বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ক্ষুব্ধ জনগণ ক্ষোভে-দ্রোহে ফুঁসে উঠেছে। জনগণ সরকার পতনের ক্ষণ গনণা করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার জনগণের মধ্যে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করতে ভয়ানক পন্থা অবলম্বন করেছিল। এখন একই পথে নেমেছে আওয়ামী লীগ সরকার। দমন-পীড়ণ, মধ্যরাতে তুলে নিয়ে যাওয়া, গুম-খুন-জঙ্গি নাটক শুরু করেছে আবারো। গণতন্ত্রের অস্তিত্বকে নিশ্চিহ্ন করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কৌশল নিয়েছে তারা। পাশাপাশি বিএনপির সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দায়ের, পাইকারিহারে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নির্যাতন চালিয়ে দেশটাকে নরকে পরিণত করেছে সরকার।
তিনি অভিযোগ করেন, জামিন বাতিল করে গতকাল বুধবার বিএনপির কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যুবদল আলী আকবর চুন্নু ও স্বেচ্ছাসেবক দলের রফিক হাওলাদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক কমিশনার হারুন উর রশীদসহ অনেক নেতাকর্মীকে। এ ছাড়া সিলেট জেলায় গত ৬ নভেম্বর বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাতনামা ২০০/২৫০ জনের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ১২ বছর আগে মারা যাওয়া ফরিদপুরের সাবেক কমিশনার ও শহর বিএনপির সভাপতি প্রয়াত বাচ্চু মিয়া আলীর বাড়িতে গত মঙ্গলবার মধ্যরাত ১২টায় পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। মুন্সিগঞ্জ জেলায় বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য যিনি এক বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছেন তার বাড়িতে সাদা পোশাকধারী লোকজন হানা দিয়েছে। তাদের বাড়িতে অভিযানকালে নারীদের সাথে ন্যাক্কারজনক আচরণ করেছে পুলিশ।
তিনি বলেন, ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে গণগ্রেফতার করতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। নগরকান্দায় সাতজনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি ফরিদপুরে কমপক্ষে ছয়জন নেতার বাড়িতে অভিযানের নামে হয়রানি করেছে পুলিশ। বিএনপির নেতা মিজানুর রহমানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার ভাইকে আটক করেছে।
তিনি আরো বলেন, বরিশালের গণসমাবেশ শেষে ভোলার চরফ্যাশনে নেতাকর্মীরা নিজ এলাকায় ফেরার পথে আওয়ামী দুস্কৃতিকারিরা পথে পথে আক্রমণ করে। চর মানিকা, হাজারীগঞ্জ, মাদ্রাজ, এওয়াজপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে মারাত্মক আহত করে। দুস্কৃতিকারিরা বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িঘর-দোকানপাট-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট ও বন্ধ করে দিয়েছে। সন্ত্রাসীদের হামলায় যুবদল নেতা মোঃ জামাল, রিয়াজ তালুকদার ও মামুন, ছাত্রদল নেতা মোঃ আনিস, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোঃ সুজন ও মুনিরসহ অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়। এলাকায় এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে, নেতাকর্মীরা এলাকাছাড়া। রিজভী বলেন, প্রতিটি বিভাগীয় গণসমাবেশকে বানচাল করার জন্য যানবাহন-পরিবহন বন্ধ করে দিচ্ছে। পথে পথে হামলা করছে। গ্রেফতার মামলা করছে। তাতে কি শেখ হাসিনা রুখতে পারবে এই জনতার সাগরে ওঠা টালমাটাল জোয়ার।