জাপানি বংশোদ্ভূত দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে নিয়ে মা নাকানো এরিকো বিদেশে যেতে পারবে না বলে আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসাথে দুই শিশু কার জিম্মায় থাকবে এ সংক্রান্ত আপিল জেলা জজ আদালতকে তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ সময় পর্যন্ত দুই শিশু যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বে এই আদেশ দেন।
এদিন আদালতে জাপানি মায়ের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। সাথে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। বাংলাদেশী বাবা ইমরান শরীফের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ ব্যারিস্টার আখতার ইমাম ও ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। আপিল বিভাগ বলেন, ‘সব সমস্যার সমাধান আদালতে হয় না। দুই শিশুর অভিভাবকই ডেসপারেট, উল্টো আমরা বিপদে আছি।’ গত ২৯ জানুয়ারি বাবা ইমরান শরীফ ও মা নাকানো এরিকোর দুই শিশুকে জাপানি মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেন ঢাকার পারিবারিক আদালত। তবে ছোট মেয়ে বাবার কাছেই রয়েছে। তাকে উদ্ধারে মা গুলশান থানায় জিডি করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত ২ ফেব্রুয়ারি তাকে আদালতে হাজির করা হয়। ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদের আদালত খাস কামরায় ছোট মেয়ে লায়লা লিনার বক্তব্য শোনেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একদিন বাবার কাছে এবং অন্যদিন মায়ের কাছে থাকার আদেশ দেন আদালত।
২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি আইন অনুসারে বিয়ে করেন নাকানো এরিকো ও শরীফ ইমরান। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। ১২ বছরের সংসারে তাদের তিনটি মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ করে। তারা হলো জেসমিন মালিকা (১১), লাইলা লিনা (১০) এবং সানিয়া হেনা (৭)। এই তিনজন টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসজেআই) শিক্ষার্থী ছিল। আর মা এরিকো পেশায় একজন চিকিৎসক। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি ইমরান শরীফ বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করেন।