শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
খেলাধুলার মাধ্যমে মাদককে সমাজ থেকে বিতাড়িত করতে হবে-মাফরুজা সুলতানা মাইলস্টোন কলেজে নবম শ্রেণির বালিকাদের অংশগ্রহণে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত বিদেশি প্রভুদের নিয়ে বিতাড়িত স্বৈরাচার ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে: তারেক রহমান সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ  ‘বিবেচনায় রয়েছে’: বদিউল আলম ১৬ বছর বঞ্চিতদের এবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বইমেলয় স্টল বরাদ্দের দাবি ইসির অগাধ ক্ষমতা থাকলেও প্রয়োগে সমস্যা ছিল: বদিউল আলম আমাদের শিক্ষা কর্মসংস্থান খোঁজার মানুষ তৈরি করছে, যা ত্রুটিপূর্ণ: প্রধান উপদেষ্টা সেন্টমার্টিন: ‘স্থানীয়দের জীবিকা বনাম পরিবেশ রক্ষা’ আ. লীগ-জাপা নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে কফিন মিছিল ১৫ বছরের জঞ্জাল সাফ করতে সময় লাগবে: মির্জা ফখরুল

‘এইভাবে সরকার পতন হইব না, জোরালো আন্দোলন লাগবে’

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

বিবিসি’র প্রতিবেদন

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের পাশাপাশি ১০ দফা দাবি আদায়ে চলমান আন্দোলন নিয়ে একই সাথে আশাবাদ ও হতাশা কাজ করছে বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। দলের ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতারা মনে করছেন, এখন যেভাবে আন্দোলন হচ্ছে, তাতে বর্তমান সরকার পতন কিংবা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করা সম্ভব নয়।
অন্যান্য দলের সাথে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই প্রথম একযোগে দেশের সকল ইউনিয়নে পদযাত্রার কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে বিএনপি। ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা বলছেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আন্দোলনমুখী। কিন্তু কঠোর কর্মসূচি না হলে সরকারকে বাধ্য করা সম্ভব নয়।
‘জোরালো আন্দোলন লাগবে: মুন্সীগঞ্জ জেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের সভাপতি মো: নজরুল ইসলাম মন্টু বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে যেকোনো কর্মসূচিতে তারা ভাল সাড়া পাচ্ছেন। কিন্তু যে ধরনের কর্মসূচি দিয়ে বিএনপি আন্দোলন করছে, সেটি দিয়ে দাবি আদায় করা যাবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
নজরুল আরো বলেন, “আরো জোরালো করতে হবে। এইভাবে সরকার পতন হইবো না। সরকার পতন করতে হইলে আরো জোরালো আন্দোলন করতে হবে। এই মেসেজই আমাদের দেয়া। অবরোধ হরতালের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে হইবো।”
একই ইউনিয়নের বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মো: মাহাবুবুর রহমান খানের মতে সরকার পতনের আন্দোলন সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
তিনি মনে করেন, আন্দোলনে সফলতার একটা দীর্ঘ পরিক্রমা আছে। এটা একটা দীর্ঘসূত্রিতার ব্যাপার। কয়েক মাস আন্দোলন করে সেটি সম্ভব নয়। “যথেষ্ট সময়ের ব্যাপার। তবে আমরা দৃঢ় আশাবাদি। আমি মনে করি, এখন যে অবস্থা আছে, এই আন্দোলনকে ক্রমশ বেগবান করতে হবে।”
নেতাকর্মীদের মনে পুলিশের ভয়: মুন্সীগঞ্জ একাধিক ইউনিয়নে বিএনপি নেতাদের সাথে কথা বলে মোটামুটি অভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে। ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের দাবি, দলীয় কর্মী-সমর্থকরা আন্দোলনমুখী এবং দ্রব্যমূল্য অর্থনীতির সঙ্কটের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যেও সরকারের প্রতি ক্ষোভ ও অষন্তোষ আছে। সব মিলিয়ে একটা সফল আন্দোলন করাটাই এখন দলের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ।
