আসছে ঈদুল ফিতর। ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ১৭ জেলার প্রায় ৫০ লাখ মানুষ এবার প্রতিবারের মত আপনজনের কাছে ফিরবেন নদীপথের ৪১টি নৌরুট দিয়ে। তবে নানা সংকটে দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথ এখন ঝুঁকিপূর্ণ। কোনো দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা মোকাবিলায় নেই তেমন প্রস্তুতি। ঢাকা-বরিশাল নৌপথে নৌ দূর্ঘটনায় লঞ্চ ডুবলে তা উদ্ধারে তেমন নেই কোন সক্ষমতাও। বরাবরের মত লঞ্চ মাস্টারদের অভিযোগ, বরিশালে অভ্যন্তরীণ রুটে ৩৬টি ও দূরপাল্লার রুটে ২০টি লঞ্চ চলাচল করে। প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন লঞ্চে। ঈদে এ সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। নদীতে মাসের পর মাস বিকল অবস্থায় রয়েছে বয়া, বাতি ও বিকন। তার ওপর টাকার বিনিময়ে প্রশিক্ষণ ছাড়াই চালকদের ভুয়া সনদ দেয়া হয়। আর অনিয়ন্ত্রিত মালবাহী নৌযান চলাচলের পাশাপাশি ঝড় মৌসুম হওয়ায় এবার ঈদে ঝুঁকিপূর্ণই থাকছে নৌপথ। বরিশাল নদীবন্দর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার মো. এনামুল হক সুমন বলেন, পুরো বিভাগে মাত্র দুটি নৌফায়ার স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে পটুয়াখালী স্টেশনে জনবল একদমই কম থাকায় বরিশাল থেকে গিয়ে সাপোর্ট দিতে হয়। তবে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স আগের চেয়ে অনক আপডেট হয়েছে। এতে বড় ধরনের দুর্যোগ ও দূর্ঘটনা সামাল দেয়া যাবে বলে আশা করা যায়। ঢাকা-বরিশাল নৌপথে বিশালাকৃতির একেকটি লঞ্চের ওজন ১২শ থেকে ১৫শ টন। অপরিদকে নৌযান ডুবলে দেশে উদ্ধারকারী যে চারটি জাহাজ আছে হামজা, রুস্তুম, নির্ভীক ও প্রত্যয় সব মিলে তার ওজন ক্ষমতা মাত্র ৪শ টন। উদ্ধারকারীরাই বলছেন, বড় লঞ্চ তো দূরে থাক, মাঝারি লঞ্চ ডুবলেও তা উদ্ধারের সক্ষমতা নেই। বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, আগে লঞ্চগুলো ছোট ছিল তাই উদ্ধারকারী সরঞ্জামের ধারণক্ষমতাও কম ছিল। এখন লঞ্চগুলো অনেক বড় ও ভারী হচ্ছে। তাই উদ্ধারকারী সরঞ্জামগুলো আপডেট করার চেষ্টা চলছে। আশা করা যায়, দ্রুত বহরে যুক্ত হবে নতুন নতুন উদ্ধারকারী জাহাজ। সংশ্লিষ্টরা জানান, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ২০২১ সালে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকান্ডে মারা যান ৪৯ জন। অগ্নিনির্বাপক নৌযান থাকলে হয়তো এত মানুষের প্রান যেত না। ফায়ার সার্ভিসের বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার দুই নৌ-ফায়ার স্টেশনে থাকা দুটি অগ্নিনির্বাপক লঞ্চের একটি লক্কড়-ঝক্কড়, আর অন্যটি যুক্ত হয়েছে নতুন করে। কাজেই বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সামাল দেয়া কঠিন হবে।