মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত মনু নদীর বন্যা প্রতিরোধ ও নদী ভাঁঙ্গন রোধ কল্পে বাস্তবায়নাধীন “মাষ্টার প্রকল্প” নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন হওয়া নিয়ে বিরাজ করছে অনিশ্চয়তা। প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থবছর ওয়ারী প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়ে ঘাটতি, ঠিকাদার মহলের ধীরে চলা নীতি ও প্রকল্প নিয়ে অপ-প্রচারনার বেষ্টনীতে ঘুরপাক খাচ্ছে সম্ভাবনাময় এ প্রকল্পটি। বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ফুঁসে উঠা মনুনদীর বাঁধভাঙ্গা বন্যা এবং নদীতীর ভাঙ্গার অব্যাহত প্রক্রিয়া থেকে মুক্তির লক্ষ্যে গত ২০২০ সালে প্রণীত হয় মনু নদীর বন্যা প্রতিরোধ প্রকল্প। ওই বছর প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হবার পর এর ব্যয় ধরা হয় ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন হবার কথা। প্রকল্প ইস্টিমেটে রয়েছে ৩০.২৪০ কিলোমিটার এলাকার বাঁধ পূনঃনির্মাণ, ঝুকিপূর্ন ৬৭টি স্পটে টেকসই সংরক্ষন এর জন্য প্রায় ৭৬ লাখ সি.সি. ব্লক এবং সাড়ে ১১ লাখ জিওব্যাগ প্রতিস্থাপন, মৌলভীবাজার শহর এবং সংলগ্ন এলাকায় আড়াই কিলোমিটার ফ্লাডওয়াল নির্মাণ, ৩ উপজেলায় ৮৬ কিলোমিটার নতুন বাঁধ নির্মাণ ও ১২.১৭ কিলোমিটার নদীখনন। বাঁধ নির্মাণ এবং পূনঃনির্মাণের জন্য ৩ উপজেলায় নদী তীরবর্তী ২২৮ একর জমি অধিগ্রহনও প্রকল্পের অর্šÍভুক্ত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে- প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যথানিয়মে টেন্ডার গ্রহনের ভিত্তিতে ৩৫টি ঠিকাদারী প্রতিষ্টানকে কর্মসম্পাদনের জন্য বাঁছাই করা হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ ঠিকাদারী প্রতিষ্টানই জেলার বাহিরের। নিজস্ব যোগ্যতাবলে তারা বাছাইভুক্ত হয়েছেন। যথানিয়মে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করতে চাইলেও মূল সমস্যা হচ্ছে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে। ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত বরাদ্দ এসেছে মাত্র ৫৭.৯৮ কোটি টাকা। এর বাইরে ঠিকাদারদের বকেয়া পাওনা দাড়িয়েছে ৮০ কোটি টাকা। জানা গেছে- প্রকল্প খাতে ২০২০-২১ অর্থবছরে বরাদ্দ এসেছে ৩ কোটি এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে বরাদ্দ এসেছে ৫৪.৯৮ কোটি টাকা। এ অপ্রতুল বরাদ্দের ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে বিভিন্ন মহলে সৃষ্টি হযেছে সংশয়। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন- প্রকল্পের অগ্রগতি এখন পর্যন্ত ২৬ পার্সেন্ট। তিনি বলেন- অধিগ্রহনকৃত জমির মূল্য না পাওয়ায় বাঁধ নির্মান ও মেরামতের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন জমির মালিকরা। ২৬ পার্সেন্ট কাজে দুর্ণীতির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন- কাজের গুনগত মান বজায় রাখার লক্ষ্যে সচেতনতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন দপ্তর থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে । এখানে কাজ না করে বিল প্রদান করার কোন সুযোগ নেই।