স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা হচ্ছে, প্রতিদিনই সংক্রমণ বাড়ছে। এটা যেমন ঠিক, তেমনি ডেঙ্গু চিকিৎসা নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগ বা সমালোচনা করতে পারেনি। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ডেঙ্গুর চিকিৎসা সফলভাবেই দেওয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের কাজটি স্থানীয় সরকার, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, দেশের নাগরিকসহ অন্যদের দায়িত্ব।
গতকাল রোববার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লু’তে আয়োজিত ডেঙ্গুর নতুন গাইডলাইন প্রকাশ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় জাহিদ মালেক বলেন, আমার মন্ত্রী থাকার সময়ে প্রথমে ২০১৯ সালে ডেঙ্গু পেয়েছিলাম। সেবার সবাই মিলেমিশে ডেঙ্গু মোকাবিলা করেছি। তখনও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমালোচনা থাকলেও চিকিৎসা নিয়ে কোনো সমালোচনা হয়নি। এরপর করোনাভাইরাস আসলে একটি ট্রিটমেন্ট প্রটোকল করে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। সারা দেশেই এটিকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ট্রিটমেন্ট প্রটোকল ভালো ভূমিকা রেখেছে। আমাদের সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন ছিল না, অক্সিজেন প্ল্যান্ট ছিল না ও একটি মাত্র ল্যাব ছিল। বিশ্বে যখন যে ব্যবস্থা প্রয়োগ হয়েছে, আমরা সেটিও করেছি এবং সর্বোপরি সফলতা লাভ করেছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনায় এ পর্যন্ত আমাদের দেশে ২৯ হাজার মানুষ মারা গেছেন, ভারতে মারা গেছেন ৫ লাখ, আমেরিকায় ১২ লাখ। ইউরোপে প্রতি দশ লাখে প্রায় তিন হাজার লোক মারা গেছেন। করোনা নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর গাইডলাইন ফলো করে আমরা সফল হয়েছি।
করোনার টিকা বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকার ব্যাপারেও আমরা সফল হয়েছি। সারা দেশের মানুষকে ৪০ হাজার কোটি টাকা মূল্যের টিকা বিনামূল্যে দিয়েছি। টিকা নিয়ে পৃথিবীর কম দেশই এতো টাকা খরচ করেছে। এছাড়া, সফলতার সঙ্গে ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল করেছি। যদিও শুরুতে আমরা চিকিৎসাপদ্ধতি ভালোভাবে জানতাম না, তবুও চিকিৎসা দিয়ে করোনা মোকাবিলা করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, এখন আবার ডেঙ্গু দেখা দিয়েছে। পুরুষ, নারী, শিশু, যুবক সবাই আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ না নেওয়ার কারণে অনেকে তিন দিনের মধ্যেই মারা যাচ্ছেন। হাসপাতালে যেতে দেরি করায় মৃত্যুর সংখ্যা একটু বেশি হচ্ছে। তবে সময়ের প্রয়োজনে আগের গাইডলাইনটি নতুন করে সাজানো হয়েছে। নতুন গাইডলাইনে আশা করি ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসবে। সে বিষয়ে সব ডাক্তার-নার্স ও টেকনিশিয়ানরা কাজ করছেন। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে করোনার ধাক্কা ও যুদ্ধ সবমিলিয়ে আমরা বড় একটি ধাক্কা খেয়েছি। এখন আবারও ডেঙ্গু সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। শুধু যে আমাদের দেশেই ডেঙ্গু হচ্ছে তা নয়, থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই দেখা দিয়েছে। আমাদের থেকে তাদের বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হচ্ছে। মন্ত্রী আরও বলেন, চিকিৎসার মান বৃদ্ধি করতে সারা দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমরা চাই, ডাক্তারদের উপস্থিতি ও যন্ত্রপাতিগুলো যেন সচল থাকে। অনেক সময় আলট্রা-ইকো মেশিনগুলো নষ্ট থাকে, যে কারণে রোগীরা চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে চলে যায়। যে সমস্ত সরকারি হাসপাতালগুলোতে মেশিন নেই, আমাদের জানালে আমরা দিয়ে দেবো। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালগুলো সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে।