ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার প্রধান সড়কে অফিস এবং স্কুল কলেজ শুরু ও ছুটিকালীন সময়ে দীর্ঘকাল ধরে নিত্যদিনের যানজট এখন আর নাই বলা যায়। আর যানজট নিরসনে দৃঢ় নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আহসান মাহমুদ রাসেল। তার এই ঐকান্তিক প্রচেষ্টা জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং সদরপুর আপাতত যানজট মুক্ত হওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। উল্লেখ্য, সদরপুর প্রধান সড়কের সদরপুর হাসপাতাল রোড মোড় হতে খাদ্যগুদাম মোড় হয়ে কলেজ মোড় কৃষ্ণপুর রোড মোড় পর্যন্ত মাত্র আড়াইশ থেকে চারশ মিটার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই একমাত্র কী-পয়েন্ট দিয়েই বিভিন্ন এলাকার শত শত মানুষ, যানবাহন বিভিন্ন প্রয়োজনে সদরপুরেরর কেন্দ্রে প্রবেশ করে। এই স্থানে সরকারি প্রশাসনিক ভবন, থানা সহ বিভিন্ন অফিস, ব্যাংক ও স্থাপনা এবং চারটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পাশেই স্টেডিয়াম সংলগ্ন সদরপুর বাজার। একমাত্র প্রধান সড়কের ফুটপাত ঘিরে বসে ফলের দোকান, ফুসকা, আখ, বাদাম হরেক রকম পণ্যের হকার্স এবং যাত্রী ওঠা নামা ও মালপত্র বহনের জন্য যত্রতত্র পার্কিং করা থাকে থ্রি-হুইলার, হালকা ও ভারী যানবাহন। অন্যদিকে, পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর থেকে এই শহরের উপর দিয়ে গাড়ি চলাচলের পরিমাণ বেড়ে গেছে, চারটি কোম্পানীর বড় বড় বাস ঢাকা থেকে নিয়মিতভাবে আসা যাওয়া করে, ইটবালু রড সিমেন্ট বোঝাই ছোট বড় ট্রাক চলাচল করে। অন্যদিকে, কাজী বাড়ীর সামনে একটি ব্রিজ নির্মাণাধীন থাকায় চন্দ্রপাড়ামুখী এবং পিয়াজখালীমুখী গাড়ীগুলো কলেজ মোড় দিয়ে যাতায়াত করে। এইসব কারণে চলমান যানবাহন দীর্ঘক্ষণ জ্যামে আটকে থাকে। শহরের দক্ষিণ পয়েন্টে একটি, উত্তরে কৃষ্ণপুর মোড়ে একটি; মোট দুটো স্ট্যান্ড থাকলেও তা অব্যবহৃত থাকায় তেমন উপকারে আসছিল না। মাঝেমধ্যে যানজট এতই তীব্র আকার ধারণ করে যে, তা চতুর্দিকে আধা কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এবং জটমুক্ত হতে প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টা পর্যন্ত লেগে যায়। এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসসহ যে কোন অত্যাবশ্যক সার্ভিসসমূহ এ থেকে সহজে বেরিয়ে আসতে পারে না। এহেন অবস্থা থেকে উত্তরণ পাওয়া স্থানীয় জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল। যানজট নিরসন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বর্তমানে থ্রী-হুইলার গুলোকে যাত্রী নিয়ে মূল শহরে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না এবং চলমান গাড়ীগুলোকে নির্দিষ্ট পয়েন্টের বাইরে যেখানে সেখানের থামতে দেয়া হয় না। যে করণে নিত্যদিনকার যানজটের চিত্র তেমনটি আর নেই। তবে, যাত্রীবাহী থ্রী-হুইলার গুলোকে নির্দিষ্ট পয়েন্টে আটকে দেয়ার কারণে স্কুল, কলেজ, অফিসগামী যাত্রীদের পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌছাতে হয়। প্রচন্ড রোদে কিংবা বৃষ্টিতে পায়ে হাটা যাত্রীদের কিছুটা কষ্ট হলেও যানজট না থাকায় তারা কমবেশী সবাই সন্তুষ্ট। যানজট নিরসণ বিষয়ে এই প্রতিবেদকের সাথে (মুঠোফোনে) আলাপচারিতার এক পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার অভিমত ব্যক্ত করে বলেন-সদরপুরের বিশিষ্ট জনেরা মনে করেন যানজট মুক্ত হওয়ার এই ব্যবস্থা প্রশংসার যোগ্য কিন্তু সাময়িক, দীর্ঘস্থায়ী নয়। নিয়মিত নজরদারি এবং তদারকিতে রাখতে পারলে সুফল পাওয়া যাবে। তবে স্থায়ীভবে যানজট থেকে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই কর্তৃপক্ষকে স্থায়ী সমাধানের উপায় নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে হবে।