গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম এখনই বাড়ছে না
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেড়েছে বিদ্যুতের দাম পাইকারি পর্যায়ে ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বেড়েছে। তবে বিদ্যুতের দাম পাইকারি পর্যায়ে বাড়লেও গ্রাহক পর্যায়ে এখনই বাড়ছে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের প্রতি ইউনিট ৫ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ২০ পয়সা নতুন দর ঘোষণা করল বিদ্যুতের বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়ানোর আবেদন করবে বিতরণ কোম্পানিগুলো। এর আগে গত ১৩ অক্টোবর বিদ্যুতের পাইকারি দাম অপরিবর্তিত রেখে সিদ্ধান্ত দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। তারও আগে গত ১৮ মে কোম্পানিগুলোর পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের প্রস্তাবিত দামের ওপর গণশুনানি করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বিইআরসি আইন অনুযায়ী গণশুনানির পর ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে আদেশ দেয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে অনুযায়ী ওইদিন ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এ নিয়ে গত এক যুগে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৯ বার। এ সময় পাইকারি পর্যায়ে ১১৮ শতাংশ ও গ্রাহক পর্যায়ে ৯০ শতাংশ বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। সবশেষ দাম বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যা ওই বছরের মার্চ থেকে কার্যকর হয়। তখন পাইকারি পর্যায়ে ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ বাড়ানো হয় দাম। একই সময়ে খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ানো হয় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯.৯২ শতাংশ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি। বিদ্যুতের প্রতি ইউনিট ৫.১৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬.২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ ইউনিটপ্রতি দাম বেড়েছে এক টাকা ৩ পয়সা। আগামী ১লা ডিসেম্বর থেকে নতুন এই দাম কার্যকর হবে। গতকাল সোমবার কাওরানবাজারের কার্যালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিইআরসির চেয়ারম্যান আবদুল জলিল। বিইআরসির এক কর্মকর্তা জানান, গতবার পিডিবি বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দিয়েছিল, তাতে বেশ কিছু ত্রুটি ছিল। এরমধ্যে তথ্য ঘাটতি ছিল একটি বড় বিষয়। এছাড়া পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়লে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দামের ওপর কী প্রভাব পড়বে, তারও কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি পিডিবি। এজন্য তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তখন দাম বাড়ানো হয়নি। কর্মকর্তারা বলেন, গত বার পিডিবির যেসব তথ্যে ঘাটতি ছিল, তারা তা পূরণ করে এই রিভিউ আপিল করে। এখন এটি যাচাই-বাছাই করে সোমবার বিদ্যুতের নতুন দাম ঘোষণা দেয়া হয়। প্রসঙ্গত, পিডিবি গত ১২ই জানুয়ারি বিদ্যুতের পাইকারি দাম পুনর্র্নিধারণের প্রস্তাব জমা দেয়। এরপর ১৮ই মে তাদের প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি হয়েছে। এরপর ১৩ই অক্টোবর দাম না বাড়ানোর ঘোষণা দেয় কমিশন। তবে কমিশন সে সময় এই প্রস্তাবের বিপরীতে প্রস্তাবের বিষয়ে রিভিউ করার সুযোগ রেখে দেয় পিডিবির জন্য। আর সেই সুযোগটিই এখন নিলো পিডিবি। গত সোমবার রিভিউ আপিল করে তারা। এক সপ্তাহের যাচাই-বাছাই শেষে কাল সোমবার নতুন দাম ঘোষণা করে বিইআরসি। চলতি বছরের ১৮ই মে পিডিবি গণশুনানিতে পাইকারি বিদ্যুতের শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় এবং বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি ভর্তুকি না দিলে ৫৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল। আর ভর্তুকি দিলে বাড়ানোর প্রয়োজন নেই বলেও তারা সুপারিশ করে। বিইআরসি সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুতের পাইকারি দাম ইউনিটপ্রতি ৫ টাকা ১৭ পয়সা নির্ধারণ করেছিল।
গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম এখনই বাড়ছে না: বিদ্যুতের দাম পাইকারি পর্যায়ে বাড়লেও গ্রাহক পর্যায়ে এখনই বাড়ছে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এনিয়ে জনগণের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। আজ দুপুরে সচিবালয়ে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। বিদ্যুৎপ্রতিমন্ত্রী বলেন, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় সারা পৃথিবীতেই বিদ্যুৎ-জ্বালানির প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্ট করতে হচ্ছে। গ্রাহক পর্যায়ে এখনই দাম বাড়ছে না। দাম বাড়বে কি না, সেটাও নির্ভর করতে মাঠপর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতে। সবকিছু যাচাই বাছাই করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, বিইআরসি তাদের মতো করে বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে তারা ঘোষণা দিয়েও দাম বাড়ায়নি। সবকিছু তারা যাচাই বাছাই করেই করেছে। এর আগে সকালে বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯.৯২ শতাংশ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি।
বিদ্যুতের প্রতি ইউনিট ৫.১৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬.২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ ইউনিটপ্রতি দাম বেড়েছে এক টাকা ৩ পয়সা। আগামী ১লা ডিসেম্বর থেকে নতুন এই দাম কার্যকর হবে। আজ কাওরানবাজারের কার্যালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিইআরসির চেয়ারম্যান আবদুল জলিল।