মহাসড়কে তিন চাকার বাহন বন্ধের দাবি তুলে শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকাল থেকে পটুয়াখালীতেও বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির ডাকা ধর্মঘট চলছে। অভ্যন্তরীণ রুটসহ ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রী ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় আসা পর্যটকরা। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পটুয়াখালী বাস স্ট্যান্ডসহ সব উপজেলার বাস টার্মিনালে বাসগুলো সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে আছে। টিকিট কাউন্টারগুলো বন্ধ রয়েছে। অনেক সাধারণ মানুষ বাস স্ট্যান্ডে এসে বাস না পেয়ে বাধ্য হয়ে গন্তব্যে ফিরছেন তিন চাকার বাহন ব্যাটারচালিত অটো, মাহেন্দ্র, সিএনজি ও ইজিবাইকে। কেউ কেউ আবার বাধ্য হয়ে মোটরসাইকেলেও যাওয়া-আসা করছেন। এতে যাতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। সাধারণ মানুষের চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ লক্ষ্য করা গেছে।
পটুয়াখালী বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির দাবি, পটুয়াখালী-কুয়াকাটা আঞ্চলিক মহাসড়কে চলছে ব্যাটারচালিত অটো মাহেন্দ্র, সিএনজি ও ইজিবাইকসহ বিভিন্ন ধরনের তিন চাকার বাহন। এসব বাহনের চালকেরা প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নয়। তারা নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে দূরপাল্লার পরিবহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সড়ক ও মহাসড়কে দাবিয়ে বেড়াচ্ছে। আর এসব যানবাহন মহাসড়কে চলার কারণে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। এদিকে বিএনপি নেতাদের দাবি, আগামীকাল শনিবার বরিশালে বিএনপির মহাসমাবেশ বানচাল করতে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
পটুয়াখালী বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী মো. আকবর হোসেন বলেন, আমি গলাচিপা থেকে মোটরসাইকেলে পটুয়াখালী বাস স্ট্যান্ডে এসেছি। আমার অসুস্থ বাবা বরিশাল হাসপাতালে আছেন, সেখানে যেতে হবে। কিন্তু দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কোনও গাড়ি পাইনি। কোনও বাস ছাড়ছে না। মোটরসাইকেলে ভাড়া দ্বিগুণ চাচ্ছে, তাছাড়া ঝুঁকিও রয়েছে।
মিনারা বেগম নামে আরেক যাত্রী বলেন, জরুরি কাজে আমাকে কলাপাড়া যেতে হবে। বাস ছাড়ছে না এতে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ইজিবাইকে ভেঙে ভেঙে যেতে হচ্ছে।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি বলেন, বিএনপির বরিশালের গণসমাবেশ বানচাল করতে এ বাস ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। সমস্ত বাধা উপেক্ষা করে নৌপথসহ বিভিন্ন উপায়ে আমদের নেতাকর্মীরা বরিশালে পৌঁছেছে। আমাদের সমাবেশ সফল হবে। পটুয়াখালী জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মৃধা জানান, হাইকোর্টের রায় রয়েছে মহাসড়কে তিন চাকার বাহন চলতে পারবে না। গত দুই মাসে পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে এই টমটম, মাহিন্দ্রা ও ভটভটির কারণে বেশ কয়েকটি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে বিলাসবহুল এসি গাড়িও রয়েছে। এতে প্রাণহানিও ঘটছে। আমারা দুই দিনের জন্য ধর্মঘট ডাকিনি, এসব বাহন সড়কে বন্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত আমাদের লাগাতার ধর্মঘট চলবে।