আম-লিচুতে ভরপুর দিনাজপুর এবং খাদ্য ভান্ডার বলা হয় এই জেলাকে। চলতি মৌসুমে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে এই জেলায়। লিচু সংগ্রহ করতে বাগানে ভিড় করছে ক্রেতারা। জেলায় ৫ হাজার ৭২৬ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে, জানিয়েছেন জেলা কৃষি অধিদপ্তর। জেলার বিভিন্ন উপজেলার লিচুর বাগান ঘুরে দেখা যায়, প্রায় বাগানে পাক ধরেছে লিচুর। বাগান মালিকরা বাজারজাত করতে গাছ থেকে বেছে বেছে পাকা লিচু পাড়ছেন।
এসব লিচু সংগ্রহ করতে স্থানীয় সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছেন ক্রেতারা। বাগান মালিকরা ক্রেতাদের অর্ডারি লিচু প্যাকেট করতে ব্যস্ত। এসব বাগানে চাইনাথ্রী, বেদেনা, বোম্বে ও মাদ্রাজি জাতের লিচু রয়েছে। তবে বেশিরভাগ বাগানে চাইনাথ্রী জাতের লিচু চোখে পড়ে। লিচুগুলো রসাল এবং সুস্বাদু ও সুমিষ্ট। ভাল মানের ও আকারে বড় লিচু বাগান থেকে ক্রেতারা পাইকারি কিনছেন ৪ থেকে ৫ টাকা পিচ। এক হাজার লিচুর দাম ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। হিলির বাজার উঠেছে দেশি-বিদেশি জাতের লিচু। ব্যবসায়ীরা দেশি জাতের ১০০ লিচু বিক্রি করছেন ২০০ থেকে ২২০ টাকা। প্রকারভেদে চাইনাথ্রী লিচু বিক্রি করছেন তারা ১০০ লিচু ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। তবে স্থানীয় সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা ভাল ও পরিমাণে বেশি লিচু নেওয়ার জন্য বাগানগুলোতে ভীড় করছেন।
হিলির জালালপুর গ্রামে আসলাম হোসেনের বাগান থেকে লিচু কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার বাসা খুলনায়, আমি এখানে চাকুরি করি। দেশের মধ্যে দিনাজপুর জেলার লিচু বিখ্যাত এবং রসাল, সুস্বাদু ও সুমিষ্ট। বাড়ি এবং আত্মীয়দের জন্য প্রায় ৩ হাজার লিচু কিনবো। এই বাগানে লিচু খেলাম, অনেক স্বাদ আছে। ৫ হাজার টাকা লিচুগুলো কিনলাম। ঢাকা থেকে আসা একজন ক্রেতা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রতি বছর লিচুর মৌসুমে হিলি থেকে লিচু কিনে নিয়ে যায়। এই জেলার লিচু বিখ্যাত এবং ভাল। পরিবারের অনেক চাহিদা আছে। এই জন্য বাজারে না গিয়ে সোজা বাগানে আসছি। দাম বেশি হলেও দেখেশুনে ভাল মানের লিচু কিনবো। বাগান মালিক আসলাম হোসেন বলেন, ৫ বিঘার উপর আমার এই লিচু বাগান। ৩২০টি চাইনাথ্রী, বোম্বে ও বেদেনা জাতের লিচু গাছ আছে। বাগানের বয়স ১০ বছর, তবে ফল পাচ্ছি ৫ বছর যাবৎ। গেলো বার ১ লাখ টাকার উপর লিচু বিক্রি করেছি। এবার আল্লাহ দিলে অনেক ভাল ফলন হয়েছে। আশা করছি দেড় লাখের উপর লিচু বিক্রি করবো। দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, চলতি মৌসুমে এবার জেলায় ৫ হাজার ৭২৬ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লিচুর তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। বাজারে লিচুর দাম অনেকটা স্বাভাবিক আছে। আশা করছি কমবেশি সবাই ক্রয় করতে পারবে।