সম্প্রতি ‘সাপ্তাহিক অপরাধ ঘোষনা’, ‘আমাদের সময়’, ‘সংবাদ’ এবং অনলাইন ‘বাংলার প্রভাতী’ সহ কয়েকটি পত্রিকায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের চট্রগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক তৌহিদুল আনোয়ারের ব্যাক্তিগত আক্রোশ সম্বলিত কতিপয় মিথ্যা সংবাদ ও অপপ্রচার চলছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। দেখা গেছে, এসব সংবাদ একই ব্যক্তির ড্রাফট করা। সংবাদে অনিয়ম-দুর্নীতির কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য না দিয়ে কেবল কুৎসিত ভাষায় গালিগালাজই করা হয়েছে। ফাউন্ডেশনের একজন কর্মচারীর সরকারী চাকরী বিধি লংঘন করে বয়স জালিয়াতি করে ৩৩ বছর বয়সে চাকুরী নেয়া, সাংবাদিক পরিচয়ে অনৈতিক কাজ করা, সরলমনা ইমামদের চাকরী দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নেয়া এবং টাকা ফেরত চাইলে উল্টো চাদাবাজির মামলায় জেলে দেয়া, অফিসে না এসে মাস শেষে বেতন নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া শুরু হলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই কর্মচারী পরিচালকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করা হয়েছে বলে দাবী করছেন তিনি। সাংবাদিকের সাথে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমাকে ছাত্রজীবনে জামাতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম বলে বর্ণনা করা হয়েছে। কোথায়, কোন কমিটিতে, কোন পদে ছিলাম এমন কোন তথ্য নেই। এটি একটি মনগড়া কথা এবং কাল্পনিক কথা। বি.এন.পি. আমলে মেজর রফিকুল্লাহর ভাগিনা হওয়ার সুবাদে ১৯৯৬ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে চাকুরী পেতে সক্ষম হন বলে যে তথ্য দেয়া হয়েছে তা ডাহা মিথ্যা। আবার ভিন্ন এক প্যারায় বলা হয় দেলোয়ার হোসেন সাঈদী এবং তামিরুল মিল্লাতের জয়নুল আবেদীনের পৃষ্ঠপোষকতায় চাকুরী পাই। মূলতঃ এ মানুষ গুলোর সাথে আমার কোন পরিচয় নেই। আর আমি কখনো তামিরুল মিল্লাত কিংবা অন্য কোন মাদ্রাসায় পড়িনি। আমি ১৯৯৬ সালে ২ অক্টোবর উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রথম হয়ে চাকুরীতে যোগদান করি। সে সময় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন বোর্ড অবগভর্ণরস-এর চেয়ারম্যান ছিলেন মাওলানা নূরুল ইসলাম। কেবল নূরুল কবির নামক একজন ফিল্ড সুপার ভাইজারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। কারণ উক্ত ব্যক্তি কর্মস্থলে উপস্থিত থাকেননা। তিনি কাজ না করেই বেতন নিতে চান। উক্ত ব্যক্তিকে যে উপজেলাতেই পদায়ন করা হয় সেখানকার উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য তাকে প্রত্যাহারের জন্য বলেন। কখনো কখনো স্থানীয় সংসদ সদস্য তাকে প্রত্যাহারের জন্য ডিও লেটারও প্রদান করেন যা অত্র কার্যালয়ে সংরক্ষিত আছে। সরকারী চাকুরী করেও তিনি ব্যবসা বাণিজ্যে রত থাকেন এবং নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন। তিনি বয়স জালিয়াতি করে ৩৩ বছর বয়সে চাকুরী নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে নিরীহ ইমামদের চাকুরী দেয়ার নাম করে অর্থ আদায়ের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। রাঙ্গামাটিতে থাকাকালীন পাহাড়ী বাঙ্গালী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তাও মিথ্যা। আমার কর্মকালীন সময়ে রাঙ্গামাটিতে কোন সাম্প্রদায়িক হানাহানি, মারামারী কিংবা কাটাকাটি হয়নি। কেউ আহত অথবা নিহত হয়নি। থানায় কোন জি.