ফরিদগঞ্জে রোপা আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। আমন ধানের সোনালী শীষে ভরে গেছে কৃষকের ক্ষেত। বাতাসে ঢেউ তুলছে সোনালী ধানের শীষ। ধান কাটা-মাড়াই কাজে কৃষকের পাশাপাশি ব্যস্ততা বেড়েছে দিন মজুরদের। ফরিদগঞ্জ দেশের কয়েকটি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও ধান উদ্বৃত্ত উপজেলার মধ্যে অন্যতম। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি রোপা আমন মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টি ও খরার কারনে আমন চারা লাগাতে দেরি হলেও পরবর্তী সময়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। এছাড়া সংসারের খোরাকী, গরুর খাদ্য হিসেবে খড়ের চাহিদা বৃদ্ধি ও ধানের দাম ভালো থাকায় লাভের স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা। কৃষক মিজান জানান, আগাম জাতের হাইব্রীড ধান কাটা শুরু করে দিয়েছে অনেক আগেই। এসব ধানের ফলনও ভালো পাচ্ছেন। উপজেলার দেইচর গ্রামের কৃষক কাদির জানান, আমন ধান প্রতি কাঠায় ২/৩ মন করে ফলন পাচ্ছি। প্রতি মন ধান ১ হাজার ৫০ থেকে ১১’শ টাকায় বিক্রি করা যায়। এতে তারা খুশি। তবে কৃষকদের দাবি, নিত্য প্রয়োজনীয় সব জিনিসের দাম যেভাবে বাড়ছে, সেই অনুপাতে ধানের দাম আরো বাড়ানো উচিত। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা জানান, আমন ধান কেটে ওই জমিতে বাড়তি ফসল হিসাবে সরিষা চাষ, আলু, বেগুনসহ শীতকালীন সবজি আবাদ করতে পারবে কৃষকেরা। যা পরবর্তী সময়ে বোরো ধান চাষের অর্থের জোগান হয় কৃষকের। তাই প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে আগাম জাতের রোপা আমন ধানের চাষ। ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় এ বছর প্রায় ৮ হাজার ৩ শত ২৮ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু চাষ করা হয়েছে ৮ হাজার ৩ শত ৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৯ হাজার ৫ শত ৭৯ মেট্রিক টন। কিন্তু তার চেয়েও আরো বেশি ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আশিক জামিল মাহমুদ বলেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদন হয়। প্রত্যেক বছর আমন মৌসুমে কৃষকদের যাবতীয় পরামর্শ ও সেবা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে প্রদান করা হয়। এ বছরও দেয়া হয়েছে। আমন রোপনের পর পর পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না থাকায় কৃষকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা ছিল। কিন্তু পানির প্রয়োজনের সময় কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সেই চিন্তার ভাঁজ কেটে কৃষকদের মনে উৎসবের আমেজ বসেছে। এবং গত কয়েক মাস আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে ধান অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুরে আলম বলেন, ফরিদগঞ্জে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশি ধান উৎপন্ন হবে। কারণ অন্যান্য বছর অতিবৃষ্টির ফলে নিচু এলাকায় আমন ধান চাষ করা যেত না। কিন্তু এবছর নিচু এলাকাসহ উপরের বিটা সহ অনেক বেশি জমিতে আমনের চাষ করা হয়েছে।