জেলার সদর উপজেলার আমতলা পাল পাড়ায় বৃহস্পতিবার কুমার নারীদের আনন্দের দিন উদযাপন করা হয়। গ্রামের নারী পুরুষ শিশু সকলেই মিলে গ্রামের এই মেলায় মিলিত হয়। বৈশাখী মেলায় নিজেদের নিপুর হাতের তৈরী করা পথ্য নিয়ে কোনদিন বসে নাই। শুধু নিজের হাতে তৈরী করেছেন জীবনভর। পুরুষেরা বিক্রি করেছে মেলায় বারুণীতে। বৈশাখী উৎসবকে সামনে রেখে ৩০ জন নারী নিজের গ্রামের বাড়ির উঠোনে নিজেদের রঙবেঙগের ১৩৪ জাতের মাটির পণ্য সাজিয়ে প্রদর্শন করেছেন। গ্রামের মানুষ নারীদের লোকজ জ্ঞানের প্রযুক্তি দেখেছে।মেলাটি উদ্বোধন করেন গ্রামের প্রবীণ নারী সীতা রাণী পাল। এসময় উপস্থিত ছিলেন অনেকেই। মেলায় ষাড়, মহিষ, বাঘ, হাতি, সাপ, কাঠবিড়ালী, ব্যাঙ, হরিণ, শিয়াল, পাখি, পালকি, হুক্তা, পাতিল আম, কাঠাল, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্র, শহীদ মিনার, হাঁস, কবুতর, নৌকা, গাছ, সকল প্রকার প্রাণি,পাখি, মাছ, গৃহস্থালী উপকরণ, কৃষি উপকরণসহ ১৩৪ জাতের খেলনা প্রদর্শন করা হয়। বৈচিত্র্যময় এই খেলনা যেমন শিশুদেরকে আনন্দ দিয়েছে তেমনি আনন্দ দিয়েছে প্রবীণ নারীপুরুষ ও গ্রামবাসীকে। মেলাকে সামনে রেখে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনায় কুমার নারী সংগঠনের সভা প্রধান ঝিনুক রাণী পাল বলেন, “আমাদের কষ্টের কোন মূল্য নাই। দাম পাইনা। মাটি কিনতে গেলেও পাওয়া যায়না। প্লাষ্টিক আইয়া বাজার ভইরা গেছে। কিন্তু এই মাটির জিনিস ছাড়া মেলা জমেনা।বাচ্চারা এই ষাড়, ঘোড়া, পুতুল, পালকিই কিনে, আমাদের কষ্টডাই বিপলে যায়।” বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমান বলেন, এই মাটির জিনিস ছাড়া বৈশাখী জমেনা, বারুণী জমেনা, আমাদের কোন মেলাই আসল রুপ পায়না, গ্রামে,শহরে সবস্থানেই মাটির এসব নানা বৈচিত্র্যর উপকরণ শিশুদের অনেক প্রিয়। তবে আধুনিক প্রযুক্তির কারণে কুমারদের এই পেশা, উপকরণ বিলুপ্তির পথে। অনুষ্ঠান শেষে সকল অংশগ্রহণকারীকে বাঁশের তৈরী উপকরণ কুলা, কালই, পাখা উপহার হিসেবে প্রদান করেন বারসিকের সহযোগি সমন্বয়কারী শংকর ¤্রং, ইতি রাণী পাল ও চিত্র রাণী পাল।