ছবির হিজাবি নারীরা হলেন: ফাতিমা আবু শানাব, ইলহান ওমর ও সারাহ আল আমিরি। হিজাব আল্লাহ তায়ালার ফরজ বিধান। হিজাব নারীর প্রতীক এবং মর্যাদার পরিচায়ক। এটি তাদের অহঙ্কার ও অলঙ্কারতুল্য। বর্তমান বিশ্বে হিজাব পরিহিতা নারীরা সগৌরবে সারা বিশ্বে বিচরণ করছেন। তারা পাইলট, মন্ত্রী, উপদেষ্টা, কূটনীতিক, প্রধানমন্ত্রী, বিচারপতি, স্পিকার, মহাকাশবিজ্ঞানী, মানবাধিকারকর্মী, সমাজবিজ্ঞানী ও রাজনীতিবিদ হিসেবে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। এ পদচারণাই প্রমাণ করেছে, হিজাব নারীর উন্নতি ও প্রগতির অন্তরায় নয়; বরং এটি তাদের উন্নতি ও প্রগতির সোপান। তাদের আত্মসম্মান ও সম্ভ্রমের সুরক্ষাকবজ। বর্তমান বিশ্বে বহু হিজাবধারী নারী রয়েছেন, যারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং বিশ্বদরবারে অত্যন্ত গ্রহণীয় ও বরণীয়। যেসব নারী হিজাবকে উন্নতি ও প্রগতির স্মারক হিসেবে আন্তর্জাতিক বিশ্বে তুলে ধরেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন-
ফাতিমা আবু শানাব : ফাতিমা আবু শানাব একজন তুর্কিয়ে নারী। তিনি একজন ফরেন পলিটিক্স এক্সপার্ট ও ট্রান্সলেটর। তিনি বর্তমান মুসলিম বিশ্বের সুপার হিরো তুর্কিয়ে প্রধানমন্ত্রী রজব তৈয়ব এরদোগানের ফরেন পলিসি এক্সপার্ট ও বিশিষ্ট ট্রান্সলেটর। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শীর্ষনেতা ও ক্ষমতাধর এরদোগানের সাথে সব বৈদেশিক মিশনে মর্যাদার সাথে হিজাব পরে সারা বিশ্বে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ২৬ বছর বয়সী এই হিজাবি নারী। তিনি হিজাব পরিধানের মধ্য দিয়ে নীরব বিপ্লব সৃষ্টি করেছেন গোটা বিশ্বে। অনেকেই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে প্রশ্ন করেন, সামান্য এক হিজাব কিভাবে তাকে বিশ্বদরবারে নিয়ে গেল? বিস্ময় জাগলেও এটিই বাস্তবতা যে, অনন্য এ মর্যাদার পোশাক তাকে নিয়ে গেছে মর্যাদা ও সম্মানজনক এক আসনে। কিন্তু কই! ফাতিমা আবু শানাবের হিজাব তো তার উন্নতি কিংবা প্রগতি অথবা প্রতিষ্ঠার পথে অন্তরায় বা বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি? বরং হিজাবের কারণে সারা পৃথিবীতে তিনি মর্যাদার আসন লাভ করে আছেন। আজ সারা বিশ্বে হিজাবের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর মুসলিম প্রেসিডেন্টের সাথে বিশ্ব চষে বেড়াচ্ছেন তিনি।
মার্বে কাবাকুসি : তিনি ফাতিমা আবু শানাবের গর্বিত মা। তিনি বিশ্বের ৫০০ প্রভাবশালী নারীর মধ্যে একজন। মাত্র দুই দশক আগের কথা। তুরস্কের প্রথম হিজাবধারী মহিলা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। এরপর ১৯৯৯ সালে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে ইস্তাম্বুলে ডেপুটি এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। আমেরিকায় পড়াশোনা করেও তিনি পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে নিজেকে বিলিয়ে দেননি। হিজাব পরে পার্লামেন্টে শপথ নিতে গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে প্রবেশ করেছিলেন। হিজাব পরার কারণে তাকে তৎকালীন তুরস্কের সেক্যুলার সরকার সংসদে শপথ পর্যন্ত পড়তে দেয়নি। সে দিন সেক্যুলার এমপিরা চিৎকার করে বলেছিল- ‘বেরিয়ে যাও, বেরিয়ে যাও, বেরিয়ে যাও’।
