মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২০ পূর্বাহ্ন

কুলাউড়ার হাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াদুদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

শ. ই. সরকার জবলু মৌলভীবাজার :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০২২

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ১০নং হাজীপুর ইউনিয়নে সরকারী সম্পদ আত্মসাৎ, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি, ইউপি’র মেম্বারদের সাথে অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখস’র বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন ইউপি’র ৭ মেম্বার। ইউপি’র ১, ২, ৩নং সংরক্ষিত ওয়ার্ড মহিলা মেম্বার দোলনা আক্তার, ১নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল মুকিদ, ২নং ওয়ার্ড মেম্বার শাইস্তা মিয়া, ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার মোস্তাফিজুর রহমান, ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার নুর আহমদ, ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল মুনিম ও ৭, ৮, ৯নং সংরক্ষিত ওয়ার্ড মহিলা মেম্বার সোনালি আক্তারের দায়েরী বিভিন্ন অভিযোগ সম্বলিত এ অনাস্থা প্রস্তাবপত্রে উল্লেখ করা হয়- ওয়াদুদ বখস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পর অত্যন্ত বেপরোয়া হয়ে উঠেন। ইতিপূর্বেই তিনি এলাকার সকল প্রকার অনৈতিক ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন এবং বর্তমানেও জড়িত আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য অভিযোগ বিদ্যমান রয়েছে। তিনি মেম্বারদের সাথে কোনরুপ সমন্বয় ও পরামর্শ ছাড়াই সম্পূর্ণ মনগড়াভাবে নিজ ইচ্ছামাফিক ইউনিয়ন পরিষদ চালাচ্ছেন। সাধারণ জনগণের সাথে দূর্ব্যবহার, ইউনিয়ন পরিষদ প্রদেয় বিভিন্ন সনদ প্রদানে সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়াও অতিরিক্ত অর্থ আদায়, সরকারী সম্পদ আত্মসাৎ, বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ না করিয়ে অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ, ইউপি’র নিজস্ব একাউন্টে টাকা জমা না রেখে বেশিরভাগ অংশের সমুদয় অর্থ নিজে ভোগ করে আসছেন। এছাড়াও, সরকার নির্ধারিত বিভিন্ন সনদ ও কাগজাতের ফি সংক্রান্ত তালিকা জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে প্রদর্শনের বিধান থাকলেও চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখস তা প্রদর্শন করেননা। জনসাধারণের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের হীনমানসে তিনি এহেন কার্যকলাপ অব্যাহত রেখেছেন। তিনি ভিন্ন ভিন্ন তারিখ ও সময়ে ইউপি কার্যালয়ে জনসম্মুখে অসদাচরন ও অকথ্য ভাষা প্রয়োগ করে অভিযোগকারী মেম্বারদেরকে বিভিন্নভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে আসছেন- যে কারণে অভিযোগকারী মেম্বারদের মান-ইজ্জতের উপর ব্যাপক প্রভাব প্রতিফলিত হচ্ছে। এমতাবস্থায়, অভিযোগকারী মেম্বাররা চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখস্’র এহেন কর্মকান্ডের বিষয়ে ১৬ আগষ্ট একটি সভা করে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং তার কর্মকান্ডের কিছু বিবরণ প্রকাশ করেন। তারা জানান- (১) জন্ম নিবন্ধনে সরকারি ফি ৫০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখ্স বাংলা জন্ম নিবন্ধন সনদে ২০০ টাকা ও ইংরেজী জন্ম নিবন্ধন সনদে ২০০ টাকা মিলিয়ে মোট ৪০০ টাকা হারে আদায় করছেন। অভিযোগকারী মেম্বাররা এতে আপত্তি জানানো সত্তেও তিনি তা অব্যাহত রেখেছেন। এ নিয়ে জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখ্স বলেন, মানুষ তাঁর অফিস থেকে এ সনদ নিতে বাধ্য হয়ে উক্ত টাকা দিতে হবে। তিনি না দিলে এ সনদের জন্য মানুষের অনেক কাজ আটকে থাকবে। তাই, তিনি যা চাইবেন জনগন তা দিতে বাধ্য (২) তিনি নাগরিকত্ব সনদের জন্য ২০০ টাকা, উত্তরাধিকারী সনদের জন্য ৫০০ টাকা, ব্রিকফিল্ডের ট্রেড লাইসেন্সের জন্য ২৩,০০০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের ট্রেড লাইসেন্সের জন্য ৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা আদায় করছেন (৩) তিনি একক সিদ্ধান্তে এলজিএসপি’র প্রকল্প গ্রহণ করেন এবং লোকদেখানো সামান্য কাজ করিয়ে দুই তৃতীয়াংশ অর্থ আত্মসাৎ করেন (৫) তিনি টিসিবি কার্ডধারীদের কার্ড নিজের কাছে রেখে মালামাল উত্তোলন করে অধিক মূল্যে বিক্রি করেন অবাধে। তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে কেউ মুখ খোলে কথা বলে না। তিনি মেম্বারদের কাছ থেকে ১০/১৫ টাকা মূল্যের চালের কার্ডের তালিকা নিয়ে পরবর্তীতে তা পরিবর্তন করে বয়স্ক, বিধবা ও পঙ্গু ভাতার জন্য নিজের ইচ্ছামাফিক লোকজনকে তালিকাভুক্ত করেন (৬) ইউপি কার্যালয়ের সম্মুখে দ্বিতীয় কিস্তির মাটিভরাট না করে ১,৫০,০০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন (৭) জনসাধারণের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্স ফি, যানবাহন ফি ইত্যাদি আদায় করার কোন হিসাব প্রদান করেননি এবং ইউপি’র একাউন্টে টাকা জমা প্রদান করেননি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com