ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার পালগাঁও কামাইরা পাড়ার হেলাল উদ্দিন নিজের জীবনবাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করলেও স্বাধীনতার অর্ধশত বছর অতিবাহিত হলেও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি বেশ কিছু মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীন সার্বভৌম এই রাষ্ট্রে এমন অনেকেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। আর কেউ কেউ বেঁচে থাকলেও বুকে যন্ত্রণা নিয়ে ধুকে ধুকে গুনছেন জীবনের শেষ প্রহর। অবহেলিত যোদ্ধাদের কাতারে তেমনি একজন মুক্তিযোদ্ধার নাম উঠে এসেছে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বাটাজোর গ্রামের মোঃ হেলাল উদ্দিন। বর্তমানে পঙ্গুত্ব বরণ করে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়লেও ১৯৭১ সালে ২০ বছরের টগবগে বয়সে বঙ্গবন্ধুর ডাকে অংশ নিয়েছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। হাকিমুদ্দিন মেজর প্রাথমিক প্রশিক্ষণ করান ফুলবাড়িয়া কাচ্ছি ঘাট। প্রশিক্ষণ শেষে ১৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে কোম্পানি কমান্ডার নুরু উকিলের নেতৃত্বে উপজেলার মল্লিকবাড়ি, ডাকাতিয়া ও জয়না বাজার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পাক সেনাদের বিরুদ্ধে লিপ্ত হন সশস্ত্র যুদ্ধে। স্বাধীনতা সংগ্রামের সনদপত্র (রেজিঃ ১৩১৯) থাকার পরও অবহেলিত এই মুক্তিযোদ্ধার নাম আসে নি গেজেট তালিকায়। প্রশিক্ষণের সময় দু হাতের কনুই এবং পায়ের হাঁটুর উপরের আঘাতের চিহ্নগুলো এখন ও স্পষ্ট যা মনে করিয়ে দেয় তার দেশপ্রেমের কথা।কিন্তু তার সহযোদ্ধারা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেও ঠিকমতো যোগাযোগ করতে না পারায় আজও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়নি হেলাল উদ্দিনের নাম। জীবন সায়াহ্নে এসে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে এখন শয্যাশায়ী এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। বুকে যন্ত্রণা নিয়েই গুনছেন মৃত্যুর প্রহর। তার পরিবারের সদস্যদের দাবী জীবনের প্রদীপ নেভার আগেই মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় এই মানুষটির নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার। হেলাল উদ্দিনের প্রতিবেশীরা জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেও অবহেলিত পরিবারের সদস্য হওয়ায় তার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তভুক্ত হয়নি। কি কারনে এবং কেন হেলাল উদ্দিনের তালিকায় নাম নেই? এমন প্রশ্ন তাদের। যাদের আত্মত্যাগে এই স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। সেই স্বাধীন রাষ্ট্রে অন্তত আগামী প্রজন্মের কাছে তাদের অবদান ধরে রাখার জন্য প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকুক-এমন প্রত্যাশা সকলের।