চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে আমন ক্ষেতের সবুজের মাঝে কৃষকের হাসি। কিছুদিন আগে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে কৃষি জমিতে আমনের বীজ রূপনে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক। এখন আমন ক্ষেতে ফরিদগঞ্জের কৃষকদের সবুজের মাঝে কৃষকের হাসি। বর্তমানে উপজেলার কৃষকেরা আমন ক্ষেত পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত। তবে মৌসুমের শুরুর দিকে পানির অভাবে কৃষকরা চারা রোপন করতে পারছিলেন না বলে অনেক কৃষকের মন খারাপ ছিলো। সম্প্রতি বেশ কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির ফলে আমনের ক্ষেতে পানি জমেছে, তাই তাদের চিন্তার ভাঁজ দূর হয়ে গেছে। বিশেষ করে উঁচু জমিতে পানি জমায় চাষিদের মনে স্বস্তি এসেছে। শুকিয়ে যাওয়া আমন ক্ষেতের চারা সতেজ হয়ে মাঠের পর মাঠ এখন সবুজের সমারোহ। যেদিকেই চোখ যায় শুধু সবুজের মিলনমেলা। আমনের মাঠ যেন সবুজে ঢাকা প্রকৃতি। চারদিকের এই নয়নাভিরাম দৃশ্য, কৃষকের মনে দিচ্ছে এক ভিন্ন আমেজ। ফুটেছে কৃষকের মুখে হাসি। সরেজমিনে গিয়ে কৃষকদের সাথে কথা হলে তার বলেন, ভারি অথবা মাঝারি বৃষ্টিপাত হলেও খুব বেশি প্রতিকূলে না গেলে এবার রোপা আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে তারা আশা করছে। ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় এ বছর প্রায় ৮ হাজার ৩ শত ২৮ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু চাষ করা হয়েছে ৮ হাজার ৩ শত ৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৯ হাজার ৫ শত ৭৯ মেট্রিক টন। পানি নিয়ে কৃষকেরা কিছুদিন দুশ্চিন্তায় থাকলেও এখন পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় সে চিন্তা অনেকটা কেটে গেছে। উপজেলার বালিথুবা, চরদুঃখিয়া, রুপসা, পাইকপাড়া সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা আমন রোপন শেষ করে ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। গুপ্টি ইউনিয়নের কৃষক মোঃ সিরাজ মিয়া জানান, প্রত্যেক বছরের মত এ বছর তিনি জমিতে আমন চারা লাগিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় বিপাকে পড়েন তিনি। ইতিপূর্বে কয়েক দিনের টানা বৃদ্ধির ফলে তার উঁচু জমিগুলোতে পানি লাগায় তিনি এখন আমনের ফলন নিয়ে অনেক খুশি ও দুশ্চিন্তামুক্ত। কৃষক লোকমান হোসেন বলেন, তিনি এ বছর জমিতে আমন ধান আবাদ করেছেন। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তার আমনের ক্ষেতে পর্যাপ্ত পানি জমেছে। চারা গাছ এখন বেশ সতেজ হয়ে উঠছে। সবুজের মাঠ এখন দেখতে ভাল লাগে পরিচর্যা করছে সময় মতো। ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আশিক জামিল মাহমুদ বলেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদন হয়। প্রত্যেক বছর আমন মৌসুমে কৃষকদের যাবতীয় পরামর্শ ও সেবা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে প্রদান করা হয়। এ বছরও দেয়া হচ্ছে। কিছুদিন পূর্বে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না থাকায় কৃষকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা ছিল। কিন্তু ইতিপূর্বে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সেই চিন্তার ভাঁজ এখন কেটে গেছে। আগামী কয়েক মাস আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে। সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুরে আলম বলেন, ফরিদগঞ্জে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশি ধান উৎপন্ন হবে। কারণ অন্যান্য বছর অতিবৃষ্টির ফলে নিচু এলাকায় আমন ধান চাষ করা যেত না। কিন্তু এবছর নিচু এলাকাসহ উপরের বিটা সহ অনেক বেশি জামিতে আমনের চাষ করা হয়েছে।