ডি এন্ট্রি অথবা মামলা হয়নি। পত্রিকায় কোন খবর আসেনি। রাঙ্গামাটির তৎকালীনমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এবং জনসংহতি নেতা সন্তু লারমার সাথে আমার কোন দ্বন্দ হয়নি, বরং সুসম্পর্ক ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোরশেদ আলম নামক আমার এক তথাকথিত সহপাঠির উদ্ধৃতি দিয়ে আমি একটি মেয়ে ঘটিত বিষয় নিয়ে যে কুরুচিপূর্ণ কথা বলা হয়েছে তা অত্যন্ত মর্যাদা হানি কর। চাকরী থেকে অবসরের সময় ঘনিয়ে আসছে। অথচ বিশ^বিদ্যালয়ের জীবন টেনে অশ্লিল ও কুরুচিপূর্ণ কথা বলা হয়েছে। সিকিশতাব্দীর বেশী সময় আগে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লেখা করেছি। সে সময় মোরশেদ আলম নামক আমার কোন সহপাঠি ছিলনা। এ ধরনের মিথ্যা এবং কুরুচি পূর্ণ কথা কেবল বিকৃত রুচির মানুষের দ্বারাই লেখা সম্ভব। প্রতিবেদকের ঐ সময় জন্ম হয়েছিল কিনা তা আমার জানা নেই। চাকুরী জীবনে আমি সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা থেকে জনসংযোগ কর্মকর্তা না হয়ে সরাসরি উপপরিচালক হয়ে যাওয়ার যে গল্প সাজানো হয়েছে তা অজ্ঞতারই বহিঃ প্রকাশ। জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে আসার পর আমি টাকার কুমিরে পরিণত হয়েছি বলে তথ্য পরিবেশিত হয়েছে। জমিয়তুল ফালাহ সরকারী বিধিবিধান অনুযায়ী পরিচালিত হয়। সেখানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সকে ভাড়া প্রদান কালে বিপুল অংকের ঘুষ লেন দেনের অভিযোগ আনা হয়। জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে আমি এসেছি ১ বছর হলো। অথচ ম্যাক্সকে মাঠ ভাড়া দেয়া হয়েছে ৭ বছর আগে (২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে)। এখানে ঘুষ লেন দেন হয় কিভাবে? ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সকে চুক্তি নবায়নের সময় মাত্র ১% ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে মিথ্যা তথ্য পরিবেশিত হয়েছে। ম্য্যাক্সকে সর্বশেষ চুক্তি নবায়নর সময় ১০% ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। কখনো কখনো ভাড়া ১৫% পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছিল। সংবাদে মাঠের ভাড়া, ম্যাক্স-এর ভাড়া আত্মসাতের কল্পকাহিনী প্রচার করা হয়। অথচ এখানে যারাই মসজিদের ভাড়াটিয়া সবাই ব্যাংক টু ব্যাংক লেন দেন করেন। এখানে ক্যাশ লেন দেনের কোন সুযোগ নেই। তাই টাকা আত্মসাতের ও কোন সুযোগ নেই। বিষয়গুলো প্রধান কার্যালয় থেকে প্রতিবছর অডিট হয়। তাই আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ইসলামিক ফাউন্ডেশন মনিটরিং কমিটি, জমিয়তুল ফালাহ ও আন্দর কিল্লা মসজিদ কমিটি, মুসল্লি কমিটির সাথে আমার দ্বন্দ সার্বক্ষণিক বলে তথ্য পরিবেশিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মনিটরিং কমিটি বলতে কোন কমিটি নেই। জমিয়তুলফালাহ ও আন্দরকিল্লা মসজিদ কমিটি বলতে ও কোন কমিটি নেই। এ মসজিদ দ’ুটো মসজিদ ইসলামিক ফাউন্ডেশন সরাসরি রাজস্ব অর্থে পরিচালনা করে থাকে। এ ধরনের মিথ্যা সংবাদ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাবমর্যাদা বিনষ্ট করেছে, পরিচালক হিসেবে সামাজিক মান মর্যাদা ক্ষুণœ হয়েছে বলে আক্ষেপ পোষণ করেন করেন তৌহিদুল আনোয়ার। এমন ঘৃণিত মিথ্যা অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সচেতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।