তৎকালীন সেক্যুলার প্রধানমন্ত্রীও চরম গোঁড়ামি প্রকাশ করে ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘এই মহিলাকে লাইনে আনুন’। ১৯৮০ সালে তুরস্কে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে জনসমাগমে হিজাবকে নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এমপি পদ থেকে বহিষ্কার করে নাগরিকত্বও কেড়ে নেয়া হয়েছিল কাবাকুসির। তিনি শেষে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে বাধ্য হয়েছিলেন। ২০০৭ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। আজ এই কাবাকুসির মেয়ে ফাতিমা আবু শানাব তুর্কিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সব বৈদেশিক মিশনে মর্যাদার সাথে হিজাব পরে সারা বিশ্বে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
ইলহান ওমর : ইলহান ওমর সোমালিয়া বংশোদ্ভূত মার্কিন নারী। সোমালিয়া থেকে কিশোর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করেন ইলহান ওমর। এরপর ১৭ বছর বয়সে মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করেন। ২০১৮ সালে মিনেসোটা থেকে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য হিসেবে মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবার নির্বাচিত দুই মুসলিম নারীর একজন, যিনি হিজাব পরে মার্কিন কংগ্রেসে হাজির হয়ে নতুন ইতিহাস গড়েছেন। শুধু তাই নয়, পবিত্র কুরআন মাজিদে হাত রেখে শপথ নিয়ে আরেক নজির সৃষ্টি করেছেন ইলহান ওমর নামের এই হিজাবি নারী। তিনি এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘হিজাব ছাড়ব না। হিজাবকে প্রতিরোধক হিসেবে নিয়েছি, যদিও তা সবসময় সহজ নয়।’ টুইটে তিনি আরো লিখেছেন, তিনি শুধু ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার কারণে হিজাব পরেন তা নয়; বরং হিজাব পরে তিনি আনন্দও পান।
সারাহ আল আমিরি : তার পূর্ণ নাম সারাহ বিনতে ইউসুফ আল আমিরি। তিনি ১৯৮৭ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আরব আল আমিরাতের বিজ্ঞানী পরিষদের প্রধান এবং ‘হোপ’ বা আশা প্রকল্পের ডেপুটি ম্যানেজার। তাকে প্রথমে দেশটির বিজ্ঞানীদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেয়া হয়। তারপর বিশ্বের প্রথম আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মন্ত্রীও করা হয় তাকে। এ সুযোগে তিনি দেশটির মন্ত্রিসভায় উন্নত বিজ্ঞানমন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
শিক্ষাজীবনে তিনি দুবাই শহরে অবস্থিত আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব শারজাহ থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। কম্পিউটার প্রকৌশলে পড়াশোনা করলেও জ্যোতির্বিজ্ঞানে তখনো তার আগ্রহ কমেনি। একপর্যায়ে তিনি এমিরেটস ইনস্টিটিউশন ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অধীনে মুহাম্মদ বিন রশিদ স্পেস সেন্টারে চাকরির সুযোগ পান। সারাহ আমিরি যে সময় এই