মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
সলঙ্গায় পিঠা বিক্রি করে সংসার চালান আব্বাস ও কহিনুর দম্পতি কমলগঞ্জে ইউনিয়নের সৌন্দর্য বর্ধনে ডিজিটাল সাইনবোর্ড স্থাপন তারাকান্দায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাস্তা পরিদর্শন আমীরে জামায়াতে গাইবান্ধায় আগমন উপলক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সুন্দরবন থেকে অবৈধভাবে সম্পদ আহরণ বন্ধে জনসচেতনতামূলক সভা ফটিকছড়ির ধর্মপুরে বিএনপি নেতাদের স্মরণে স্মরণসভা গজারিয়ায় মাদ্রাসায় ও অসহায়দের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ সানন্দবাড়ীতে সাদ পন্থীদের শাস্তি ও নিষিদ্ধের দাবিতে মানববন্ধন প্রতিবাদ সভা লালমোহন সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অভিভাবক সমাবেশ বগুড়ার শেরপুরে অটোরিকশা চালকদের নিকট থেকে আবারও চাঁদা আদায়, প্রতিবাদে চালকদের বিক্ষোভ

লোডশেডিং আর কত কাল?

মিয়া মোঃ সাদী
  • আপডেট সময় শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২২

অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান এ পাঁচটি প্রত্যেক মানবসন্তানের মৌলিক চাহিদা। তবে প্রথম চারটি সমাধানের মূখ্য পন্থা হলো বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান। যেমন সমগ্র বিশে^ স্বীকৃত ঘাতক ব্যাধি এইডস। কিন্ত বাংলাদেশের ঘাতক ব্যাধি লোডশেডিং।
লোডশেডিং এর আভিধানিক অর্থ বিদ্যুৎ এর অতিরিক্ত চাহিদার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হওয়া। কিন্ত এ লোডশেডিং এর ও কিছু নীতি নিয়ম থাকে। তবে আমাদের দেশে এ নিয়মের ব্যতিক্রম চলছে। তাই আমি বলবো কূটকৌশল তবে সরকারের দূরদর্শিতার অভাব। বিদ্যুৎ আধুনিক মানুষের জীবন প্রণালীর একটি সার্বক্ষণিক অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। ব্যক্তির সুখ- স্বাচ্ছন্দ তাই শুধু নয় জাতির উন্নতি, অগ্রগতিও নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহের উপর নির্ভরশীল। এক মুহুর্ত বিদ্যুতের অনুপস্থিতি জনজীবনে কি সংকটের সৃষ্টি করে তা ভাষায় অপ্রকাশ্য। কারণ বাংলাদেশের যারা কর্ণধার তারা কি কখনো বিদ্যুৎ যাওয়া আসা সমস্যার সম্মুখিন হয়েছেন-? তবে ক্ষণে-ক্ষণে বিদ্যুতের লোডশেডিং আমাদের জীবনে যেন স্থায়ী আসন পেতে বসেছে।
লোডশেডিং নিয়ে পত্র- পত্রিকায় প্রায়ই লেখালেখি হচ্ছে। কিন্ত বিদ্যুতের সার্বক্ষণিক সুষম সরবরাহ নিশ্চিত করা এখনো সফল হয়নি। বিনা নোটিশে দিন-রাত যেকোন সময়ে হঠাৎ – হঠাৎ লোডশেডিং এর কবলে পরতে হয়। সৃষ্টি হয় নানা দুর্ভোগ। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ার ব্যাঘাত ঘটে। পানি সরবরাহ বাধাগ্রস্থ হয়। কল-কারখানার চাকা ঘুরে না, আলো জ¦লে না, ফ্যান চলে না, ফ্রিজ টিভি বন্ধ হয়ে যায়। ফ্রিজে রাখা মাছ-মাংস পঁচে দুর্গন্ধ নাভিশ^াস হয়ে পরে। এক কথায় ব্যক্তিগত, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ড স্তব্ধ হয়ে যায়। এ কথা ঠিক যে, আমাদের বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে কিন্তু এর ব্যবস্থাপনায় যে আনারিপনা, অব্যবস্থা ও দূর্নীতি রয়েছে তা সীমাহীন এবং অভিনব কূটকৌশল ও সরকারের দুরদর্শিতার অভাব রয়েছে। প্রধানত এ কারণে জনগণকেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট বা লোডশেডিং এর শিকার হতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এক শ্রেণীর গ্রাহকের যোগসাজশে অহরহ রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিদ্যুৎ অপহরণ করা হচ্ছে। সিষ্টেম লস নাম দিয়ে তাকে রীতি সিদ্ধ করা হচ্ছে। এ সম্পর্কে এক তথ্য জরিপে দেখা যায় মাসে অন্তত্য ৬ কোটি ইউনিট অর্থাৎ গড়ে ১৫ কোটি টাকার বিদ্যুৎ চুরি হয়ে যাচ্ছে।
