সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩১ অপরাহ্ন

ভারতে বিবিসির তথ্যচিত্র প্রদর্শন বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৩
নেড প্রাইস নরেন্দ্র মোদি

নরেন্দ্র মোদীকে মুসলিম গণহত্যার জন্য দায়ী করে প্রচারিত

গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে তৈরি বিবিসির তথ্যচিত্র সম্পর্কে মতামত না দিলেও ভারতে ওই তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করছে না। বৃহস্পতিবার সেই বার্তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস। মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা গোটা বিশ্বে মুক্ত গণমাধ্যমের পক্ষে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মাচরণের স্বাধীনতা মানুষের অধিকার। এই অধিকার গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে আমরা সব সময় এই বিশ্বাসকেই গুরুত্ব দিই। বিশ্বজুড়ে এই নীতি কার্যকর করে তোলার ওপর আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। ভারতের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য।’
এর আগে গত মঙ্গলবার বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোশ্চেন’ নিয়ে কোনো রকম মতামত দেওয়ার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়েছিল। তথ্যচিত্রের ভালো–মন্দ নিয়ে করা প্রশ্ন এড়িয়ে নেড প্রাইস যুক্তরাষ্ট্র-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবতারণা করে বলেছিলেন, তথ্যচিত্রে কী রয়েছে, সে বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে দুই দেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে যেসব অভিন্ন মূল্যবোধ ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রকে কাছাকাছি এনেছে, সেগুলো সম্পর্কে তিনি অবহিত। এসব মূল্যবোধই দুই দেশকে একসূত্রে গেঁথেছে। নেড প্রাইসের মন্তব্য থেকে বেশ বোঝা যাচ্ছে, তথ্যচিত্রে যা তুলে ধরা হয়েছে, সে বিষয়ে অভিমত না দিলেও সেটির প্রদর্শন বন্ধে ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত ও তৎপরতাকে যুক্তরাষ্ট্র মোটেই অনুমোদন করছে না। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রক্ষার খাতিরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও ওই তথ্যচিত্র নিয়ে তাঁর অভিমত জানাননি। সে দেশের সংসদে তিনি বরং বলেছেন, তথ্যচিত্রে সম্মাননীয় ব্যক্তির (নরেন্দ্র মোদি) চরিত্রায়ণ সম্পর্কে সহমত নন। ওই তথ্যচিত্রের প্রতিপাদ্য বিষয়, ২০০২ সালে গুজরাটে তিন দিনের নরসংহারের জন্য তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই দায়ী। বিবিসি বলেছে, পরিকল্পনামাফিক মুসলমান নিধনই মোদিকে পরবর্তীকালে দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে সাহায্য করেছে। প্রথম পর্বের পর মঙ্গলবার তথ্যচিত্রটির দ্বিতীয় পর্বও সম্প্রচারিত হয়। তাতে ২০১৪ সালের পর থেকে ভারতের মুসলমানদের সঙ্গে শাসক দল বিজেপির সম্পর্ক কেমন হয়েছে, কীভাবে উত্তরোত্তর বিষিয়ে উঠেছে, তা বিস্তারিতভাবে চিত্রিত। বিবিসির তথ্যচিত্র যাতে ভারতে প্রদর্শিত না হয়, সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইউটিউব ও টুইটারকে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ভারতে প্রদর্শন না করার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়। টুইটারকে বলা হয় তথ্যচিত্রের লিংক মুছে দেওয়ার জন্য। বিভিন্ন রাজ্যে প্রশাসনিক পর্যায়েও ব্যবস্থা গ্রহণের অলিখিত আদেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও দুই পর্বের ওই তথ্যচিত্র দেখানো হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে। তা নিয়ে কোথাও কোথাও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কেরালার প্রতি জেলায় সেটি দেখাতে তৎপর বামপন্থী দল ও কংগ্রেস। ওই রাজ্যে কংগ্রেসের একাংশ অবশ্য এর বিরোধী। দলের প্রবীণ নেতা এ কে অ্যান্টনির পুত্র অনিল এর প্রতিবাদে দল ত্যাগ করেছেন। রাজ্যে রাজ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংগঠন তথ্যচিত্র দেখানোর কর্মসূচি নিয়েছে। দিল্লিতে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ও জামিয়া মিলিয়ায় এ নিয়ে ধুন্ধুমার কা- হয়ে গেছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com