স্পেস সেন্টারে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেন, সে সময় আরব আমিরাতের প্রথম স্যাটেলাইট প্রোগ্রাম দুবাইস্যাট-১-এর কাজ চলছিল। প্রথম প্রোগ্রামেই চমৎকারভাবে নিজের দক্ষতার পরিচয় দেন। দুবাইস্যাট-১ সফলভাবে উৎক্ষেপণের পর কাজ করেন দুবাইস্যাট-২ প্রোগ্রামে। দ্বিতীয় মিশনটিও ছিল সফল। এরপর তিনি আমিরাতের আরো একটি স্যাটেলাইট মিশন খলিফাস্যাটেও কাজ করেন এবং সেখানেও প্রশংসিত হন।
২০০৯ সালে সারাহ আমিরি তার ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর মাত্র পাঁচ বছর পর আরব আমিরাত সরকার তাকে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত করে। ২০১৪ সালে তাকে আরব আমিরাতের অ্যাডভান্সড এরিয়াল সিস্টেমস প্রোগ্রাম স্থাপনের দায়িত্ব দেয়া হলে তিনি তা শুরু করেন এবং সফলভাবে একটি ঐঅচঝ স্যাটেলাইট নির্মাণ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেন। ঐঅচঝ প্রোগ্রামের এক বছর পর সারাহ আমিরি তার জীবনের আরো এক উল্লেখযোগ্য মাইলফলক স্পর্শ করেন।
২০১৫ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বর্ষসেরা ৫০ তরুণ বিজ্ঞানীর একজন নির্বাচিত হন। কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা আর জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা তাকে একের পর এক সফলতা এনে দেয়। ২০১৬ সালে ২৯ বছর বয়সে তিনি এমিরেটস সায়েন্স কাউন্সিলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৬ সালে তিনি বিশ্ব-অর্থনৈতিক ফোরামে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেছিলেন। ২০১৭ সালের অক্টোবরে তিনি দেশটির উন্নত বিজ্ঞানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। ২০ জুলাই, ২০২০ সালে তারই নেতৃত্বে গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে জাপানের থ্যানগাশিমা স্পেস সেন্টার থেকে জাপানের রকেটে করে আমিরাতের মহাকাশযান ‘হোপ’ যায় লাল গ্রহের দিকে। এটি আরব দুনিয়ার প্রথম মহাকাশ অভিযান। এর মধ্য দিয়ে সফলভাবে শুরু হলো সংযুক্ত আরব আমিরাতের মঙ্গল অভিযান। আরবের এই দেশটির মঙ্গলযাত্রা ওই অঞ্চলের নারীদের জন্যও একটি মঙ্গলবার্তা।
হালিমা বিনতে ইয়াকুব : সিঙ্গাপুরের বর্তমান প্রেসিডেন্ট হালিমা বিনতে ইয়াকুব। হোটেলকর্মী থেকে সিঙ্গাপুরের প্রথম মুসলিম প্রেসিডেন্ট। পেশায় পাহারাদার মোহাম্মাদ ইয়াকুবের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট হালিমা জন্ম নেন ১৯৫৪ সালে। তার বয়স যখন আট বছর তখন পিতা মারা যান। মা সংসার চালাতে হোটেলে ঝিয়ের কাজ নেন। স্কুলের ফাঁকে ফাঁকে হালিমা মায়ের সাথে হোটেলে প্লেট গ্লাস ধোয়ার ও ফরমায়েশ শোনার কাজ করতে থাকেন। কিন্তু এ দারিদ্র্য তার লেখাপড়া থামাতে পারেনি। আইন পড়া শেষ করার মাধ্যমে ক্ষুধার সাথে যুদ্ধে বিজয় লাভ করেন হালিমা। আইন পেশা থেকে ২০০১ সালে সিঙ্গাপুর পিপলস অ্যাকশন পার্টির কর্মী হিসেবে যোগদান করে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন তিনি। পরপর চারটি নির্বাচনে জয়লাভ করে নিজের অবস্থান জানান দেন সবাইকে খুব ভালোভাবে। হালিমা ইয়াকুব ২০১১ সালে সামাজিক উন্নয়ন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ২০১৩ সালে সিঙ্গাপুরের ইতিহাসে প্রথম নারী স্পিকার মনোনীত হয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনায় চলে আসেন সিঙ্গাপুরের এই মুসলিম মহীয়সী নারী। তিনি ২০১৭ সালে স্পিকারের পদ থেকে পদত্যাগ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হন এবং বিজয়ী হন। তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়ে বলেছিলেন, ‘জীবনের মারাত্মক খারাপ সময়গুলোতে অনেকবার আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি; কিন্তু যখন ভেবেছি যে, আমি একজন মুসলিম তখন আবার ফিরে এসেছি সে সিদ্ধান্ত থেকে। আবার নতুন করে জীবন সাজাতে শুরু করেছি।’
রাফিয়া আরশাদ : রাফিয়া আরশাদ পাকিস্তান বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। ব্রিটেনের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম নারী যিনি ডেপুটি ডিস্ট্রিক্ট জজ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি বর্তমানে ব্রিটেনের মিডল্যান্ডস সার্কিটে কর্মরত। মে ২০২০-এ নিয়োগ পাওয়া ৪০ বছর বয়সী আত্মবিশ^াসী এ নারী ১৭ বছর ধরে আইন পেশায় ব্যারিস্টার হিসেবে নিয়োজিত আছেন। মাত্র ১১ বছর বয়স থেকেই রাফিয়া আরশাদ আইন পেশায় ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন এবং দীর্ঘ ৩০ বছর পর তার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি আমার জন্য অনেক বড় বিষয়। আমি আনন্দিত, আর অন্যান্য মানুষকে আমার সফলতার কথা জানাতে পেরে আরো বেশি ভালো লাগছে। আমি জানি এ অর্জন শুধু আমার একার নয়; বরং এটি সব নারীর বিজয়। এটি শুধু মুসলিম নারীদের জন্যও নয়; বরং যেসব মুসলিম নারী বাস্তবে নিজেদের মধ্যে ইসলামকে লালন করেন তাদের জন্যও এটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ হিজাব সম্পর্কে রাফিয়া আরশাদ জানান, ২০০১ সালে তিনি যখন ইনস অব কোর্ট স্কুল অব ল’-এর স্কলারশিপের ইন্টারভিউ দিতে যান, তখন তার পরিবারের এক সদস্য তাকে হিজাব না পরে ইন্টারভিউ দিতে পরামর্শ দেন। ওই সদস্য তাকে আরো বলেন, শুধু এই ইন্টারভিউ নয়; বরং যদি তুমি হিজাব পরো জীবনে তোমার সফলতা ধীরে ধীরে কমে যাবে। কিন্তু রাফিয়া আরশাদ তার পরিবারের ওই ব্যক্তির পরামর্শ গ্রহণ করেননি।
তিনি বলেন, আমি হিজাব পরেই ইন্টারভিউয়ে যাই। আমার বিশ^াস ছিল, আমি যেখানে ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছি, তারা যদি আমাকে যোগ্য মনে করেন তবে ফিরিয়ে দেবেন না। সেখানে ইন্টারভিউ দিয়ে আমি সফল হই। তারা আমাকে স্কলারশিপের জন্য মনোনীত করেন। হিজাব পরে সেটিই ছিল আমার জীবনের প্রথম একটি অসামান্য সাফল্য। রাফিয়া ২০০১ সালে ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ার এলাকায় বসবাস করতেন। পরে ২০০২ সালে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৪ সালে যোগ দেন সেন্ট মেরিন ল’ চেম্বারে। গত ১৫ বছর ধরে তিনি প্রাইভেট ল’ চিলড্রেন, ফোর্সড মেরিজ, ফিমেল-জেনিটাল মিউটিলেশনের ওপর পেশাগত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন। তিনি ইসলামিক আইনের যেকোনো বিষয়ে আইনগত সমস্যায় সমাধানও দিয়ে থাকেন। তিনি ইসলামিক পারিবারিক আইনের ওপর বেশ কয়েকটি গ্রন্থও রচনা করেছেন।
