কাঠফাটা রোদের তীব্র দাহনের মধ্যে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং আর দ্রব্য মূল্যের পাগলা ঘোড়ার চপোটাঘাতে মাধবদীর সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। জানা গেছে, সকালে রোদ উঠার সংগে সংগে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। সকাল সাড়ে ৮ টার পরে শরিরে রোদে জ্বালার অনুভূতি সৃষ্টি হয়। বেলা ১০ টার পরে তাপের তীব্রতায় মানুষ মাঠঘাট ছেড়ে বাড়ি বা গাছপালার নীচে আশ্রয় নেয়। কিন্তু তাপের তীব্র দহনের মধ্যে যখন বিদ্যুতের প্রয়োজন তখন ঘণ্টা বা আধা ঘণ্টা পরে দেড়/দু’ঘণ্টা লোডশেডিং চলতে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বেলা ১২ টার পরে বাতাসে আগুনের হল্কা বইতে থাকে। এতে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। মানুষ বাড়িতে ফিরে বিদ্যুত না পেয়ে গোসল করে ঠা-া হওয়ার চেষ্টা করে। সারা দিনের তাপে উত্তপ্ত আবাহওয়ায় রাতের শেষ প্রহরেও আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না। কিন্তু সারা রাতেও ২/৩ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুত না পাওয়ায় ছটফট করে র্নিঘুম রাত কাটে মানুষের। বিছানা বালিশ ঘামে ভিজে যায়। অসুস্থ, বৃদ্ধ ও শিশুদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে পড়ে। মানুষ ঘরের বাইরে এসে খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। বিদ্যুতের অভাবে দিনে ব্যবসা বাণিজ্য আংশিকভাবে অচল হলেও সন্ধার পরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। ছেলেমেয়ের লেখা পড়াসহ ঘর গৃহস্থলীর কাজ অকেজো হয়ে পড়ছে। ব্যবসা বাণিজ্যে ধস ও শ্রমজীবী মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। লোডশেডিংয়ের কারণে শিল্পাঞ্চল মাধবদীর পাওয়ারলোম ফ্যক্টরীতে উৎপাদনে ব্যহত হওয়ায় শ্রমিকদের মজুরী কমে যাচ্ছে। এতে অনেক পাওয়ারলোম ফ্যক্টরি বন্ধ হয়ে গেছে আর যেগুলো চালু আছে তাও চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে।
স্থানীয় উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় প্রচ- অর্থ কষ্টে পড়েছে নি¤œবিত্ত ও মধ্যেবিত্ত শ্রেণীর মানুষ। ফলে এই দুর্যোগপূর্ণ আবাহওয়ায় অগ্নিমূল্যের মাছ-মাংস সহ পুষ্টিকর খাবার থেকে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। মাধবদীর রিক্সা চালক দুলাল মিয়া, দিন মুজুর লিটন জানায়, প্রচ- তাপদাহের মধ্যে অর্থের অভাবে এবং মাছ, মাংস, ডিমসহ পুষ্টিকর খাবারের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধির কারণে তা খাওয়ার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে। এতে ক্রমান্বয়ে শরির দুর্বল হয়ে স্বাস্থ্যহানি ঘটছে। এসময় অনেকে সর্দি, জ্বর, ডাইরিয়া, মাথা ব্যাথাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। ফলে মাধবদীর বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে দিনদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাতে মাধবদীর সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে।