শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::

যমুনা সার কারখানা থেকে জমাট বাঁধা নিন্মমানের সার রিপ্যাকিং করে সরবরাহের অভিযোগ, লোকসানের মুখে ডিলাররা

এম এ কাশেম জামালপুর :
  • আপডেট সময় রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

যমুনা সার কারখানায় বিসিআইসির আমদানীকৃত শত শত মেট্রিক টন ইউরিয়া সার জমাট বেঁধে গেছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে খোলা আকাশের নীচে থাকা বিপুল পরিমাণ সার জমাট বেঁধে গুনগতমান নষ্ট হচ্ছে। জমাট বাঁধা এসব সার ট্রাক্টর দিয়ে পিষে এবং হাতুড়ি দিয়ে ভেঙ্গে রিপ্যাকিং করে ডিলাদের চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে লোকসানের মুখে সাধারণ ডিলাররা। টুকরো টুকরো এই সার ব্যবহারে ফসলেও ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। কর্তৃপক্ষ রিপ্যাকিং করা নিন্মমানের এই সার সরবরাহ বন্ধ না করলে কারখানা থেকে সার উত্তোলন বন্ধ করতে বাধ্য হবেন বলেও জানান তারা। তবে আমদানীকৃত ইউরিয়া সারে গুনগতমান সঠিক রয়েছে দাবি করে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুদীপ মজুমদার বলেছেন, কিছু সার জমাট বেঁধে গেছে সেগুলো ভেঙ্গে রিপ্যাকিং করে ডিলারদের মাঝে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই সার ব্যবহারে ক্ষতির কোন আশঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি। জানা গেছে ২০১৮ সালের শেষ দিকে ভয়াবহ এক অভিকান্ডে যমুনার সার কারখানার গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ পুড়ে কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এক বছরেরও অধিক সময় কারখানার উৎপাদন বন্ধ থাকায় মজুদ সংকটে পড়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ। জামালপুর, শেরপুর ও টাঙ্গাইল ছাড়াও উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার কৃষকদের সার সরবরাহের লক্ষ্যে বিসিআইসির আমদনীকৃত সার যমুনা সার কারখানায় মজুদ এবং এখান থেকে কারখানার কমান্ড এরিয়ার ১৯ জেলার ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে সরবরাহ করা। কারখানার একাধিক সুত্র ও ডিলাররা জানিয়েছে, আমদানী করা বিপুল পরিমাণ এই সার রাখার জন্য বাফার গোডাউন না থাকায় এক বছরেরও অধিক সময় যমুনা সার কারখানার ভিতরে এবং বাইরে খোলা আকাশের নীচে রাখা হয় এই সার। দীর্ঘ এক বছরের অধিক সময় এসব সার রোদে পুড়ে এবং বৃষ্টিতে ভিজে জমাট বেঁধে গুনগতমান নষ্ট হয়ে যায়। কারখানা কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে এই বিপুল পরিমাণ সার জমাট বেঁধে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন করাখানা কর্তৃপক্ষ। আর দায় এড়াতে জমাট বাঁধা সার ট্রাক্টর দিয়ে পিষে এবং হাতুড়ি দিয়ে ভেঙ্গে রিপ্যাকিং করে ডিলারদের কাছে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। ডিলারদের অভিযোগ, পাথরের ন্যায় শক্ত জমাট বাঁধা আমদানীকৃত এই ইউরিয়া সার রিপ্যাকিংকারী ঠিকাদার সঠিকভাবে রিফাইন না করে ছোট ছোট টুকরোসহ রিপ্যাকিং করে কারখানা কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ ডিলারদের যমুনার উৎপাদিত ১০ মেট্রিক টন সারের সাথে ২ মেট্রিক টন জমাট বাঁধা রিপ্যাকিং করা নিন্মমানের সার নিতে বাঁধ্য করেন। এতে ব্যবসাযিক ক্ষতির মুখে পড়েন তারা। শুধু তাই নয় এই ইউরিয়া সার যেসব টুকরো জমিতে ব্যবহার করা হচ্ছে তা ফসলের জন্য ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। তবে জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেছেন, বিসিআইসি কর্তৃক আমদানীকৃত যমুনা সার কারখানায় যে সার রক্ষিত রয়েছে, তার কিছুটা জমাট বাঁধলেও গুনগত মান ভাল রয়েছে। যদি কোন বস্তায় জমাট বাঁধা ছোট ছোট টুকরো থেকে থাকে তাহলে সেগুলো গুড়া করে ব্যবহারের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেন তিনি। এই সার ব্যবহারে ফসলের কোন ক্ষতির সম্ভবনা নাই। কিন্তু জমাট বাঁধা সার ফসলে ব্যবহার করা যাবে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এবং উত্তরবঙ্গের একাধিক সার ডিলার বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের আমদানীকৃত জমাট বাঁধা রিপ্যাকিং করা নিন্মমানের এসব সার সরবরাহ বন্ধ করা না হলে কারখানা থেকে সার উত্তোলন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন তারা। ডিলাদের নিম্নমানের সার সরবরাহের অভিযোগের বিষয়ে মুঠো ফোনে যমুনা সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুদীপ মজুমদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি আমদানীকৃত যে সার ডিলারদের সরবরাহ করা হচ্ছে তার গুনগতমান সঠিক রয়েছে বলে দাবি করে এই প্রতিদককে বলেন, কিছু সার জমাট বেঁধে গেছে। তা রিপ্যাকিং করে ডিলারদের সরবরাহ করা হচ্ছে। এই সার ব্যবহারে কোন ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে জানান তিনি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com