ড. ডালিয়া মুজাহিদ : ড. ডালিয়া মুজাহিদ একজন হিজাবধারী ও প্রভাবশালী মুসলিম নারী। তিনি আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামার উপদেষ্টা ছিলেন। আমেরিকার মতো দেশে বসবাস করেও তিনি ইসলামী হিজাব ও শালীন পোশাক পরিধান করতেন। একবার ইসলামী হিজাব ও শালীন পোশাক পরিধান করার কারণে সাংবাদিকরা তাকে গভীর বিস্ময়ের সাথে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনার বেশভূষা ও পোশাক-পরিচ্ছদের মধ্যে আপনার উচ্চ শিক্ষা ও জ্ঞানের গভীরতা প্রকাশ পাচ্ছে না। তাদের ধারণা ছিল, হিজাব অনগ্রসরতা, মূর্খতা ও সেকেলে ধ্যান-ধারণার প্রতীক।
ডালিয়া মুজাহিদ সাংবাদিকদেরকে ইসলামের একজন মুজাহিদা নারী হিসেবে যথার্থ উত্তরই দিয়েছিলেন। তিনি তৎক্ষণাৎ বলেছিলেন- ‘আদিম যুগে মানুষ ছিল প্রায় নগ্ন। শিক্ষা ও জ্ঞানচর্চার উন্নতির সাথে সাথে পোশাক পরিধান করে সভ্যতার উচ্চ শিখরে আরোহণ করতে থাকে। আমি যে পোশাক পরিধান করেছি, তা শিক্ষা ও চিন্তাশীলতায় উন্নতি ও সভ্যতার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। নগ্নতা ও উলঙ্গপনাই যদি উন্নত শিক্ষা ও সভ্যতার চিহ্ন হতো, তাহলে বনের পশুরাই হতো পৃথিবীর সবচেয়ে সুসভ্য ও সুশিক্ষিত।’
বিশ্বের এত বড় একজন প্রভাবশালী নারীর মুখে হিজাবের গুরুত্ব সম্পর্কে এমন মূল্যায়ন উপস্থিত সব সাংবাদিককে বিস্ময়ে হতবাক করেছিল।
জেনেভ্রা এম উইলসন : জেনেভ্রা এম উইলসন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে চাকরিরত একজন আমেরিকান মুসলিম নারী। তিনি নৌবাহিনীতে চিফ পেটি অফিসার পদে কর্মরত। ২০১৮ সালের ৭ জুলাই তিনি সিআইআর-জর্জিয়ার নৌবাহিনীর কাছে হিজাব পরিধানের অনুমোদন অব্যাহত রাখার আবেদন করেন। আনুষ্ঠানিক অনুমতি মিলতে কয়েক মাস সময় লেগে যায়। তবে অনুমোদনের জন্য অপেক্ষাকালীন তিনি হিজাব পরিধান অব্যাহত রাখেন। শেষ পর্যন্ত নভেম্বর মাসে তিনি আনুষ্ঠানিক অনুমোদন লাভ করেন। হিজাব পরিহিত অবস্থায় চিফ পেটি অফিসার পদে উন্নতি লাভকারী মার্কিন নৌবাহিনীর ইতিহাসে উইলসন প্রথম মুসলিম নারী। উইলসনকে চিফ পেটি অফিসার পদে পদোন্নতির পাশাপাশি হিজাব পরিধানের অনুমোদন অব্যাহত রাখায় মার্কিন নৌবাহিনীর রিজার্ভকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন কাউন্সিলের জর্জিয়ার নির্বাহী পরিচালক এডওয়ার্ড আহমেদ মিচেল।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, উইলসন নিজের অধিকার রক্ষা করতে পেরেছে। অন্যান্য ধর্মানুসারীর জন্যও উইলসন অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। আমেরিকান মুসলমানদের স্বাধিকার রক্ষায় উইলসনের প্রতিটি কীর্তি অসাধারণ ভূমিকা রাখবে।
আয়েশা ফারুক : আয়েশা ফারুক পাকিস্তানের নাগরিক। বয়স ২৪ বছর। দেখতে ছিপছিপে গড়নের। তার বাড়ি পাঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুর শহরে। বাবা বেঁচে নেই। বিমান বাহিনীতে যোগ দিতে চাইলে প্রথমে তার মা তাতে সম্মতি দেননি। কিন্তু দমে যাননি আয়েশা। তিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। শুধু তাই নয়; আয়েশা পাকিস্তানে যুদ্ধবিমানের প্রথম নারী পাইলট। তার হেলমেটের ভেতর থকে উঁকি দেয় জলপাই রঙের হিজাব। উত্তর পাকিস্তানের মুশাফ বিমানঘাঁটিতে মৃদুভাষী আয়েশা তার পুরুষ সহকর্মীদের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে আমি কোনো পার্থক্য দেখি না। আমরা সবাই একই কাজ করি। নির্ভুলভাবে বোমাবর্ষণ করি। (প্রথম আলো অনলাইন ডেস্ক : ১৪ জুন ২০১৩)
জুরাইদা কামারুদ্দিন : পুরো নাম দাতুক হাজাহ জুরাইদা বিনতে কামারুদ্দিন। তিনি মালয়েশিয়ার প্ল্যান্টেশন, ইন্ডাস্ট্রি ও কমোডিটিবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হিজাব পরেই তিনি সারা বিশ্বে মালয়েশিয়ার পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করে বেড়াচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে বাংলাদেশ সফর করেছেন। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সাথে। এ সময় জুরাইদা কামারুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথেও বৈঠক করেন। হিজাব পরিহিতা অবস্থায় শেখ হাসিনার সাথে তার বৈঠকের ছবি সব প্রধান প্রধান জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয়েছিল।
ফাতিহা আয়াত : বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আলোচিত যে কয়েকজন শিশু রয়েছে তার মধ্যে ফাতিহা আয়াত অন্যতম। তিনি ২০১১ সালের ১৩ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় তদানীন্তন আমেরিকান সুপারস্পেশিয়ালিটি হসপিটালে (বর্তমান কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল) জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি পিতা-মাতার সাথে নিউ ইয়র্কে বসবাস করছেন। তিনি একাধারে একজন লেখক, শিশু অধিকারকর্মী ও জলবায়ু পরিবর্তন সংস্কারক। ছোটকাল থেকেই ফাতিহা হিজাব পরতে অভ্যস্ত। হিজাব পরেই তিনি নিয়মিত উপস্থিত হন জাতিসঙ্ঘ, ইউনিসেফসহ আন্তর্জাতিক ফোরামের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে।
২০১৭ সালে মাত্র পাঁচ বছর বয়সে ন্যাশনাল ম্যাথমেটিক্স পেন্টাথলন অ্যাকাডেমিক টুর্নামেন্টে তিনটি ইভেন্টে জয়ী হয়ে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ‘অনারেবল মেনশন’ খেতাব অর্জন করেন। ২০১৮ সালে মাত্র সাত বছর বয়সে তিনি জাতিসঙ্ঘের ইকোসক চেম্বারে আন্তর্জাতিক যুব দিবস সম্মেলনে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। এ বছর তিনি কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট মেলিন্ডা কাটজের স্টেট অব দ্য বরো প্রোগ্রামে প্লেজ অব এলিজিয়েন্স পারফর্ম করেন। ২০১৯ সালে তিনি জাতিসঙ্ঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে শিশু অবমাননা, লিঙ্গবৈষম্য ও পারিবারিক সহিংসতা বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। এ বছর তিনি আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমেন, ফিলিস্তিন ও কাশ্মিরের শিশুদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে মানবাধিকার দিবসে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনে বক্তব্য রাখেন।
