করোনা মহামারির পর রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ৪৫টি এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার। এজন্য দুই সিটির দুটি এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হয়। বলা হয়, পরীক্ষামূলক এই লকডাউন সফল হলে সব এলাকায় পর্যায়ক্রমে জোনভিত্তিক লকডাউন কার্যকর করা হবে। কিন্তু সরকারের এমন ঘোষণার পর নতুন করে কোনও এলাকায় লকডাউন কার্যকর করতে দেখা যাচ্ছে না; বরং সবকিছু থেকে নিয়ন্ত্রণ উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে। গত ১৩ জুন অনুষ্ঠিত করোনা প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির সভায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৪৫টি এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটির ১৭ এবং দক্ষিণ সিটির ২৮টি এলাকা রয়েছে। ঢাকা উত্তরের এলাকাগুলো হচ্ছে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, গুলশান, বাড্ডা, ক্যান্টনমেন্ট, মহাখালী, তেজগাঁও, রামপুরা, আফতাবনগর, মগবাজার, এয়ারপোর্ট, বনশ্রী, রাজাবাজার, উত্তরা, রায়েরবাজার ও বসুন্ধরা। বাংলাট্রিবিউন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আর দক্ষিণের এলাকাগুলো হচ্ছেযাত্রাবাড়ী, ডেমরা, মুগদা, গেন্ডারিয়া, ধানমন্ডি, জিগাতলা, লালবাগ, বাসাবো, শান্তিনগর, পরীবাগ, পল্টন, আজিমপুর, কলাবাগান, রমনা, সূত্রাপুর, মালিবাগ, কোতোয়ালি, টিকাটুলী, মিটফোর্ড, শাহজাহানপুর, মতিঝিল, ওয়ারী, খিলগাঁও, কদমতলী, সিদ্ধেশ্বরী, ল²ীবাজার, এলিফ্যান্ট রোড ও সেগুনবাগিচা।গত ১৫ জুন এলাকাভিত্তিক লকডাউন সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা এক আদেশে বলা হয়, বেশি আক্রান্ত এলাকাকে রেড, অপেক্ষাকৃত কম আক্রান্ত এলাকাকে ইয়েলো এবং একেবারে কম আক্রান্ত বা আক্রান্তমুক্ত এলাকাকে গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। রেড জোনকে লকডাউন করা হবে, ইয়েলো জোনে যেন আর সংক্রমণ না বাড়ে সেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সতর্কতা থাকবে গ্রিন জোনেও। লকডাউনের মেয়াদ হবে ১৪ থেকে ২১ দিন। রেড জোন ঘোষিত এলাকাগুলোর মধ্যে উত্তর সিটির রাজাবাজার ও দক্ষিণ সিটির ওয়ারীতে ২১ দিন করে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হয়। রাজাবাজারে লকডাউন শুরু হয় ১০ জুন থেকে। আর ওয়ারীতে শুরু হয় ৪ জুলাই থেকে। এই লকডাউনকে সফল হিসেবে আখ্যা দিয়ে তখন বলা হয়েছিল, এর কারণে ওই এলাকায় করোনা মহামারি কমেছে। কিন্তু পরবর্তীতে বাকি এলাকাগুলোতে পর্যায়ক্রমে এই লকডাউন বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত কোনও এলাকায় নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি।
জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. এমদাদুল হক বলেন, ‘লকডাউন ঘোষণা করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আমাদের কাছে সরকারিভাবে একটা নির্দেশনা আসে। আমরা শুধু তাদের সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করি। ওয়ারীতে লকডাউন বাস্তবায়ন করার পর আমাদের কাছে আর কোনও নির্দেশনা আসেনি। নতুন করে কোনও নির্দেশনা আসবে বলেও মনে হচ্ছে না।’ একই কথা বলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছেও কোনও নির্দেশনা নেই।’
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে ফোন করলেও যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।