পিরোজপুরে এক গৃহবধুকে নির্যাতন এবং তার পরিবার-পরিজনকে হয়রানির অভিযোগ এনে স্বামীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে ঝুমুর আক্তার নামের এক গৃহীনি। বুধবার বিকালে পিরোজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার গৃহবধু ঝুমুর লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০১৪ সালে পিরোজপুর সদর উপজেলার কালিকাঠীর বাসিন্দা বেলায়েত হোসেনের পুত্র মো: সহিদুজ্জামান ফিরোজের সাথে তার পরিবারের অমতেই বিয়ে হয়। এর আগে ফিরোজ আমাকে দেখে ঘুরতে ঘুরতে আমার বাড়ি মোংলা ও খালা বাড়ি কালিকাঠীতে আসা যাওয়া করত। পরে তার সাথে বিয়ের পর বিভিন্ন সময় ব্যবসা করার কথা বলে আমার পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা নেয়। এরপর আমরা স্বামী-স্ত্রী শহরের পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের মধ্যরাস্তায় জায়গা কিনে বসবাস শুরু করি। কিন্তু জমির দলিল আমার নামে করার কথা থাকলেও আমার শশুর রেজিষ্ট্রি অফিসে চাকরীর সুবাদে তা আর করা হয়নি। কৌশলে সেই জমি বাড়ি-ঘর সবই আমার স্বামী সহিদুজ্জামান তার নিজের নামে লিখে নেয়। বর্তমানে আমার স্বামী আমার কাছে আরও ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে আসছে, যা না দিলে সে আমার সাথে সংসার করবে না বলে জানিয়েছে। আর আমার পিতা সেই টাকা দিতে অসম্মতি জানালে সে আমাকে মারপিট-নির্যাতন করে। কিছুদিন আগে দা-বটি হাতে নিয়ে আমাকে কোপাতে আসলে আমার ডাক চিৎকারে পার্শবর্তী লোকজন দৌড়ে এসে উদ্ধার করে। এসময় আমাকে হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমার স্বামী বাড়িতে ফিরে না আসায় আমি পিরোজপুর পৌর মেয়রকে জানালে সে ২ পরিবারকে ডেকে শালিস করে মিমাংশা করে দেয়। কিন্তু আমার স্বামী শালিস না মেনে সেখান থেকে চলে গিয়ে আমার পিতা ও ভাইকে আসামী করে আদালতে হয়রানি মূলক মিথ্যা মামলা দেয়। এমনকি আমার খাবার পানির ব্যবস্থা না থাকায় আমি থানায় জানালে ২ পক্ষকে আবার শালিসে ডাকা হয়। সেখান থেকে আমার স্বামী চলে গিয়ে আমি ও আমার পরিবারকে ফোন করে হুমকি দেয় এবং বলে আমার ভাই সাইফুল পাথরঘাটা থানার দারোগা। তাকে দিয়ে তোর বাবা ও ভাইকে জেল খাটাবো। সবশেষে আমি বাধ্য হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। আমার স্বামীর কিছু সমস্যার কারনে আমাদের কোনদিন সন্তান হবে না তা জানা সত্বেও আমি যাতে তার স্ত্রী হিসেবে স্বামীর সংসার করতে পারি এটাই আমার দাবি বলে জানান ঝুমুর। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম সরদার বাদশা, ঝুমুরের খালু বাবুল মাঝি, খালা রুনু বেগম, ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি দেলোয়ার শিকদার, সাধারণ সম্পাদক আহসান কবিরসহ আরো অনেকে। এ বিষয়ে ঝুমুরের স্বামী সহিদুজ্জামান ফিরোজ জানান, রোজার ঈদের পরেরদিন ঝুৃমুর আমাকে মারধর করেছে। আমি হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। তারপর তার নামে আমি মামলা দিয়েছি।