একই বছর মুসলিম কমিউনিটি নেটওয়ার্কের অনুষ্ঠানে তিনি মুসলিম অভিবাসীদের অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। এ বছরই তিনি নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ এশীয় সম্মেলনের প্লেজ অব এলিজিয়েন্স পারফর্ম করেন। ২০২১ সালে তিনি স্কটল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য গ্লাসগো অ্যাগ্রিমেন্টের খসড়া তৈরিতে জলবায়ু পরিবর্তনের রূপরেখা সম্মেলনের অধীনে একজন অংশীদারের ভূমিকা পালন করেন। এ বছর তিনি জাতিসঙ্ঘের ৭৬তম সাধারণ অধিবেশনের বিজ্ঞান সম্মেলনের ফিচারড স্পিকারের এবং জর্জিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক জলবায়ু কর্মসূচি সম্মেলনের লাইটনিং স্পিকারের সম্মাননা পান। এ ছাড়াও তিনি জাতিসঙ্ঘ জলবায়ু ও মহাসাগর সমিতির সভায়, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব জার্নালিজমে, নিউ ইয়র্ক সিটি কলেজিয়েট ইউনিসেফ কনফারেন্সে জলবায়ু শরণার্থী বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
১০ বছর বয়সী ফাতিহা আয়াতের তিনটি বই প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলো হলো- বেয়ার উইথ অ্যা বেয়ার, সিস্টার্স রিইউনিয়ন এবং ডায়েরি অব মুসলিম কিড। তিনি ঈঐওখ্উ নামক একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। এ সংগঠনের মাধ্যমে তিনি জলবায়ু, স্বাস্থ্য, তথ্য, শিক্ষা ও উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেন। তিনি নিজের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে শিশুদের জন্য গণিত, বিজ্ঞান, কোডিং, আন্তর্জাতিক সংবাদ, গল্প বলা, কুরআন তিলাওয়াত ও তাফসির উপস্থাপন করেন।
ফাতিহা আয়াত একজন সার্টিফায়েড এনড্রয়েড ও আইওএস অ্যাপস ডেভেলপার। তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু ২০১৬ সালে লুইস সিমিওনি স্কুলে কিন্ডারগার্টেনে ভর্তির মাধ্যমে। পরবর্তী বছরে তিনি নিউ ইয়র্ক সিটি ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশনের গিফটেড অ্যান্ড ট্যালেন্টেড প্রোগ্রামের আওতায় ন্যান্সি ডিবেনেডিটিস স্কুলে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি এ স্কুলেই পঞ্চম গ্রেডে অধ্যয়ন করছেন। এ ছাড়াও তিনি বাইজুস-এ অ্যাডভান্স কোডিং অ্যান্ড স্পেস টেক কারিকুলামের একজন শিক্ষার্থী। একই সাথে তিনি তারতিল কুরআনের হিফজ কার্যক্রমের সাথে যুক্ত আছেন। তিনি বর্তমানে পবিত্র কুরআন মাজিদ হিফজ করছেন।
ফাতিহার তৈরি স্পেস রোভার পারসিভিয়ারেন্সের এবং হেলিকপ্টার ইনজেনুইটির প্রোটোটাইপ প্রদর্শিত হয়েছে নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরিতে। ফাতিহা আয়াত ইতোমধ্যে অনেক সম্মাননা ও পুরস্কার লাভ করেছেন। তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল এসেনশিয়ালস সনদ, বিবিসি জানালার প্রফেশনাল এক্সেল মাস্টারক্লাস সনদ, গার্লস ইন পলিটিক্স ইনিশিয়েটিভের মিনি ক্যাম্প কংগ্রেস ফর গার্লস সনদ ছাড়াও ফ্ল্যামেনকো ভিভো কার্লোটা সান্টানা থেকে রেসিডেন্সি সনদ, ফ্রাঙ্কলিন ইনস্টিটিউট থেকে জিএসকে সায়েন্স ইন দ্য সামার সনদ এবং ইউনিসেফ থেকে টেলেনর চাইল্ড অনলাইন সেফটি সনদ লাভ করেন। ২০১৭ সালে তিনি নর্থ আমেরিকান বাংলাদেশী কমিউনিটিতে অনন্য অবদানের জন্য স্পেশাল ট্যালেন্ট ক্যাটাগরিতে এনআরবি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
