সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়াতে যৌতুকের টাকা না পেয়ে এক গৃহবধূকে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। যৌতুক দিতে না পারায় তাকে শেষ পর্যন্ত বাড়ি থেকেই বেড় করে দেওয়া হয়েছে। নির্যাতিত গৃহবধূর নাম জোছনা খাতুন। সে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর শহরের ওয়াপদা বাঁধ এলাকার জমির উদ্দিনের মেয়ে। জোছনা খাতুন বলেন, যৌতুকের টাকার জন্য তার শরীরে কোরোশিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন শশুর বাড়ির লোকজন। কিন্তু প্রতিবেশীরা তাকে রক্ষা করেন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। সেই দুর্বিসহ ঘটনার ৬ মাস না পেরোতেই তাকে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তারপর আবারও তাকে উপর্যুপরি বটি দিয়ে কোপানো হয়। আজও তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আগুনে পোড়া দাগ ও বটি দিয়ে কোপানোর দাগ রয়েই গেছে। এদিকে নির্যাতিত গৃহবধূ জোছনা খাতুনের স্বামী মুঞ্জিল হোসেন বলেন, আমার স্ত্রীকে মারধর করার সময় বাধা দিলে আমাকেও মারধর করেন আমার বাবা আব্দুর রশিদ ও মা রজিনা খাতুন। যৌতুকের টাকা না পেয়ে আমার স্ত্রীর গলায় ওড়না পেচিয়ে শাস্তি দেওয়া হয়। তারপর আমার স্ত্রী সঙ্গে আমাকেও বাড়ি থেকে বেড় করে দিয়েছেন। আর শশুর বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা নিয়ে তারপর স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বলেছেন। গতকাল সোমবার সকালে নির্যাতিত গৃহবধূ জোছনা খাতুন ও তার স্বামী মুঞ্জিল হোসেন স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে নির্যাতনের সেসব লোমহর্ষক বর্ণনা দেন। জানা গেছে, ২০১৮ সালে জোছনা খাতুনের বিয়ে হয় উল্লাপাড়া উপজেলার বাঙ্গালা ইউনিয়নের মহেষপুর গ্রামে। তাদের সংসারে ৪ বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। জোছনা খাতুনের মা জমিরন খাতুন বলেন, আমি বিয়ের সময়ে যৌতুক হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম ধার দেনা করে। আমার আর কোনো সামর্থ্য নেই যৌতুকের টাকা দেওয়ার মতো। এদিকে জোছনা খাতুনের শশুর আব্দুর রশিদ বলেন, আত্মীয়ের কাছ থেকে প্রয়োজনে টাকা চাইতেই পারি। তবে নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেছেন তিনি ও তার স্ত্রী রজিনা খাতুন। এ প্রসঙ্গে মানবাধিকার সংস্থা আইন সহায়তা কেন্দ্র ফাউন্ডেশনের রাজশাহী বিভাগীয় স্পেশাল কমিটির সভাপতি স্বপ্না চৌধুরী দৈনিক খবরপত্রকে বলেন, যৌতুকের জন্য নারী নির্যাতন বেড়েই চলেছে। প্রয়োজনে মানবাধিকার সংস্থা নির্যাতিত গৃহবধূ জোছনা খাতুনকে আইনী সহয়তা দেবে।