আমি একজন শহিদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে জাতির স্বার্থে এ চুরি বন্ধের উপায় খুজে বের করার দাবি রাখছি এবং কর্তব্য। কারো কারো মতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য কিছু সংখ্যক অসাধু কর্মচারী কর্তৃক বিদ্যুৎ সংকটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ যেখানে আমাদের নিত্য দিনের প্রয়োজনীয় সঙ্গী। এটাকে নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া যায় না।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালী জাতির মুক্তির সনদ ছয়দফা দিয়েছিলেন বলেই আজ আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। অতএব, আমজনতার পক্ষ থেকে নি¤œ বণির্ত ছয়টি দফা দিচ্ছি। এ বিষয়ে যদি বিদ্যুৎ বিভাগ তথা সরকার দৃষ্টি দান করে তবে জাতি লোডশেডিং নামক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে ইনশাআল্লাহ। লোডশেডিং এর দুুর্ভোগ থেকে জাতিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য নি¤œ লিখিত পদক্ষেপ গুলো গ্রহণ করা অতিব প্রয়োজন।
০১: বিদ্যুৎ চুরি বন্ধে কঠোর প্রদক্ষেপ গ্রহণ ও বিদ্যুৎ উৎপাদন বিভাগে স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি সুক্ষ দৃষ্টি রাখা এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি কারীদের শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা।
০২: ব্যক্তি মালিকানায় চালিত মিল কারখানায় উৎপাদন ও বিদ্যুৎ ব্যবহারের হিসাব নেওয়া।
০৩: বিদ্যুৎ বিভাগে চাকুরিজীবিদের কর্মে নিয়োগ প্রাপ্তির পূর্বের অর্থ সম্পদের হিসাব-নিকাশ ও বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার হিসাব নেওয়া।
০৪: একটা মিল কারখানায় বৎসরে কয়বার মিটার পরিবর্তন করা হয় বা কতদিন বিকল্প বিল বা গড় বিল দেখানো হয় তার হিসাব নেওয়া।
০৫: বিদুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং এজন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ। গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্ম সমাপ্তির পর সেই সব প্রতিষ্ঠানে বৈদ্যুতিক পাখা ও বাতি জলছে কিনা তা পরীক্ষা করা।
০৬: পিক আওয়ারে বিদ্যুৎ হ্রাস করা এবং শহরের বিলাস বহুল মার্কেট ও দোকান পাটে চোখ ধাধানো আলোক সজ্জা বন্ধ করা।
জানিনা আমার এই লেখা রাষ্ট্র পরিচালক অথবা জাতির কর্ণধারদের দৃষ্টিতে পরবে কিনা? তবে বিদ্যুতের সমস্যায় রাষ্ট্র নামক যন্ত্রটি স্থবির হয়ে যাওয়ার উপক্রম। বর্তমান প্রজন্ম অর্থাৎ যারা এ বৎসর এস.এস.সি বা এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল বা আছে তাদের প্রায় ৫৫% বিদ্যুতের অব্যবস্থাপনার কারণে আওয়ামীলীগ বিমুখী হয়ে পরেছে। তা আমার ব্যক্তিগত সূক্ষ জরিপে ধরা পড়েছে। তাই কবির ভাষায় লিখতে হয়-
‘‘আর কতকাল থাকবি বেটি মাটির ঢেলা মুর্তি আড়াল
স্বর্গ যে আজ জয় করেছে অত্যাচারি শক্তি চাড়াল”।
বর্তমানে মৌলিক চাহিদার চারটির সাথেই বিদ্যুৎ সম্পৃক্ত। অতএব, বিদ্যুৎ সমস্যা মোকাবেলায় সরকার কিভাবে কোন পথে যাচ্ছেন তা দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার নয়। দশ মিনিট অন্তর অন্তর বিদ্যুৎ যাওয়া আসার অর্থ কী? বিদ্যুতের অভাবে শিল্প কারখানার বারোটা বাজার উপক্রম হয়েছে-। কৃষি উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। লোডশেডিং নামক অভিনব কূট কৌশল এর কারণে নাগরিক জীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে। বিদ্যুৎ নামক নৌকার হালে নাই পানি পালে নাই হাওয়া। এক কথায় বিদ্যুতের বেহাল অবস্থার কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া কী সাধ্যের বাহিরে-? সরকারের দূরদর্শিতার অভাব রয়েছে কী? জনগণ জানতে চায় নিত্য লোডশেডিং আর কতকাল-? আমি বলবো – লোডশেডিং নাকি অভিনব কূট কৌশল”।
মিয়া মো: সা’দী, বি,এস,এস
শিক্ষক (অব:)
তথ্য ও গবেষনা- সম্পাদক
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা- আওয়ামীলীগ
মোবা: ০১৯০৯-২২৭৬৭৭




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com