চা-শ্রমিকদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)। একই সঙ্গে তাদের ন্যূনতম মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদী) প্রচার সম্পাদক কমরেড তারেক ইসলাম বিডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কমরেড ডা. এম এ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাহিদুর রহমান এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান। এতে বলা হয়, মোট ২৪১টি চা-বাগানের শ্রমিকরা বর্তমানে আন্দোলন করছেন। তাদের এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাই। অবিলম্বে তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা মেনে নেওয়ার জন্য মালিক, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই। বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে অবহেলিত, শোষিত ও বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হলো চা-শ্রমিকেরা। দেশের অন্য যেকোনো খাতের তুলনায় চা-শ্রমিকদের মজুরি সর্বনি¤œ। দিনে ২৩/২৪ কেজি চা-পাতা তুলতে পারলে তারা মজুরি মাত্র ১২০ টাকা পান। এতো কম মজুরি দেশের আর কোনো খাতের শ্রমিকের নেই। কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা আরও বলেন, চা-শ্রমিকদের না আছে কোনো ভালো বাসস্থান, খাওয়ার পানি, চিকিৎসা ও সন্তানের লেখাপড়ার ব্যবস্থা। নিয়ম অনুযায়ী দুই বছর পর পর মজুরি পুনর্নিধারণ হওয়ার কথা। কিন্তু দালাল শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিকদের যোগসাজসে প্রতিবারেই দেড়/দুই বছর মজুরি নির্ধারণ প্রক্রিয়া ঝুলিয়ে রেখে শ্রমিকদের ঠকানো হয়। এবারেও মজুরি নির্ধারণের সময় প্রায় ২০ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও মজুরি বোর্ডের কোনো তৎপরতা না থাকায় শ্রমিকেরা প্রথমে দিনে ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন। এতেও মালিক-সরকারের টনক না নড়ায় গত ১৩ আগস্ট থেকে দেশের ২৪১টি বাগানে পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করছেন চা-শ্রমিকেরা। এরইমধ্যে চা-শ্রমিকদের আন্দোলন পুলিশ দিয়ে দমনেরও চেষ্টা চলছে।
তারা আরও বলেন, চা-শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে পুলিশি বাধা ও হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। গত ১৬ আগস্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে শ্রম অধিদপ্তরের বৈঠকে কোনো ধরনের সমঝোতা ছাড়াই শেষ হয়েছে এবং আগামী ২৩ আগস্ট আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের দিন ধার্য করা হয়েছে। কিন্তু বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, আমরা এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করি।
বিবৃতিতে বলা হয়, সিটি করপোরেশন এলাকায় সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের মজুরি দৈনিক ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানের বাজার দর অনুযায়ী চা-শ্রমিকের ন্যূনতম দৈনিক মজুরি কমপক্ষে ৫০০ টাকা হওয়ার কথা। অথচ চা-শ্রমিকেরা মাত্র ৩০০ টাকা মজুরি দাবি করার পরও তা মানছে না মালিকেরা।
বিবৃতিতে নেতারা অবিলম্বে চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিসহ ন্যায়সঙ্গত সব দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া জনগণকে চা-শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তারা।