আপিল কর্তৃপক্ষের মতামত অনুযায়ী দৃশ্য সংযোজন করলে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর আলোচিত চলচ্চিত্র ‘শনিবার বিকেল’ রিলিজে কোনো বাধা থাকবে না বলে মনে করছেন তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল সোমবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ৩৪ মিন্টো রোডে মন্ত্রীর বাসভবনে ফিল্ম অ্যালেয়ন্সের সঙ্গে বৈঠক, হাওয়া সিনেমার মামলা প্রত্যাহার ও সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, শনিবার বিকেল সিনেমাটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সিনেমাটি হলি আর্টিজানের যে হামলা হয়েছিলো সে ঘটনার ওপর ভিত্তি করে নির্মাণ করা হয়েছে। দুজন পুলিশ সদস্য সেখানে মারা গেছেন এবং আমাদের পুলিশ র্যাব ও সেনাবাহিনী অনেক সাহসিকতার সঙ্গে এ জঙ্গীদের দমন করেছিলে।
মন্ত্রী বলেন, সেন্সর বোর্ড যেটি মনে করেছে এ সিনেমাতে সে বিষয়গুলো সেভাবে আসেনি। সেজন্য এ দৃশ্যগুলো সংযোজন করতে বলা হয়েছিল। সেটি তারা কিছুটা করেছে বলে আমাকে জানিয়েছেন। সেন্সরবোর্ড বলছে সেটিও যথেস্ট নয়। তারা আবার আপিল করেছিলে, আপিল কর্তৃপক্ষ সিনেমা পরিচালককে জানিয়ে দেবে কী কী সংযোজন করা প্রয়োজন। সেটি সংযোজন করে দিলে আমি মনে করি এ সিনেমা রিলিজ করার ক্ষেত্রে যে সমস্যা আছে সেটি কেটে যাবে। অর্থাৎ সত্যি ঘটনার ওপর ভিত্তি করে সিনেমা করতে হলে সবকিছু আসতে হবে। সেজন্য আপিল বোর্ডের পরামর্শ দিলে সিনেমা রিলিজে যে জটিলতা সেটা কেটে যাবে, সিনেমাটি রিলিজ হবে বলে আশা করি।
মন্ত্রী বলেন, আমরা আজ ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আলোচনা করেছি। ওটিটি একটি ক্রমবর্ধমান আধুনিক প্ল্যাটফর্ম। এটিকে আমরা প্রমোট করতে চাই। ওটিটি প্লাটফর্ম এতো বিস্তৃত, এতো ব্যাপক এবং এতো ক্রমবর্ধমান সেজন্য এটিকে সেন্সর করা সম্ভব নয়। তাই এটিকে একটি নীতিমালার ভিত্তিতে পরিচালতি হওয়া বাঞ্চনীয়। সেজন্য যারা এটি নিয়ে কাজ করে তাদের নিয়েই মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে। সে কমিটি এটি নিয়ে কাজ করছে। তারা সব অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে এটি চূড়ান্ত করবে। এমন নীতিমালা করতে চাই যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এবং একই সঙ্গে আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষা করবে।
তিনি আরও বলেন, সিনেমা শিল্প নানান সংকটে যাচ্ছিলে এখন ভালোর দিকে। সেজন্য আমরা কমার্শিয়াল সিনেমায় অনুদান দিয়েছি। কারণ সিনেমা বানিয়ে আসলে পয়সা উঠত না, এখন উঠবে। দর্শক ফিরছে, সিনেমা হল বাড়ছে। আস্তে আস্তে পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে। সেজন্য আমরা আগের তুলনায় বেশি করে কমার্শিয়াল সিনেমায় অনুদান দিয়েছি। সে বিষয়গুলো আমরা আলোচনা করছি। একই সঙ্গে আর্ট ফিল্মে অনুদান প্রয়োজন। আর্টফিল্মও প্রয়োজন আছে। আর্টফিল্ম তো ব্যবসা করতে পারে না, তাদের অনুদান দরকার আছে। সে বিষয়গুলো আমরা আলোচনা করেছি।
ড. হাসান বলেন, আমি নিজেকে শিল্পী দাবি করতে পারি না, তবে আমি শিল্পী হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কারণ আমি নাট্যদলের সদস্য ছিলাম। আমি নাট্যগোষ্ঠীর সদস্য ছিলাম। আমি গান শিখতে পারিনি, কিন্তু পছন্দ করি। আমি শিল্পী না হলেও শিল্পীদের সঙ্গে আছি। আমি চেষ্টা করছি সবার সহযোগিতা নিয়ে চলচ্চিত্রকে ঘুরে দাঁড় করিয়ে আমাদের চলচ্চিত্র যেন বিশ্বে জায়গা করে নিতে পারে। আমাদের অনেক ছবি এখন যুক্তরাষ্ট্রে চলে। অনেক ছবি ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের হলে রিলিজ হয় এবং সেখানে ব্যবসা হচ্ছে। আমাদের চলচ্চিত্র আস্তে আস্তে জায়গা করে নিচ্ছে। আমাদের দেশে সমস্ত অপসংস্কৃতি ও তরুণ সমাজকে বিপথগামী থেকে রক্ষা করা, জঙ্গীবাদ ও মাদকাশক্তি থেকে রক্ষা করার জন্য আমি মনে করি বাংলাদেশে একটি সাংস্কৃতিক সুনামি দরকার। সেটি যদি করতে পারি তাহলে এসব থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষা করা যাবে।