শরীর ভিতর থেকে সুস্থ রাখতে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, ফাইবার পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রয়োজন। রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ানো থেকে হাড়ের যতœ নেয়া, হরমোনের ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণ করা থেকে সামগ্রিক সুস্থতা বজায় রাখা— পুষ্টিকর উপাদানের বিকল্প নেই।
আমেরিকার ‘ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস’-এর তথ্য অনুসারে, শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাব ঘটলে শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দেয়। সুষম খাবারের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পুষ্টি শরীরে প্রবেশ করে। কারও ক্ষেত্রে পুষ্টির ঘাটতি পড়লে আলাদা করে প্রয়োজন পড়ে পরিপূরকের। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, শরীর সুস্থ রাখতে মোট ১৩টি ভিটামিনের প্রয়োজন আছে। বিভিন্ন ভিটামিনের কার্যকারিতা ভিন্ন। ভিটামিনের ঘাটতিই বিভিন্ন অসুস্থতার কারণ হয়ে ওঠে। সাধারণ ভাবে ভিটামিনের ঘাটতি হলে ক্লান্তি, দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, অস্থিরতার মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন উপসর্গের মাধ্যমে ভিটামিনের ঘাটতি প্রকাশ পেতে থাকে।
মাড়ি থেকে রক্তপাত:শরীরের ভিটামিন সি-র ঘাটতি তৈরি হলে মাড়ি থেকে রক্ত বেরোয়। শরীরের যে কোনও ক্ষত দ্রুত সারাতে এই ভিটামিন দারুণ কার্যকরী। শরীরে কোষের ক্ষয় রোধ করতে ভিটামিন সি অত্যন্ত জরুরি। রোজের খাবারে তাই ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে রাখুন। শীতকাল আসছে। এই সময়ে কমলালেবুর বাজারে আসে। ভিটামিন সি পেতে রোজ একটি করে কমলালেবু খান। এ ছাড়াও স্ট্রবেরি, বাঁধাকপি, টম্যাটোর মতো খাবার খাওয়া জরুরি।
চুল পড়া এবং নখ ভেঙে যাওয়া: এই দু’টি সমস্যা নিয়ে নাজেহাল অনেকেই। পর্যাপ্ত যত্নের অভাবে তো বটেই। সেই সঙ্গে শরীরে ভিটামিন বি ৭-এর অভাব দেখা দিলে এই সমস্যাগুলি দেখা দিতে পারে। ভিটামিন বি৭-এর আরও একটি নাম হল ‘বায়োটিন’। শরীরে বায়োটিনের অভাব ঘটলে নখ ভেঙে যাওয়া এবং চুল ঝরার মতো সমস্যা দেখা দেয়। শরীরে ভিটামিন বি৭-এর অভাব মেটাতে রোজের পাতে রাখুন ডিম, মাছ, পালংশাক, ফুলকপি, কলার মতো কয়েকটি খাবার।
মুখের আলসার: ভিটামিন বি-এর পরিমাণ শরীরে কমে গেলে মুখে আলসার হয়। ভিটামিন বি১, বি২ এবং বি৬-এর ঘাটতি এই আলসারের কারণ। মুখের আলসার নিয়ে প্রথম থেকে সতর্ক না থাকলে পরে বিপদ বাড়তে পারে। ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি পূরণে ভরসা রাখতে পারেন বাদাম, সবুজ শাকসব্জি, দুগ্ধজাতীয় খাবারে।
রাতে চোখে কম দেখা:এমন অনেকেই আছেন যারা রাতে চোখে একটু অস্পষ্ট দেখেন। রাতে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন অনেকে। মূলত ভিটামিন এ-র অভাবে এই রোগ হয়। শরীর সুস্থ রাখতে ভিটামিন এ-র ভূমিকা অপরিহার্য। তাই সুস্থ থাকতে গাজর, দুগ্ধজাতীয় খাবারের মতো ভিটামিন এ-সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান।