শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১২:২৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
রোনালদোর মতো কোকাকোলার বোতল সরিয়ে দিলেন সিকান্দার রাজা শ্রমিকদের অবিলম্বে অধিকার-ভিত্তিক ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়বিচার দেয়ার সুপারিশ সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলীর ইন্তেকাল এক কলসি পানির জন্য ১ ঘণ্টা অপেক্ষা হলুদ থেকে সবুজ: অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জার্সি উন্মোচন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ইউরোপের দেশগুলো বাংলাদেশের পাশে আছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন, দেখে দুদক বললো ‘নিম্নমানের কাজ’ সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে এক যুগ পর জগুনা বিবিকে ফিরে পেলেন পরিবার ফোন ১০০ শতাংশ চার্জ করা ভালো নাকি খারাপ? জামালপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মে দিবস পালিত

২০২১ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারব : প্রধানমন্ত্রী

খবরপত্র প্রতিবেদক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। এ উপলক্ষে ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আমরা সমগ্র বাংলাদেশের প্রত্যেকটা ঘরে আলো জ্বালাব। এরই মধ্যে আমরা প্রায় ৯৭ ভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। আমরা আশা করি, ২০২১ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারব।

বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ৩১টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন, ২টি পাওয়ার প্ল্যান্ট, ১১টি গ্রিড সাব-স্টেশন, ৬টি নতুন সঞ্চালন লাইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী এর আগে ২৫৭টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধন করেছেন। এই ৩১টি উপজেলা উদ্বোধনের পর মোট ২৮৮টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতাভুক্ত হল। এর ফলে দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধাভোগীর অন্তর্ভুক্ত হলো।

৩১টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘তিনি তার সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছেন বাংলার মানুষের জন্য। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা এবং যারা ক্ষুধা দারিদ্র্যে জর্জরিত ছিল, শোষিত-বঞ্চিত ছিল, সেই শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তি দিয়ে তাদের একটা সুন্দর জীবন উপহার দেবে- এটাই ছিল জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য। সেজন্য নিজের জীবনটাকে তিনি উৎসর্গ করেছিলেন।’

স্বাধীনতার পর জাতির পিতার নেতৃত্বে রাষ্ট্র পরিচালনার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু একটা প্রত্যয় নিয়ে, যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে, যে লক্ষ্য নিয়ে জাতির পিতা স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, তার সেই স্বপ্ন পূরণ করা, বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, বাংলার মানুষকে একটি সুন্দর জীবন উপহার দেওয়া এবং স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে ছয়টি বছর আমাদের বিদেশে রিফিজিউ হিসেবে থাকতে হয়েছিল। আওয়ামী লীগ যখন আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে তখন ফিরে আসার সুযোগ পাই। তখন জোর করে দেশে ফিরে আসি। তারপর থেকেই এই প্রচেষ্টা; যে স্বপ্ন আমার বাবা দেখে গেছেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর শুরু হয় হত্যা ও ক্যূ ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। মিলিটারি ডিকটেটররা মার্শাল ল জারি করে এদেশের শাসনভার হাতে নেয়। তারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সেই ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করবার জন্য স্বজনপ্রীতি, তোষামোদী, খোষামোদী ও দুর্নীতিকে স্থায়ী রূপ দিয়ে যায়। দেশের উন্নয়ন না করলেও তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়। কিছু লোককে তারা অর্থ ও সম্পদশালী করে দেয়। এভাবেই তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করে। কিন্তু দেশের মানুষ শোষিত-বঞ্চিতই থেকে যায়। এটাই হচ্ছে সব থেকে দুভার্গ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৮১ সালে আমি দেশে ফিরে এসে সমগ্র বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ঘুরেছি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়েছি। আমি দেখেছি মানুষের হাহাকার, মানুষের দুঃখ কষ্ট। মানুষের ক্ষুধার জ্বালা, মানুষের কঙ্কালসার দেহ। রোগে ধুকে ধুকে মরা। দুর্ভিক্ষে দিনের পর দিন মানুষের মৃত্যু। আমি বাংলাদেশ ঘুরেছি এবং আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকারে আসার পর থেকে আমাদের প্রচেষ্টা দেশের উন্নয়ন। উন্নয়ন শুধু রাজধানী কেন্দ্রিক না, উন্নয়নটা যেন সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে যে মানুষগুলো থাকে তারা যেন নিজেদেরকে কখনও অবহেলিত মনে না করে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের সকল পরিকল্পনা গ্রহণ করি এবং আমরা তা বাস্তবায়ন শুরু করি। সেই ধারাবাহিকতায় আজকের বাংলাদেশ। বলতে গেলে বাংলাদেশ অন্ধকারই ছিল; দিনের পর দিন বিদ্যুৎই পাওয়া যেত না। যারা ব্যবসা-বাণিজ্য ও ইন্ড্রাস্ট্রি চালাত তাদেরকে জেনারেটর কিনে চালাতে হতো। এভাবে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই দুর্বিসহ অবস্থা ছিল।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘সার্বিক উন্নয়নের জন্য সব থেকে বেশি প্রয়োজন হয় রাস্তাঘাট বা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। এছাড়া আরেক দিকে বিদ্যুতের ব্যবস্থা। যদি বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা যায়, স্বাভাবিকভাবে সেই সব এলাকায় অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি হতে পারে। শুধু ঘরে আলো জ্বেলে ঘরে বসা থাকা না, অর্থনৈতিক উন্নয়ন বা শিল্প গড়ে তোলা অথবা কৃষি খামার গড়ে তোলা বা যেকোনো কাজের জন্য বিদ্যুৎ একান্ত অপরিহার্য। সেজন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে সঞ্চালন বৃদ্ধি ও মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে। তার শুভ ফল আজ মানুষ পাচ্ছে।’

১৯৯৬ থেকে শুরু করে বর্তমানে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার পরিচালনার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা আমাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন। আমরা এই পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পেরেছি।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে আমরা ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছিলাম। ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। এ উপলক্ষে ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আমরা সমগ্র বাংলাদেশের প্রত্যেকটা ঘরে আলো জ্বালাব। এরই মধ্যে আমরা প্রায় ৯৭ ভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। আমরা আশা করি, ২০২১ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারব। সেভাবেই আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্য ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমরা উৎপাদন করব। এখন রয়েছে ২৩ হাজার ৫৪৮ মেগাওয়াট। আর ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের টার্গেট রয়েছে। ২০৪১ সাল অর্থ্যাৎ আমরা যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি, সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছি। সেখানে যাতে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান হয় তার জন্য আমাদের বিদ্যুৎ দরকার। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। এই ডিজিটাল বাংলাদেশের ব্যবহার যত বেশি বাড়বে, বিদ্যুতের চাহিদাও ততবেশি বৃদ্ধি পাবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে এবং সার্বিকভাবে যাতে অর্থনৈতিক উন্নতি হয় অর্থাৎ উন্নতিটা শুধু রাজধানী কেন্দ্রিক না, শহর কেন্দ্রিক না, আমরা প্রত্যেকটা গ্রামকে শহরে রূপান্তর করতে চাই।’ এ সময় তিনি নাগরিক সুবিধা গ্রামের মানুষের ঘরে পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

বাবু/এমআইপি




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com