আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। জাতিসংঘ ২০২২ সালের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘নারীর সুস্বাস্থ্য ও জাগরণ ’। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ১৯৮১ সালে লাতিন আমেরিকায় নারীদের এক সম্মেলনে ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালে ভিয়েনায় বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলন দিবসটি স্বীকৃতি পায়। ১৯৯৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর জাতিসংঘ দিবসটি পালনের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশ ১৯৯৭ সাল থেকে দিবসটি পালন করে আসছে। জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন নারী তাদের জীবনে নির্যাতনের মুখোমুখি হয়েছেন। কভিড-১৯ মহামারি, মানবিক সংকট, সংঘাত ও জলবায়ু বিপর্যয়সহ সংকটের সময় এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। মহামারির সময় ১৩ দেশের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে জাতিসংঘের নারীবিষয়ক এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতি তিনজনের দুইজন নারী জানিয়েছেন যে তারা বা তাদের পরিচিত একজন নারী সামান্য হলেও সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছেন এবং তাদের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আরো অবাক করা বিষয় হলো, প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন নারী জানিয়েছেন যে ভুক্তভোগী সাহায্যের জন্য পুলিশের কাছে যাবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কর্তৃক পরিচালিত ২০১১ সালের জরিপ মতে, শতকরা ৮৭ ভাগ নারী স্বামীর মাধ্যমে কোনো না কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার হন।
এই দিবস পালনের পেছনে রয়েছে এক হৃদয়স্পর্শী ঘটনা। ১৯৬০ সালের ২৫ নভেম্বর লাতিন আমেরিকার দেশ ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন করতে গেলে প্যাট্রিয়া, মারিয়া তেরেসা ও মিনার্ভা মিরাবেল নামের তিন বোনকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের স্মরণে ১৯৮১ সাল থেকে এই দিনটি আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ দিবস হিসেবে পালিত হয়। এই দিবস পালনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করা। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিবছর ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্রতিরোধ পক্ষ উদযাপনে নানা কর্মসূচি নেয়। এ বছরও এ উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা নারী নির্যাতন বন্ধ ও সচেতনতা সৃষ্টিতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।