পটিয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি নিস্কাশন সেচ প্রকল্পের আওতায় খাল পুন:খননে অনিয়ম ও বিনা নোটিশে উচ্ছেদ করার অভিযোগ ওঠেছে। অধিগ্রহণ ছাড়াই বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি, খালের দুইপাড়ের গাছপালা ও মানুষের বসতঘর গুড়িয়ে দিয়ে খাল পুন: খননের কাজ চলছে। গত শনিবার সকালে উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের হরিণখাইন গ্রামের সাধারণ লোকজন ছাড়াও শতাধিক কৃষক এলাকায় বিক্ষোভ করেন। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে উপজেলার গরুলুডা, কেরেঞ্চা, চৌধুরী আহলায় ও জঙ্গলখাইন খালসহ প্রায় ৯ হাজার মিটার খাল পুন: খনন চলছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাবর-জামান (জেভি) কাজটি বাস্তবায়ন করছে। অভিযোগ ওঠেছে, খাল খননের নামে কৃষকের কৃষি জমি ছাড়াও বসতঘর থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। বর্তমান কয়েকটি পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। তারা আশ্রয় চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় শতশত একর কৃষি জমি বছরের পর বছর অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে। স্থানীয় কৃষকদের দাবির প্রেক্ষিতে উপজেলার আশিয়া, বড়লিয়া, কুসুমপুরা ইউনিয়নের প্রায় ৯ হাজার মিটার খাল পুন:খননের জন্য বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড উদ্যোগ নেয়। বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিস্কাশন সেচ প্রকল্পের আওতায় খাল খনন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা। কাজটির কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে বাবর-জামান (জেভি) নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। ২০২২ সালের ২৬ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে এ কাজ শুরু করা হয়েছে। এর মধ্যে খালের চওড়া ১৩.৫০ মিটার ও খালের গড় গভীরতা ৩.৫০ মিটার। উপজেলার হরিণখাইন গ্রামের গরুলুডা খালের পাড়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী মোছাৎ বিলকিস আকতারের বসতঘরটি গুড়ি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি জানিয়েছেন, তিনি এক মেয়ে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে খাল পাড়ে বসবাস করছেন। খাল খননের কথা বলে তার বসতঘরটি গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এভাবে কৃষক মো. আবু ছৈয়দ, কৃষক আবদুস শুক্কুর, হাজী হাবিবুর রহমান, কৃষক আবদুল নুরের বেশকিছু কৃষি জমি, গাছপালা কেটে খাল করা হয়েছে। পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকারিয়া ডালিম জানিয়েছেন, খাল ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে দীর্ঘদিন এলাকার কৃষি জমিগুলো অনাবাদি রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে খাল পুন: খননের কাজ শুরু হয়েছে। এতে করে কৃষক লাভবান হবে। তবে কৃষক ও সাধারণ মানুষের স্থাপনা গুড়িয়ে না দিতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে আমি নিজে অনুরোধ করেছি। কিন্তু কেন তারা মানুষের বসতঘর ও স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে তা আমি জানি না।