আগামী বছর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি ইউরেনিয়াম দেশে আসবে। ফলে আগামী বছরের ডিসেম্বর থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট উৎপাদন শুরু করতে পারবে। এই কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান ও প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি স্থাপন (রিঅ্যাকটর প্রেসার ভেসেল) কাজ উদ্বোধনের প্রস্তুতি দেখতে এসে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তারা। আজ বুধবার (১৯ অক্টোবর) এই চুল্লির স্থাপন কাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই কাজ উদ্বোধন করবেন।
ইয়াসেফ ওসমান বলেন, চুল্লি স্থাপনের মাধ্যমে কত শতাংশ কাজ এগোলো সেটা ওইভাবে হিসাব করে বলা যায় না। কারণ আমাদের অনেকগুলো কাজ আছে। সেগুলো শেষ হওয়ার পর একটা রিপোর্ট দিতে হয়। সেই রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত আমরা পেমেন্ট করতে পারি না। যার মধ্যে অনেক কাজ ফিজিক্যালি হয়ে গেলেও হিসাবের মধ্যে আনতে পারিনি। তার জন্য আমরা দুটো হিসাব করি। একটি হচ্ছে ফিন্যান্সশিয়াল, আরেকটি হচ্ছে ফিজিক্যাল। ফিজিক্যাল প্রোগ্রেস অনেকদূর এগিয়ে গেছে। যেই সময়ের মধ্যে আমরা কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি। সেটি ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে কাজ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকারের কাজেও শতভাগ স্বচ্ছতা রক্ষা করা যায়। আমার জানা মতে, শতভাগ স্বচ্ছতার মধ্যে দিয়ে এই প্রকল্পের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। আশা করছি আমরা সময়মতো শেষ করতে পারবো ইনশাল্লাহ। এই ধরনের প্রকল্পে খুব বেশি কিছু বলা যায় না। কারণ এখানে অনেক ধরনের সিকিউরিটি ইস্যু আছে। আমাদের দেশের সেনাবাহিনী কিন্তু এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে।
কবে উৎপাদন শুরু হবে– জানতে চাইলে মন্ত্রী আরও বলেন, আমি একটা কথা বলে রাখি। আমি তৈরি হলেই তো হবে না। আমি তো এখানে কারেন্ট বিক্রি করবো। কিন্তু যারা কিনবে তাদের কথা তো বলতে পারবো না।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে চালু হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে আমরা রেডি। আগামী বছরের মধ্যেই আমাদের প্রথম জ্বালানি আসবে। প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর বলেন, কাল আমাদের নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের দ্বিতীয় ইউনিটের যে কন্সট্রাকশন সেটার কাজ শুরু করবো। এরপর স্টার্টআপ, তারপর কমিশনিং শুরু করবো। এরপর আমরা জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করবো। এই কমিশনিং এর কাজ ২০২৩ সালের শেষ দিকে শুরু হওয়ার কথা। আর গ্রিডে যাবে ২০২৪ সালে। দ্বিতীয় ইউনিট গ্রিডে যাবে ২০২৫ সালে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কোনও চ্যালেঞ্জ নেই। এখানে প্রকল্প এলাকার ৩০০ মিটারের পর থেকে জনগণ বসবাস করতে পারবে।
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে রাশিয়ার অর্থায়ন, ডিজাইন ও কারিগরি সহায়তায় ভিভিআর-১২০০ মডেলের দুটি পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন হবে। ২০১৭ সালে প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এর পর থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। প্রথম ইউনিটের চুল্লি স্থাপনের কাজ শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি স্থাপন শুরু হচ্ছে। যা পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য একটি বড় অর্জন বলে মনে করছেন রূপপুর প্রকল্পের কর্মকর্তারা। -বাংলাট্রিবিউন