চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বিভিন্ন ইউনিয়নে অগ্নিকান্ডের ঘটনা বেড়েই চলেছে। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিঃশ্ব হচ্ছে নি¤œ আয়ের পরিবারগুলো। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর পাশে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে- গত দেড় মাসে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৩৮টি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৩টি অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ক্ষতির পরিমান ২৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। উদ্ধার করা হয়েছে ৬৮ লাখ টাকার মালামাল। সূত্র আরও জানায়, বাকি ২৫টি অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ক্ষতি ও উদ্ধারের পরিমাণ এখনো জানা যায়নি। অগ্নিকান্ডের ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- মনাকষার পারচৌকা রাঘবাটি, দূর্লভপুরের আট রশিয়া, পিয়ালীমারী, বিনোদপুরের কালিগঞ্জ, মোবারকপুরের সাহেবগ্রাম, গোয়বাড়ি চাঁদপুর, চককীতির্র রানীবাড়ি চাঁদপুর, পাঁকার লক্ষীপুর বাবুপুর, চক পাঁকা, শ্যামপুরের হাদিনগর, পূর্ব শ্যামপুর, কানসটের হরিপুর, ছত্রাজিতপুরের মহদিপুর সাতভাইয়াসহ ৩৮টি। উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাব স্টেশন ম্যানেজার রজব আলী শেখ জানান, অগ্নিকান্ডের মূল কারণ বিদ্যুৎ সংযোগের সময় দূর্বল ওয়ার্রিং, চুলার আগুন, মশা তাড়ানোর আগুন ও অসচেতনতা থেকে সমস্ত ঘটনা ঘটছে। অগ্নিকান্ডের ঘটনা কমানোর জন্য ব্যাপক হারে গণসচেতনতা সৃষ্টি ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ একান্ত প্রয়োজন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রত্যেক পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, আলু, পেঁয়াজ, লবন, আটা, চিড়া, চিনি, মুড়ি ও ছোলাসহ ২৮ কেজি ওজনের একটি করে খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১০টি পরিবারের প্রত্যেকের মাঝে দুই বান্ডিল ঢেউটিন ও ছয় হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, প্রত্যেকটি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ক্ষতির পরিমাণসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর মাঝে প্রদান করা হবে। এছাড়াও স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, দশ ভাইয়া ফাউন্ডেশন, শিবগঞ্জ গৌড় ম্যাংগো সিটি আলাদা আলাদা ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর মাঝে খাদ্য, বস্ত্র, ঢেউটিন ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াত বলেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো প্রায় নি¤œ আয়ের মানুষ। খবর পাওয়া মাত্রই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে খাদ্যসামগ্রী, বস্ত্র, নগদ অর্থ ও ঢেউটিন প্রদানের মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রত্যেক এলাকায় গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালিয়েছি। শুধু তাই নয়, চিঠির মাধ্যমে উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি, হাটবাজার, মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকান্ড প্রতিরোধে জরাজীর্ণ ইলেকট্রিক ওয়ারিং বাতিল করে নতুনভাবে ওয়ারিং করা, রান্না ঘরের চুলার পাশে জ্বালানী খড়ি বা পাতা না রাখা ও গোয়াল ঘরে মশা তাড়ানোর আগুন জ্বালিয়ে দূরে না যাওয়া প্রভৃতি বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে প্রচারণার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।