বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৩:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
তীব্র গরমে কালীগঞ্জে বেঁকে গেছে রেললাইন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক মেলান্দহ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী দিদার পাশা জনপ্রিয়তায় এগিয়ে শ্রীপুর পৌরসভার উদ্যোগে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণে কর্মশালা রায়পুরায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা ঘোষণা আলী আহমেদের কমলগঞ্জের মিরতিংগা চা বাগানে অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভা অব্যাহত পলাশবাড়ীতে প্রচন্ড গরমে ঢোল ভাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে তরমুজ বিতরণ জুড়ীতে টিলাবাড়ি ক্রয় করে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ আনারসের পাতার আঁশ থেকে সিল্ক কাপড় তৈরির শিল্পকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে-সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি রাউজানে পথচারীদের মাঝে যুবলীগের ফলমূল ও ছাতা বিতরণ

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত রক্ষায় ১২ দফা ঘোষণা বিএনপির

ইকবাল হোসেন:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে বিশেষ দায়মুক্তি আইন তৈরি করে দুর্নীতি ও লুটপাটের জন্য সংশ্লিষ্ট আমলা-প্রকৌশলীদের দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। তবে যদি সময় আসে তাহলে আমরা (বিএনপি) এর বিচার করব।’ গতকাল শনিবার খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। বিএনপি নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, তা তুলে ধরেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল।
১. বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনসহ এ সংক্রান্ত সব কালাকানুন বাতিল করা হবে। ২. রেন্টাল/কুইক রেন্টাল কোম্পানির সাথে চুক্তি নবায়ন বন্ধ/বাতিল করা হবে। ৩. স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও অন্যান্য কাজ সম্পাদন করা হবে। ৪. চাহিদা অনুযায়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। ৫. উৎপাদন ও চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন অতি দ্রুত স্থাপন করা হবে। ৬. বাপেক্স ও অন্যান্য সরকারি সংস্থার মাধ্যমে দেশীয় খনিজ ও গ্যাস উত্তোলনের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। একই সাথে দেশীয় প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে উপযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ৭. বঙ্গোপসাগরে সম্ভাবনাময় গ্যাস/পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ উত্তোলনে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ৮. বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতের সব দুর্নীতি-অনিয়মের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
৯. দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতকে টেকসই ও নিরাপদ করতে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা কমিয়ে ক্রমান্বয়ে মোট উৎপাদনের ৫০ শতাংশ নবায়নযোগ্য শক্তিনির্ভর জ্বালানি নীতি গ্রহণ করা হবে। বিশেষ জোর দেয়া হবে জল-বিদ্যুৎ উৎপাদনে। ১০. ‘বেজ লোড পাওয়ার প্লান্ট’ স্থাপনের মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করা হবে। ১১. বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকে প্রয়োজনীয় মেরামতের মাধ্যমে উৎপাদন উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। ১২. দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কর্তৃক বিএনপির ভিশন- ২০৩০-এ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টর উন্নয়নে ঘোষিত পদক্ষেপসমূহ বাস্তবায়ন করা হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার গত দেড় দশক ধরে উন্নয়নের যে ঢোল বাজিয়ে আসছে তন্মধ্যে একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল বিদ্যুৎ খাত। দাবি করা হচ্ছে যে ২০২২ সালে এসে ক্যাপাসিটিসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে এবং সর্বোচ্চ উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। গত ১০ জুলাই ২০২২ সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ১১ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট।
তিনি বলেন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার উচ্ছ্বাস উদযাপন করা হলো ঘটা করে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এত নজিরবিহীন অর্থ ব্যয় করেও কেন পুনরায় দেশের জনগণকে লোডশেডিং বরণ করতে হচ্ছে, আজ কেন তবে বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, কেন আজ অন্ধকারাচ্ছন্ন দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত, কেন সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে, কেন বিদ্যুৎ খাত আজ অর্থনীতির জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে? এর উত্তর একটাই, সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি আর হরিলুটের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের বিশেষ আইনে স্থাপিত রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল ১৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর দুই-তিন বছরের পর বন্ধ হওয়ার কথা থাকলেও প্রয়োজন ছাড়াই তা এখনো চালু আছে। বেশ কিছু রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন না করেও ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ বিপুল অর্থ নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ছাড়াই সরকারকে এ পর্যন্ত ৯০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব ব্যবসায়ীদের পকেটেই গেছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। আবার এক হিসেবে গত এক যুগে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ গচ্চা গেছে প্রায় ৮ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। গত ৩ বছরেই ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করা হয়েছে ৫৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকদের পকেটে গেছে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি পিডিবি কর্তৃক বিদ্যুৎ বিভাগে পাঠানো প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, বিদ্যুতের চাহিদা সঠিকভাবে নির্ধারণ না করেই চাহিদার অনেক বেশি পাওয়ার প্ল্যান্টের সাথে চুক্তি করে দুর্নীতিপরায়ণ ব্যবসায়ীদের লুট করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই সরকারের নীতি একটাই তা হচ্ছে জনগণের সম্পদ লুট করে নিজেদের সম্পদ বৃদ্ধি করা এবং বিদেশে সেই সম্পদ পাচার করা। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতের এই বিপর্যয়, রিজার্ভের সঙ্কট সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক নৈরাজ্য ও দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতিতে সরকারকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে জনগণ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com