দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে কোনো অপশক্তিই কিছু করবে পারবে না বলে মনে করেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে নেওয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশে চলমান রাজনৈতিক উত্তাপ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে র্যাব ডিজি বলেন, আমি কোনো রাজনৈতিক উত্তাপ দেখি না। রাজনীতিতে সরকারি দল থাকবে, বিরোধীদল থাকবে। এটাকে উত্তাপ বলে মনে হয় না। বরং রাজনীতির স্বাভাবিক গতি বলে মনে করি। এটা হবেই, যেহেতু সামনে নির্বাচন। তবে এটাকে কেন্দ্র করে অন্য কোনো শক্তি কিছু করতে পারবে বলে আমি মনে করি না। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে মানুষের মধ্যে এক ধরনের আশঙ্কা ও সংশয় রয়েছে, এ বিসয়ে র্যাব ডিজি বলেন, মানুষের মধ্যে তো প্রতিক্রিয়া আছেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কত কথাই আসে, সবই কি সত্যি? মানুষ তো ভাবতেই পারে। আমাদের চিন্তার স্বাধীনতা আছে, কথা বলার স্বাধীনতা আছে। আমি আমার মতো বলতেই পারি, ভাবতেই পারি। তিনি বলেন, তবে এটার জন্য কোনো থ্রেট আছে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের সবাই মিলে কাজ করলে দেশের জন্য কোনো অপশক্তি কিছু করতে পারবে বলে মনে করি না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা পুরোপুরি সক্ষম।
অপর এক প্রশ্নে এম খুরশীদ হোসেন বলেন, আমরা আত্মসমালোচনায় বিশ্বাস করি। আমি অবশ্যই আমার দুর্বলতা থাকলে স্বীকার করবো। দুই জঙ্গি পালিয়ে গেছে, এটা আমাদের ব্যর্থতা। দুজন জঙ্গি চলে গেছে এবং হয়তো তারা দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করেই গিয়েছে। তাদের এখনো ধরতে পারিনি, কিন্তু আমাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছি। র্যাব ডিজি আরও বলেন, জঙ্গি তৎপরতা অব্যাহত আছে, কিন্তু আমরাও আমাদের কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছি। পাহাড়ি এলাকায় যে একটা জঙ্গি সংগঠনের প্রশিক্ষণ চলছিল, সেটা আমরা ক্যাপচার করে ফেলেছি। সুতরাং তারা তেমন কিছু করার সুযোগ পাবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না। এদিকে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নিরাপত্তা প্রস্তুতি বিষয়ে তিনি বলেন, সম্মেলন উপলক্ষে এখানে বিভিন্ন পয়েন্টে র্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স, পেট্রোল পার্টি থাকবে। ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে সুইপিং করা হবে। বোম্ব ডিসপোজাল টিম, সাদা পোশাকে সদস্যরা মোতায়েন থাকবে এবং আমাদের কমান্ডো টিম প্রস্তুত থাকবে। অর্থাৎ যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য এবং সম্মেলনের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য র্যাব ফোর্সেস সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে।
নিরাপত্তার আশঙ্কা রয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আশঙ্কার কথা বলছি না। আমরা মনে করি ন্যাশনাল যে কোনো ইভেন্ট বা এ ধরনের সম্মেলন বা মিটিং গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে চিন্তাভাবনা করেই আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা চাই যে কোনো একটা অনুষ্ঠান যেন স্মুথলি হতে পারে। সবাই নিরাপত্তার সাথে আসবে এবং নিরাপদে চলেও যাবে। সম্মেলন ঘিরে যে কোনো ধরনের ঝামেলা এড়াতে এবং বহিরাগত কোনো অপশক্তি যেন বিশৃঙ্খলা করতে না পারে, এ দিকগুলো মাথায় রেখেই নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, এখানে যারা আসবেন তারা আমন্ত্রিত, সবাইকে কার্ড দেওয়া হয়েছে। কার্ড যাচাইয়ের কাজটা করবে মূলত এসবির ফোর্স। আর আমাদের যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে, আমাদের কাজ হচ্ছে আমন্ত্রিতদের সুইপ করা।