হাতে হ্যান্ড মাইক, বগলে ছাতা আর কাঁধে ঝুলানো ব্যাগ। হাট-বাজার, শহর-বন্দর তথা যেখানে মানুষের ভিড়, সেখানেই দাঁড়িয়ে হ্যান্ড মাইকে নামাজের আহ্বান জানান ৬২ বছর বয়সী মো. মোসলেম উদ্দিন প্রধান। তিনি এভাবে আট বছর ধরে পথে-প্রান্তরে ঘুরে ঘুরে মুসলমানদের নামাজের আহ্বান করে আসছেন। মোসলেম উদ্দিন প্রধান গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নে ভগবানপুর গ্রামের মৃত মহিম উদ্দিন প্রধানের ছেলে। তিনি আট বছর থেকে প্রতিদিন ঘুরে ঘুরে এভাবে মানুষকে নামাজের আহ্বান করেন।ছেলে-মেয়েসহ ৭ সন্তানের জনক মোসলেম। বয়স যখন ৪০, তখন পাটের ব্যবসা করে ভালো চলছিলো তার সংসার। এক সময় ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হন। এরপর জীবিকার তাগিদে রাজধানী ঢাকায় রিকশা চালাতেন। সেখানে তাকে নামাজের তাগিদ দিতেন মসজিদের মুসল্লিরা। এরপর শুরু করেন ৫ ওয়াক্ত নামাজ। সেই থেকে আর কখনো নামাজ মিস করেন না। আট বছরে আগে ঢাকা ছেড়ে ফিরে আসেন বাড়িতে। নিজের টাকায় কেনেন ব্যাগ ও হ্যান্ড মাইক। প্রত্যেক দিন সকালে বেরিয়ে পড়েন বিভিন্ন শহর ও হাট-বাজারে। পা তার বাহন। হেঁটে চলেন এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তরে। কাজ একটাই, নামাজের জন্য সবাইকে দাওয়াত দেওয়া।
সাদুল্লাপুর উপজেলা শহরে তাকে মাইকিং করতে দেখেননি, এমন মানুষ বোধহয় কমই আছে। ধাপেরহাট, মীরপুরহাটসহ বেশ কিছু এলাকায় হ্যান্ডমাইক নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে এই মোসলেমকে। সাদুল্লাপুর শহরের ব্যবসায়ী মো. হাসান মিয়া বলেন, মোসলেম চাচাকে কয়েক বছর ধরে চৌমাথা মোড়ে দেখি। তিনি হ্যান্ড মাইক নিয়ে ঘুরে ঘুরে মানুষকে নামাজের দাওয়াত দেন। এটি ভালো কাজ। মোসলেম উদ্দিন প্রধান বলেন, কোরআনে আল্লাহ বলেছেন নিজে নামাজ পড় এবং অন্যকেও নামাজ পড়তে বলো। ইসলামের এই আদর্শ মেনে হ্যান্ডমাইকে হেঁটে হেঁটে মুসলমানদের নামাজ পড়ার আহ্বান করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলে ইয়াসিন আলী পোশাক কারখানায় চাকরি করে। এ দিয়ে সংসার চলে আমাদের। মানুষকে নামাজের দাওয়াতের বিষয়টি পরিবারের সবাই উৎসাহ দেয়। আমি যখন মাইকে নামাজের আহ্বান করি, তখন লোক আমার দাওয়াত গ্রহণ করে।’