চলতি বছর ভোলার ৭ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আখ আবাদ হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে জোয়ারের পানিতে আখক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের। বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আখ আবাদ করে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চর রমেশ গ্রামের আখচাষি আবু তাহের বলেন, গত ৩০ বছর ধরে আমি আখ চাষ করছি। প্রতি বছর আখ চাষ করে অনেক টাকা লাভ হয়েছে। কিন্তু এ বছর লাভের চেয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে। একই গ্রামের আখচাষি আবুল কাসেম জানান, এ বছর দুই একর জমিতে অনেক স্বপ্ন নিয়ে আখ চাষ করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতি জোয়ারের পানিতে আমার আখক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমার ৬০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে।
রাজাপুরের আখচাষি খোরশেদ আলম জানান, গত কয়েক বছর আখ চাষে অধিক লাভবান হওয়ায় এ বছর ভোলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় আখচাষির সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু লোকসান হওয়ায় আগামী বছর আখচাষির সংখ্যা অনেক কমে যাবে। দৌলতখান উপজেলার আখচাষি মো. মিলন বলেন, বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এ বছর আখ চাষ করেছিলাম। জোয়ারের পানিতে ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এখন ঋণের টাকা পরিশোধ কীভাবে করবো তা নিয়ে চিন্তিত। ভোলা সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ব্যাংকের হাট এলাকার আখচাষিরা জানান, ঋণের টাকা পরিশোধের চাপে এ বছর বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে থাকতে হবে। এ অবস্থায় সরকার যদি কোনো সহযোগিতা করে তাহলে আমরা কিছুটা উপকৃত হবো।
ভোলা শহরের নতুন বাজার এলাকার আখের পাইকারী আড়তদার মো. ইয়াছিন মিয়া জানান, জোয়ারেরর পানিতে আখ নষ্ট হওয়ায় এ বছর বাজারে আখের পরিমাণ অনেক কম। বাজারে আখের অনেক চাহিদা ও দামও ভালো। কিন্তু আখের চাহিদা পূরণ করতে পারছি না। যে কারণে এ বছর পাইকারী আড়তদারদের লোকসান গুনতে হবে বলে মনে হচ্ছে। ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ হরলাল মধু বলেন, এবার আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ বেশি হয়েছে। জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রণোদনা আসলে আমরা কৃষকদের মাঝে বিতরণ করবো। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, এ বছর ভোলায় ৭৪০ হেক্টর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে আবাদ হয়েছে ৭৬১ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১ হেক্টর জমিতে আখ আবাদ বেশি হয়েছে।