এশিয়ার একমাত্র মিঠা পানির প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী যেন ময়লার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে। নাজিরহাট বাজারের বর্জ্য ফেলে ছোটবড় ময়লার স্তুপে পরিনত করা হচ্ছে। যা নদীর পানিতে পড়ে দূষণের সৃষ্টি করছে। আবার বর্জ্যের স্তুপ গুলোতে আগুন দেয়ার ফলে বায়ুদূষণ ও পানিদূষণের কবলে পড়ছে আশেপাশের পরিবেশ। প্রতিবছর কার্প জাতীয় রুই, কাতল, মৃগাল, কালি বাউশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ ডিম ছাড়ে এ নদীতে।২০২০ সালে রুই জাতীয় মাছের মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত এ নদীকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের উদাসিনতা ও বিভিন্ন সময় নামমাত্র অভিযান চালালেও ফলাফল যেন যেই লাউ সেই কদু। অভিযান পরবর্তী সময়ে আবারও একই অবস্থার দেখা মিলে। বাজার কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তদারকির অভাবে দূষিত হচ্ছে এই প্রাকৃতিক সম্পদ। সরজমিনে ফটিকছড়ির নাজিরহাট বাজার ঘেষে চলা হালদা নদীর পাড়ে দেখা মেলে বড় বড় ময়লার ভাগাড়ের। বাজারের ময়লা আবর্জনার স্তুপ হালদায় পড়ে তা পানির সঙ্গে গড়িয়ে মিশে যাচ্ছে নদীতে। জবাইকৃত পশুর রক্ত, পাবলিক টয়লেটের বিষাক্ত আবর্জনা, শাকসবজির পরিত্যক্ত অংশ সরাসরি যাচ্ছে নদীতে। এছাড়াও পুরাতন ব্রিজের সামনে একটা ডাস্টবিন দেখা গেলেও এর যথাযথ ব্যবহার হচ্ছেনা। ময়লার স্তুপে আগুন দেয়ার ফলে তা হালদার পানিকে করে তুলছে বিষাক্ত। ফলে প্রতিনিয়ত দূষণের কবলে পড়ছে মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদী। এ বিষয়ে জানতে নাজিরহাট বাজার কমিটির সভাপতি নাছির উদ্দিনকে বারবার যোগাযোগ করা হলেও পাওয়া যায়নি। স্থানীয় কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী এসব বিষয়ে এর আগেও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন বলে জানান। এ বিষয়ে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির রাহমান সানি বলেন, বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীতে কোনভাবেই দূষণের কবলে পড়তে দেযা যাবেনা। এ ব্যাপারে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। নদীদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেশের স্বাদুপানির অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্রকে রক্ষায় প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগটন ও হালদা সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে বলে জানান হালদা গবেষক ও পরিবেশবীদরা।