দলের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাঠপর্যায়ে কর্মীসভা, র‌্যালি ও মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালন করেই তারা রাজপথে সক্রিয় থাকছেন। ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা বলছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনে তারা তৃণমূলে সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছেন। আন্দোলন করতে গিয়ে তাদের ওপর নানামুখী চাপের দিকটিও তুলে ধরছেন তৃণমূলের নেতারা। ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সক্রিয় নেতাদের অনেকের বিরুদ্ধেই একাধিক মামলা হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করছেন।
মুন্সীগঞ্জের মহাকালী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো: জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, স্থানীয় নেতাকর্মীরা এক ধরনের আতঙ্কের মধ্যে থাকে। “এটাও মানসিক চাপ। কিন্তু আমাদের জন্য অনেক কিছু। আমাদের যারা ওয়ার্ডের সভাপতি-সেক্রেটারি, এরা আরো বেশ ভয় পায়। মানে পুলিশের কথা শুনলেই একটা আতঙ্ক কাজ করে।”
মুন্সীগঞ্জে তিনটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, কোনোটিতেই বিএনপির দলীয় কার্যালয় নেই। জেলা পর্যায়ে যে অফিসটি রয়েছে, সেটিও অধিকাংশ সময় থাকে নেতাকর্মী শূন্য। জেলা পর্যায়ের নেতারা বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে জোরালো আন্দোলনের কর্মসূচি ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রোজিনা ইয়াসমিন বলেন, রাজধানীকে কেন্দ্র করেই কঠোর কর্মসূচিতে যেতে হবে দলকে।
রোজিনা ইয়াসমিন বলেন, “আমি মনে করি যে রাজধানীকে অচল করতে পারলেই আমরা মনে করব যে অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে।”
কেন্দ্রীয় নেতারা কী ভাবছেন? দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সংগঠন বিস্তৃত রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ দিন রাষ্ট্র ক্ষমতায় না থাকা ও স্থানীয় নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় বিএনপির তৃণমূলের সাংগঠনিক ভিত্তি ‘অনেকটা দুর্বল’ হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
এরপরও গত বছর বিভাগীয় সমাবেশগুলো তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা করেছিল। কিন্তু ১০ ডিসেম্বর-পরবর্তী বিএনপির আন্দোলনে আবার একটা ভাটা পড়েছে। এর একটি বড় কারণ হচ্ছে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও তাদের কারাগারে যাওয়া। দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির নেতাকর্মীরা জেলখানায় ‘যাওয়া-আসার’ মধ্যে রয়েছেন। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম বিবিসিকে বলেন, সারাদেশে বিভিন্ন উপজেলা- জেলায় নেতাকর্মীরা হয় জেলে আছেন বা জামিন প্রক্রিয়ায় আছে বা জামিন নিয়ে বেরুচ্ছেন বা আবার ঢুকছেন। তিনি আরো বলেন, “এই চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মধ্যেই আমাদের আন্দোলনটা চালিয়ে যেতে হচ্ছে।”
দলের নানামুখী চ্যালেঞ্জ স্বীকার করেই শামা ওয়াবেদ বলেন, সময় ও পরিস্থিতির আলোকেই বিএনপি আন্দোলনের কৌশল নেবে এবং কর্মসূচি দেবে। “আমাদের যারা নীতিনির্ধারক আছেন ও উচ্চ পর্যায়ের নেতারা আছেন, তারা সিদ্ধান্ত নেবেন এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত আসবে বলে আমি মনে করি। তাদের চাপ যতই থাকুক না কেন, যত চাপ বাড়বে আন্দোলনও বেগবান হবে। বিএনপি যখন রাজপথে আন্দোলনকে বেগবান করতে চাইছে, তখন সরকারি দলও মাঠ দখলে রাখার সর্বাত্মক কৌশল নিয়েছে। নির্বাচনকালীন বিএনপির নিরপেক্ষ সরকারের দাবি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মানবে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কঠোর অবস্থানও স্পষ্ট। এমন বাস্তবতায় বিএনপির ভবিষ্যত আন্দোলন কর্মসূচির গতি-প্রকৃতি কী হয়, সেদিকে আগ্রহ সবারই।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com