ও স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে। তবে প্রবল বর্ষণের কারণে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেয়া পরিবারগুলোর দুর্ভোগ চরমে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ধরলার পানি বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারীতে ৪৫ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্ট ৪৭ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছ।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবর চন্দ্র সরকার জানান, কুড়িগ্রামে যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে তা ১৫ তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ১৫ তারিখের পর পরিস্থিতি জানা যাবে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
কুড়িগ্রাম সদর যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর গ্রামের মফিজুল ও রুবেল জানান, আমাদের সবার বাড়ি ও টিউবওয়েল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কোনরকমে চৌকির ওপরে বসবাস করছি। রান্না করা ও বিশুদ্ধ পানির খুবই সমস্যা পড়ছি আমরা।
কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী সরকার বলেন, আমার ইউনিয়নটি সম্পূর্ণ পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দি জীবন যাপন করছে। গত বন্যার কিছু বরাদ্দ ছিল তা বিতরণ করা হয়েছে নতুন করে এখনও বরাদ্দ পাইনি।
এমআইপি/প্রিন্স