বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৭ অপরাহ্ন

সালথায় যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন, গৃহবধূকে উদ্ধার করল পুলিশ

বেলায়েত হোসেন লিটন বিশেষ প্রতিনিধি ফরিদপুর :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৮ মে, ২০২৩

ফরিদপুরের সালথায় যৌতুকের দাবিতে আরিফা আক্তার(২৪) নামে এক গৃহবধূকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁর স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে গৃহবন্দী করে ৫ লাখ টাকা দাবি করে নির্যাতন চালায়। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। রোববার মধ্যরাতে উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কাগদী গ্রামে গৃহবধূর স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ওই গৃহবধূ ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাবস্থায় রয়েছে। এ ঘটনায় নির্যাতিতার পরিবার থেকে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। আরিফা আক্তারের পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ২০২০ সালে কাগদী গ্রামের কৃষক মফিজুর শেখের ছেলে হাসান শেখের(২৫) সঙ্গে পার্শ^বর্তী নগরকান্দা উপজেলার বিবিরকান্দি গ্রামের স্কুল শিক্ষক আবুল কাশেম মাতুব্বরের কন্যা আরিফা আক্তারের বিয়ে হয়। এরপর থেকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে বিভিন্ন সময় টাকা পয়সা আনার জন্য চাপ দিচ্ছিল। আরিফা বাবার কাছ থেকে কয়েক দফায় কয়েক লাখ টাকা এনে দিয়েছেন। কিন্তু বছর খানেক পর আবার নির্যাতন শুরু হয়। এভাবেই প্রায় ৩ বছর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হয়ে আসছিলেন আরিফা। তাদের সংসারে হাবিবা আক্তার নামে দেড় বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। সর্বশেষ রবিবার (০৭ এপ্রিল) রাতে বিদেশ যাওয়ার জন্য স্ত্রী আরিফার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন হাসান ও তাঁর পরিবার। এতে আপত্তি জানালে আরিফার ওপর সবাই মিলে শারীরিক নির্যাতন করে। এতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। এ ঘটনার খবর পেয়ে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য আরিফার পিতা সালথা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এর পরই রাতে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরিফা আক্তার বলেন, ‘সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে স্বামীর বাড়ির লোকজনের নির্যাতন সহ্য করেও স্বামীর সংসার করে আসছি। কিন্তু আমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের অমানবিকতা এবং নির্যাতন মোটেও বন্ধ হয়নি। যৌতুকের জন্য প্রায় সময়ই তাঁরা শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল। বিদেশ যাওয়ার নামে ৫ লাখ টাকার জন্য রোববার রাতেও আমাকে প্রচ-ভাবে মারপিট করে বাসায় বন্দী করে রাখে। উপায় না পেয়ে আমি মোবাইলে আমার বাবাকে বিষয়টি জানাই। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে। সালথা থানার এসআই রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ওই গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ পেয়ে রাতেই তাঁকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। সালথা থানার ওসি শেখ সাদিক বলেন, গৃহবধূকে ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে এমন একটি অভিযোগ পাই। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে আরিফার স্বামী হাসান শেখ বলেন, বিয়ের সময় মেয়ের বাবার পক্ষ থেকে আমাকে পাকা ঘর সহ বিভিন্ন সামগ্রী দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু এখনো তারা আমাকে তেমন কিছু দেয়নি। তিনি বলেন, ‘এটি সাংসারিক বিষয়। এ অভিযোগ নিয়ে আমার কিছুই বলার নেই।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com