তিনি ম্যাথ লিগ, পেরিনিয়াল ম্যাথ, ন্যাশনাল ম্যাথমেটিকস পেন্টাথলন অ্যাকাডেমিক টুর্নামেন্টে একাধিকবার বিজয়ী হন। তিনি অ্যাডভেনা ওয়ার্ল্ড আর্ট কম্পিটিশনে ওশেন আন্ডার থ্রেড ক্যাটাগরিতে অ্যামাজিং আর্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড পান এবং তার আঁকা ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে কালারস অব হিউম্যান আর্ট গ্যালারিতে। তিনি আলাস্কা, আটলান্টা ও সাউথ ডাকোটো থেকে জুনিয়র ফরেস্ট রেঞ্জার অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালের শিশু সম্মেলন, নজরুল সম্মেলন, বাংলাদেশ সোসাইটি সম্মেলনে এবং আইটিভি ইউএসের আয়োজনে কুরআন তিলাওয়াত, বাংলা কবিতা আবৃত্তি, রচনা লিখন ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন এই হিজাবি কন্যা। ফাতিহা আয়াত বহুবিধ সংগঠনের জন্য নানাবিধ দায়িত্ব পালন করছেন। যেমন- ওয়ার্ল্ড ক্লিন আপ ডে-ইয়ুথ অ্যাম্বাসেডর, বেবি টিউব- স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার, বিডি ক্লি¬ন-গুডুইল অ্যাম্বাসেডর, ইকো নেটওয়ার্ক-ব্রান্ড অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ স্পেস রিসার্চ সোসাইটি-আন্তর্জাতিক অবজার্ভার, ইভেন্ট্রা মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনাল জেনারেল অ্যাসাম্বলি ২০২১ গ্লোবাল ডেলিগেট।
ফাতিহা আয়াত ইতোমধ্যে ভয়েস অব আমেরিকা, আরটিভিআই, গ্লোবাল সিটিজেন, টিবিএন-২৪, এনটিভি ইউরোপ, চ্যানেল এস, ওয়ার্ল্ড ক্লিন আপ ডে, আরটিভির মতো বিভিন্ন বিখ্যাত গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার ও বিবৃতি দিয়েছেন।
ফাতিহা নিজেও যেসব বিখ্যাত মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারা হলেন- আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার বিজয়ী সাদাত রহমান, গ্লোবাল কিডস অ্যাচিভার অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী আকাশ ভুকোতি, সায়েন্স নিউজের টপ সায়েন্টিস্ট তানিমা তাসনিম অনন্যা, ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধ সুদীপ্ত মুখার্জি, কুইন্স ইয়াং লিডারস বিজয়ী আয়মান সাদিক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী আনিসুল হক, কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট শ্যারন লি, টাইম ম্যাগাজিন কিড সায়েন্টিস্ট অব দ্য ইয়ার ২০২০ বিজয়ী গীতাঞ্জলি রাও। এ ছাড়াও ফাতিহা আয়াতের উপস্থাপনায় ও সঞ্চালনায় আইটিভি ইউএসএতে ‘রামাদান উইথ ফাতিহা’ এবং একুশে টেলিভিশনে ‘ইবাদাত’ নামে মাসব্যাপী অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়। লেখক : সহকারী শিক্ষক, পল্লøী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বগুড়া