দক্ষিণা বাতাসে দিনাজপুরের হিলির বোরো ক্ষেতে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। শুরু হয়েছে বোরো ধানের কাটা-মাড়াই। ভাল ফলন ও দাম ভাল থাকায় খুশি ধানচাষিরা। চলতি বোরো মৌসুমে এবার জেলায় ১ লাখ ৭৩ হাজার হেক্টর জমিতে এই ধান চাষ হয়েছে, জানিয়েছেন কৃষি অধিদপ্তর। উপজেলার বিভিন্ন বোরো ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সোনালি রঙের পাকা ধান। দেখে মনে হচ্ছে যেন মাঠে সোনা ছিটিয়ে পড়ে আছে। মনের সুখে কাটছে এসব ধান। কাটা-মাড়াই খরচ শ্রমিকরা নিচ্ছে বিঘাপ্রতি ৪০০০ থেকে ৪২০০ টাকা। ধানের দাম ভাল আছে, সরকারি ভাবে ধান ক্রয় শুরু হলে আর দাম বেশি পাবে, এমনটিই আশা কৃষকের। হাকিমপুর উপজেলার বোয়ালদাড় গ্রামের বোরোচাষি মহাসিন আলী বলেন, এবার আমি ৭ বিঘা জমিতে ইরি ধান চাষ করেছি। ফলন আল্লাহ দিলে অনেক ভাল হয়েছে। কাটা-মাড়াই শুরু করেছি। বিঘাপ্রতি ২৩ থেকে ২৪ মণ ধান ঘরে তুলছি। উপজেলার সাতনী গ্রামের কৃষক বাদল মিয়া বলেন, ১৮ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। কয়েকটা জমির ধান পাক ধরেছে। এসব পাকা ধান কাটতে লোক লাগিয়েছি। বাঁকি জমির ধান আর ৮ থেকে ১০ দিন পাকতে সময় লাগবে। আবহাওয়া ভাল থাকলে আশা করছি ফলনও ভাল পাবো। ধানকাটা শ্রমিক জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা ১৬ জনের একটি দল, এক সাথে ধান কাটা-মাড়াই করছি। শুধু ধান কেটে নিলে আমরা বিঘাপ্রতি ৩০০০ থেকে ৩২০০ টাকা নিচ্ছি। আর যদি কাটা সহ মাড়াই করে নিলে ৪০০০ থেকে ৪২০০ টাকা নিচ্ছি। আমরা দিনে প্রায় ৪ থেকে ৫ বিঘা জমির ধান কাটা-মাড়াই করছি। হাকিমপুর উপজেলার কৃষি অফিসার আরজেনা বেগম বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে এই উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরাছিলো ৭ হাজার ১২০ হেক্টর জমি। সেখানে চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৫৯৫ হেক্টর জমি। মাঠে বোরো ধানের ফলন এখন পর্যন্ত ভাল আছে। বিভিন্ন চিকোন জাতের ধান বিঘাপ্রতি ২৫ থেকে ২৬ মণ হচ্ছে। এছাড়াও উন্নত জাতের বীজ থেকে প্রতি শতকে ১ মণ করে কৃষক ধান কাটা-মাড়াই করছেন। আশা করছি আবহাওয়া ভাল থাকলে কৃষক তাদের কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে পারবে। দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, জেলার ১৩ টি উপজেলায় মোট ১ লাখ ৭৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এই জেলা ধানের জন্য বিখ্যাত, পাশাপাশি অন্যান্য ফসলও অনেক ভাল হয়ে থাকে। আমরা কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করে আসছি। ধানের বর্তমান বাজার দর ভাল আছি। আশা করছি কৃষক লাভবান হবে।